আহতদের চিকিৎসা-পুনর্বাসনে পৃথক সেন্টার গঠনের প্রস্তাব
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কার্যক্রম বেগবান করতে ‘সুপার স্পেশালাইজড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার ফর দি জুলাই ২৪ ওয়ারিয়র’ নামক আলাদা একটি রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন আন্দোলনে আহত রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা সেলের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ শাকুর।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ইন্টারন্যাশনাল ডে অব পার্সন উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিস উপলক্ষ্যে ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে তিনি এই প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
এসময় ডা. এম এ শাকুর বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মাধ্যমে একটি নতুন যুগের ও একটি নতুন বাংলাদেশের শুভ সূচনা করেছেন। এই আন্দোলন করতে গিয়ে যারা আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসা ও পুনবার্সন করা আমাদের পেশাগতসহ সামাজিক, মানবিক, নৈতিক ও পবিত্র দায়িত্ব। এসব আহতদেরকে চিকিৎসাসেবা দিতে পেরে একজন চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি।
তিনি বলেন, বিএসএমএমইউর বিভিন্ন বিভাগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ২৯৬ জন রোগীর চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জরুরি বিভাগে ৫৮ জন রোগী, কেবিনে ৫৩ জন রোগী, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের বহির্বিভাগে ১৫২ জন রোগী, অভ্যন্তরীণ বিভাগে ২৪ জন রোগী এবং আইসিউতে ১০ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে।
এসময় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কার্যক্রম বেগবান করতে ‘সুপার স্পেশালাইজড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার ফর দি জুলাই ২৪ ওয়ারিয়র’ গঠনের প্রস্তাব করেন।
দিবস প্রসঙ্গে এম এ শাকুর জানান, এই দিবসের মাধ্যমে শারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরা এবং এর আরও উন্নতির জন্য বিভিন্ন গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা হয়, যা রোগীদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি যোগ করেছে।
বৈজ্ঞানিক সেশনের সভাপতিত্ব করেন বিএসএমএমইউ’র ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা সেলের সভাপতি প্রফেসর ডা. এম এ শাকুর।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি অব ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশনের সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান খান, অধ্যাপক ড. তসলিম উদ্দিন, ডা. জিয়াউর রহমান চৌধুরী, ডা. বদরুন্নেসা আহমেদ, ডা. গোলাম নবী, ডা. সাব্বির জামান রকি, ডা. ফারজানা খান সোমা প্রমুখ।
সেমিনারে ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসাসেবায় পঙ্গুত্বের দুয়ার থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার গল্প শোনান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে আহত ইয়াসিন আরাফাত। তিনি আগস্টে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে কোমরে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন হুইল চেয়ারে করে। তখন তিনি কোনোদিন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবেন এমনটা কল্পনাও করতে পারেননি।
তবে বিএসএমএমইউর ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা সেলের সভাপতি প্রফেসর ডা. এম এ শাকুরের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাসেবা নিয়ে এখন হাঁটতে পারছেন।
এসময় তিনি তার বক্তব্যে বিএসএমএমইউর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এম এ শাকুরসহ সংশ্লিষ্ট সব চিকিৎসক, ফিজিওথেরাপিস্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।