রাজশাহীতে শ্রেণিকক্ষে একযোগে ১৫ ছাত্রীকে পিটুনি, শিক্ষককে শোকজ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৪; সময়: ৬:৩৮ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে শ্রেণিকক্ষে একযোগে ১৫ ছাত্রীকে পিটুনি, শিক্ষককে শোকজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোদাগাড়ী : রাজশাহী গোদাগাড়ীতে কোন অপরাধ না জেনেই,তৃতীয় শ্রেণীর সব ছাত্রীকেই পিটুনি বেধড়ক পিটুনির পর এক শিক্ষার্থীর শরীরে আঘাতের দগদগে চিহ্ন।

দেয়ালে শিক্ষককে নিয়ে আপত্তিকর কথা লেখা। কিন্তু কে লিখেছে তা কেউ বলছে না। তাই শ্রেণিকক্ষের সব ছাত্রীকেই পিটিয়েছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার এক স্কুলের শিক্ষক। এ ঘটনায় ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক আজিজুল হক উপজেলার ভাটোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। অভিযোগ, তিনি স্কুলের অন্তত তৃতীয় শ্রেণীর ১৫ ছাত্রীকে পিটিয়েছেন। তবে তিনি কোন ছাত্রকে মারেননি। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অকপটেই স্বীকার করে নিয়েছেন এই শিক্ষক।

এদিকে সোমবার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আল-মামুন এই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। আগের দিন রোববার তিনি সরেজমিনে অভিযোগের তদন্তও করেন। এতে অভিযোগের সত্যতা মেলে। লিখিত বক্তব্য দিয়ে ওই শিক্ষক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছেও অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। তার আগের দিন শনিবার শিক্ষার্থীদের পেটানোর ঘটনা ঘটে।

বিদ্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের দেয়ালে স্কুলশিক্ষক আজিজুল হককে ব্যাঙ্গ করে কিছু কথা লেখা ছিল। ব্যাঙ্গাত্মক এসব কথা কে লিখেছে তা জানা যায়নি। তাই শ্রেণিকক্ষের সব ছাত্রীকে পিটিয়েছেন তিনি। তবে কোন ছাত্রকে মারধর করা হয়নি।

পরে শরীরে দগদগে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে ছাত্রীরা বাড়ি গেলে অভিভাবকেরা তা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এরমধ্যে এক ছাত্রীর বাবা লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াতের কাছে। ইউএনও শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিযোগ তদন্ত করতে দেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক আজিজুল হক বলেন, ‘আমি ক্লাস নিলে এই শিক্ষার্থীরা হইচই করে। কিন্তু কয়েকদিন আগে গিয়ে দেখলাম আরেক শিক্ষকের ক্লাসে তারা সুন্দরভাবেই বসে আছে।

আমি জানতে চাইলাম, আমার ক্লাসে কেন তারা হইচই করে। তখন এক ছাত্রী দাঁড়িয়ে বলে, স্যার, আপনি তো একটা গাঁধা স্যার।

অন্য একজন শিক্ষকের সামনে ছাত্রীর মুখে এ কথা শুনে আমার মন খারাপ হয়। পরদিন দেখি শ্রেণিকক্ষের দেয়ালে আমার সম্পর্কে আপত্তিকর কথা লেখা। আমার ধারণা এটা ছাত্রীরাই লিখেছে। তাই ১৫-১৬ জন ছাত্রীকে আমি মেরেছি। এরমধ্যে একজনের শরীরে দাগ বসে গেছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আল-মামুন বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমি গতকাল (সোমবার) স্কুলে গিয়েছিলাম। আমি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। শিক্ষক আজিজুল হকও লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। তিন দিনের মধ্যে তিনি জবাব দেবেন। তারপর এটি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠাব। তিনিই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে