বাগমারায় প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনার উদ্বোধন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২০; সময়: ৪:০৬ অপরাহ্ণ |
বাগমারায় প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনার উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারায় ২০২০-২১ অর্থবছরে রবি মৌসুমে বোরো ধান, গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, চিনাবাদাম, শীতকালীন মূগ, পেঁয়াজ ও পরবর্তী খরিপ-১ মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন মূগ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণের নিমিত্তে কৃষি মন্ত্রনালয়ের “কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা” প্রদান করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রনোদনা কর্মসূচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদের সভাপতিত্বে এবং কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার সাইফ আব্দুল্লাহর পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনার উদ্বোধন করেন, রাজশাহী-৪(বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক।

প্রধান অতিথি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার বিনামূল্যে সার ও বিভিন্ন ফসলের বীজ বিতরণ করে চলেছে। আ’লীগ সরকার কৃষি বান্ধব। কৃষকের পাশে সব সময় থাকে বর্তমান সরকার। প্রতি বছর উপজেলার হাজার হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে শষ্যের বীজ প্রদান করে চলেছে। কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করেছে আ’লীগ সরকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে দেশের কৃষকরা অপূরনীয় ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। কৃষকরা যেন তাদের সেই ক্ষতি পূরণ করতে পারে সে লক্ষ্যেই সরকার বিনামূল্যে সার ও বীজ প্রদান করে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাজিবুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ আক্তার বেবী, প্রভাষক জিল্লুর রহমান।

২০২০-২১ অর্থবছরে রবি মৌসুমে গম, সরিষা, সূর্যমুখী, চিনাবাদাম, মসুর, খেসারী, টমেটো ও মরিচ ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণের নিমিত্তে কৃষি মন্ত্রনালয়ের “কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা” প্রদান করা হয়েছে। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় ১১ হাজার ৩০০ জন কৃষকের জন্য পুনর্বাসন প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে গম-৩ হাজার জন, সরিষা-৩ হাজার ৫০০ জন, সূর্যমুখী-৫৫০ জন, চিনাবাদাম-৭৫০ জন, মসুর-৮০০ জন, খেসারী-৯০০ জন, টমেটো-৬০০ জন ও মরিচ-১ হাজার ২০০ জন।

এদিকে কৃষক পরিবার প্রতি বিঘার জন্য গম বীজ-২০ কেজি, সরিষা ফসলের জন্য বীজ-১ কেজি, ডিএপি-১০ কেজি, এমওপি-১০ কেজি, চিনাবাদাম ফসলের জন্য বীজ-১০ কেজি, সূর্যমুখী ফসলের জন্য বীজ (হাইব্রিড) ১ কেজি, মসুরের জন্য বীজ-৫ কেজি, ডিএপি-৫ কেজি, এমওপি-৫, খেসারির জন্য বীজ-৮ কেজি, ডিএপি-৫ কেজি, এমওপি-৫ কেজি, টমেটোর জন্য বীজ-০.০৫ কেজি, ডিএপি-১০ কেজি, এমওপি-১০ কেজি এবং মরিচ ফসলের জন্য বীজ-০.৩০০ কেজি, ডিএপি-১০ কেজি, এমওপি-৫ কেজি উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হবে।

অপরদিকে চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় ৪৮৫০ জন কৃষকের জন্য পুনর্বাসন প্রদান করা হয়েছে। এতে বোরো ধান-৬০০ জন, গম-২৩০ জন, সরিষা-১৪৭০ জন, ভুট্টা-২১৫০ জন, পেঁয়াজ-৩৫০ জন ও গ্রীষ্মকালীন মুগ-৫০ জন। সংযুক্ত নীতিমালা মোতাবেক এ কর্মসূচীর আওতায় অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত একটি কৃষক পরিবার প্রতি বিঘার জন্য ১ (এক) কেজি করে বোরো ধান হাইব্রিড বীজ, ২০ (বিশ) কেজি করে গম বীজ অথবা ০২ (দুই) কেজি করে ভূট্টা বীজ অথবা ০১ (এক) কেজি করে সরিষা বীজ, ০৫ (পাঁচ) কেজি করে শীতকালীন/গ্রীষ্মকালীন মুগ বীজ অথবা ১০ শতক জমির জন্য ০.২৫০ কেজি পেঁয়াজ বীজ পাবেন।

এ কর্মসূচীর আওতায় সহায়তা হিসেবে বোরো ধান, গম ও সরিষা ফসলের জন্য অনুমোদিত তালিকাভুক্ত চাষীরা প্রতিজনে বিঘা প্রতি ১০ (দশ) কেজি ডিএপি, ও ১০ (দশ) কেজি এমওপি সার এবং গ্রীষ্মকালীন মূগ ও শীতকালীন মূগ ফসলের জন্য অনুমোদিত তালিকাভুক্ত চাষীরা প্রতিজনে বিঘা প্রতি ১০ (দশ) কেজি ডিএপি ও ০৫ (পাঁচ) কেজি এমওপি সার পাবেন। অনূরুপভাবে ভূট্টা ফসলের জন্য চাষীরা প্রতিজনে বিঘা প্রতি ২০ (বিশ) কেজি ডিএপি ও ১০ (দশ) কেজি এমওপি সার এবং পেঁয়াজ ফসলের জন্য অনুমোদিত তালিকাভুক্ত চাষীরা প্রতিজনে বিঘা প্রতি ০৫ (পাঁচ) কেজি ডিএপি ও ০৫ (পাঁচ) কেজি এমওপি সার সহায়তা পাবেন।

  • 119
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে