৯৯৯ ফোন দিয়েও রক্ষা হয়নি জমির আধাপাকা ধান

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২১; সময়: ৩:৪৯ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
৯৯৯ ফোন দিয়েও রক্ষা হয়নি জমির আধাপাকা ধান

নিজস্ব প্রতিবেদক, মান্দা : নওগাঁর মান্দায় রাতের অন্ধকারে বিবাদমান ২ বিঘা জমির আধাপাকা বোরো ধান কেটে নিয়েছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়েও স্বপ্নের ফসল রক্ষা করতে পারেনি ভুক্তভোগী পরিবার। কারণ ৬ কিলোমিটার পথ যেতে পুলিশ সময় নিয়েছেন সাড়ে ৫ ঘন্টা। দীর্ঘ এ সময় কাজে লাগিয়ে ধান কাটা-মাড়াই সাবাড় করে দেন প্রতিপক্ষরা। সোমবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের সোনাপুর হাজারীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, প্রতিপক্ষরা ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে রাতের অন্ধকারে জমির আধাপাকা ধান কাটতে শুরু করলে মান্দা থানা পুলিশসহ ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে বিষয়টি অবহিত করা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মান্দা থানার উপপরিদর্শক আতিউর রহমান সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেই আবার ফিরে যান। কাটা ধান জব্দ কিংবা প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ ৮০ বছরেরও অধিক সময় ধরে সোনাপুর হাজারীপাড়া গ্রামের দিনু হাজারী ও তার পরিবার চকমনোহরপুর মৌজার ২ বিঘা সম্পত্তি ভোগদখল করে আসছেন। ৬২ সালের রেকর্ডে দিনু হাজারীর নামেই সমুদয় সম্পত্তি রেকর্ডভূক্ত হয়। কিন্ত ৭২ সালে ভূলবশত: দিনু হাজারীর নাম বাদ পড়ে ও তার ভাইদের নামে তা রেকর্ডভূক্ত হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে দিনু হাজারী ওয়ারিশগণ আদালতে রেকর্ড সংশোধনীর মামলা করেন। মামলাটি আদালতে চলমান রয়েছে। এ অবস্থায় ২০২০ সাল থেকে ৭২ সালের রেকর্ডমূলে ওই সম্পত্তি দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছে প্রতিপক্ষ আব্দুল মালেক গংরা।

ভুক্তভোগী মহসীন আলী হাজারী জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে আব্দুল মালেক গংদের সঙ্গে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের ৭জন আহত হন। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আমি মান্দা থানায় মামলা দায়ের করি। প্রতিপক্ষরাও মামলা করেছেন। কিন্তু আমার মামলার আসামিরা সোমবার রাতে ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে জমির আধাপাকা ধান কেটে নিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

মহসীন আলী হাজারীর অভিযোগ, মারপিটের দুটি মামলাই তদন্ত করছেন উপপরিদর্শক আতিউর রহমান। রাতে প্রতিপক্ষরা ধান কাটাতে লাগলে এসআই আতিউর রহমানকে মোবাইলফোনে দফায় দফায় বিষয়টি অবহিত করা হয়। ধান রক্ষা করতে একই সঙ্গে ৯৯৯ এ ফোন দেওয়া হয়েছিল। থানা থেকে ঘটনাস্থলের দুরত্ব ছিল মাত্র ৮ কিলোমিটার। এ পথ পাড়ি দিতে পুলিশ সময় নিয়েছে সাড়ে ৫ ঘন্টা। এসআই আতিউর রহমানের ইন্ধনে আসামিরা তার জমির আধাপাকা ধান কেটে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ধানকাটা প্রসঙ্গে মান্দা থানার উপপরিদর্শক আতিউর রহমান কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আমি দু’পক্ষের মধ্যে মারপিটের ঘটনার দায়েরকৃত মামলার তদন্ত করছি। এর বেশি আমার কিছু জানা নেই। মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর রহমান জানান, বিষয়টি দেখা হচ্ছে।

  • 33
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে