বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার শিক্ষা তরুণরা পরিবার থেকেই পায়
নিজস্ব প্রতিবেদক : বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিকালে নগরীর সপুরাস্থ রাজশাহী মহিলা কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে জেলা তথ্য অফিস আয়োজিত ‘তারুণ্য নির্ভর উন্নত, সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন ও জবাবদিহিতামূলক বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ শীর্ষক এক আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক মোহা. ফরহাদ হোসেন এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার।
প্রধান অতিথি বলেন, জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে আমরা তরুণ্যের শক্তি দেখেছি। সেই শক্তি স্বৈরশাসকের পতন ঘটিয়ে বৈষম্যহীন দেশ ও জাতি গঠনের গুরু দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। সকল বাঁধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে তারা সমাজটাকে সুন্দর করার জন্য নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করেছে। বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার এ শিক্ষা তরুণরা পরিবার থেকেই পেয়েছে। তরুণরা যে শক্তি, স্পৃহা ও মনোবল নিয়ে এগিয়ে এসেছে তা আমাদের সকলকে ধারণ করতে হবে।
তারুণ্যনির্ভর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, বিদেশে দক্ষ কর্মী প্রেরণ আমাদের জন্য খুবই জরুরি। বিদেশ যাওয়ার আগে তরুণদের যথাযথ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। বিদেশগামী জনশক্তিকে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় একটি করে টিটিসি আছে যেখানে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। অসচেতনতা ও অজ্ঞতার কারণে প্রত্যন্ত অঞ্চলের তরুণ-তরুণীরা এসব প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পারেনা। তাদেরকেও প্রশিক্ষণের মূল ধারায় নিয়ে এসে দক্ষ করে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে প্রেরণ নিশ্চিত করতে হবে। তবেই প্রবাসে আমাদের কর্মীরা উচ্চ মজুরির চাকরি করে দেশে বেশি রেমিট্যান্স প্রেরণ করতে পারবে।
সভায় বক্তাগণ তাদের আলোচনায় তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণের উপর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। জাতি তরুণদের কাছে বৈষম্যহীন ও জবাবদিহিমূলক উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যাশা করে। এর জন্য তরুণদের আত্মমর্যাদাবান হতে এবং শাসন ক্ষমতাকে প্রশ্ন করার সাহস দেখাতে হবে। বক্তারা বলেন, সুদূর অতীত থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত বাঙালির সকল আন্দোলন ছিল বৈষম্য মুক্তির আন্দোলন যেখানে তরুণরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে।
তারুণ্য নির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের করণীয় উল্লেখ করে বক্তারা উপস্থিত তরুণদের বিশ্ব বাজারে চাহিদা অনুসারে নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তোলা, প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ, সত্য ও ন্যায়ের প্রতি সমর্থন, সহমর্মিতা ও পরমতসহিষ্ণু হওয়া এবং মাদক থেকে দূরে থাকার দিকনির্দেশনা দেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন রাজশাহী পিআইডির উপপ্রধান তথ্য অফিসার মো. তৌহিদুজ্জামান। সভায় অন্যান্যের মধ্যে রাজশাহী মহিলা কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, জেলা তথ্য অফিসের উপপরিচালক নাফেয়ালা নাসরীনসহ টিটিসি’র প্রশিক্ষণার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।