জামায়াত-শিবিরকে আ.লীগের চেয়েও ভয়ংকর বললেন বিএনপি নেতা
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : জামায়াত-শিবির আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়ংকর বলে মন্তব্য করেছেন লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। তিনি বলেছেন জামায়াত-শিবির খুবই ভয়ংকর একটি দল। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি থেকেও বেশি ভয়ংকর বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এই মন্তব্য মো. কামরুজ্জামান সোহেল নামের লক্ষ্মীপুর জেলার এক বিএনপি নেতার। অন্য দলের সঙ্গে নিজ দলেরও সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছেন তিনি।
স্থানীয় বিএনপির আয়োজিত এক জনসভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে।
মো. কামরুজ্জামান সোহেল সদর উপজেলা পশ্চিম বিএনপির যুগ্ম আহব্বায়ক এবং জেলা বিএনপির সদস্য। এছাড়া তিনি জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
২ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান বলতে শোনা যায়, ‘জামায়াত ওপরে এক রকম, ভেতরে আরেক রকম। জামায়াতের মহিলা কর্মীরা বাড়িতে বাড়িতে তালিম করে। সেখানে নামাজ ও সূরা শিখানোর নামে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলে। সংগঠনের বই বিতরণ করে। ইসলামের কাজে ব্যয়ের কথা বলে তারা সপ্তাহে ৫ টাকা, ১০ টাকা ও ১০০ টাকা করে চাঁদা তোলে। এই জামায়াত খুবই ভয়ংকর। যেখানে তারা শক্তিশালী সেখানে আরও ভয়ংকর। তারা বিএনপিকে নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্ত করছে। সুতরাং, বিএনপির কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। যাতে মা-বোনদের কাছে আমাদের সুনাম নষ্ট করতে না পারে।’
গত ২৪ নভেম্বর দালাল বাজার ফাতেমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের হল রুমে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত এক সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল শনিবার থেকে এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর জেলাজুড়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে।
এদিকে বিএনপির এই নেতার বক্তব্যটি উন্মাদনা বলে মনে করছেন জামায়াতে ইসলামী ও শিবিরের নেতা-কর্মীরা। তাঁর এই বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান তাঁরা। তবে অন্যদিকে বিএনপি নেতাদের দাবি, এটি বিএনপির কোনো বক্তব্য নয়। কামরুজ্জামান সোহেলের ব্যক্তিগত বক্তব্য বলে মন্তব্য করেন অনেক বিএনপি নেতা।
অপরদিকে গতকাল শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলনে জামায়াত ইসলামীকে ইসলামি সংগঠন নয় বলে দাবি করেছেন ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আহম্মদ উল্লাহ জনি। তিনি বলেন, ‘ইসলামের নামে জামায়াত ধোঁকাবাজি করছে। জামায়াত ইসলাম কোনো ইসলামি দল নয়। এরা ইসলামের কথা বলে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে। তারাও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো রাজনৈতিক দল। তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে এবং সাধারণ মানুষকেও সাবধান করতে হবে।’
বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপি কামরুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘কর্মীদের উজ্জীবিত ও সাহস যোগাতে কথাগুলো বলেছি। এটি আমার মনের কথা নয়। তাছাড়া বক্তব্য দিতে গেলে কিছুটা ভুল হয়। এছাড়া এটি বিএনপির গোরায়া মিটিং ছিল। কে-বা কারা আমার বক্তব্যের কিছু অংশ কেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।’
লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য নষ্ট করতে এই বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই। বক্তব্যের ব্যাপারে জেলা বিএনপিকে জানানো হবে। তবে আমরা মনে করছি, ঐক্য ও শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে ফ্যাসিবাদদের ইন্ধন বা প্ররোচনায় তিনি এই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন।’
জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নিজামুদ্দিন ভুইয়া বলেন, ‘এটি আমাদের দলের কোনো বক্তব্য নয়। এটি কামরুজ্জামান সোহেলের ব্যক্তিগত বক্তব্য।’