রাজশাহীতেও ছড়াচ্ছে করোনার ভারতীয় ধরন

প্রকাশিত: মে ৩১, ২০২১; সময়: ৪:১৫ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতেও ছড়াচ্ছে করোনার ভারতীয় ধরন

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন শনাক্ত হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাতজনের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এদের মধ্যে দুইজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তারা কোথায় কিভাবে আছেন তাদেরও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়াও রাজশাহীর অনেকের শরীরে এখন করোনার ভারতীয় ধরনের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী।

রাজশাহীতেও স্থানীয়ভাবে করোনার ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে ডা. শামীম ইয়াজদানী বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রাজশাহীর অনেকের শরীরে ভারতীয় ধরণের উপসর্গ রয়েছে। পরীক্ষা করলে তাদের অনেকের নমুনায় ভারতীয় ধরন পাওয়া যাবে। করোনার ভারতীয় ধরনটি দ্রুত ছাড়ায়। এ থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে রাজশাহীতেও করোনার ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়েছে।

তিনি জানান, ভারতীয় ধরনের আক্রান্ত সন্দেহে আমরা ৪২ জনের নমুনা ঢাকায় পাঠিয়ে ছিলাম। তারা সবাই চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা। তাদের মধ্য থেকে সাতজনের শরীরে ভারতীয় ধরন পাওয়া গেছে। তবে এই সাতজনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের কেউ মারা গেছেন কিনা বা কোথায় কিভাবে আছেন সেটি খোঁজ খবর করা হচ্ছে।

শামীম ইয়াজদানী জানান, ৪২ জনের মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছয়জন ভর্তি ছিলেন। তাদের মধ্যে দুইজনের ভারতীয় ধরণ শনাক্ত হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছে না। বাকি ৩৬ জনের নমুনা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে পাঠানো হয়েছিল আমাদের ল্যাবে পরীক্ষার জন্য। পরে সেগুলো ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাঁচজনের ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে। তারাও কে কোথায় আছে সেটিও জানা যাচ্ছে না।

তিনি জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বোরবার দুপুর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড ও আইসিইউতে তারা মারা যান।

হাসপাতালের পরিচালক জানান, মৃতদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনজন ও নওগাঁর একজন রয়েছেন। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে এ হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৫৫ জন। সোমবার দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট ও আইসিইউতে ২০৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে ১৬ জন।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ভর্ভি হয়েছেন ৩৭ জন। আর সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩২। নতুন ভর্তি ৩৭ জনের মধ্যে ১৯ জন রাজশাহী ও সাতজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের। বাকিরা নওগাঁ ও নাটোর জেলার।

শামীম ইয়াজদানী বলেন, পকেট সড়ক ব্যবহার করে প্রতিদিন রাজশাহী হয়ে প্রচুর পরিমান চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন বাস ও ট্রেনে। এর ফলে রাজশাহীতে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। এতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে রাজশাহীর পরিস্থিতি। করোনা সংক্রমণ রোধে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সঙ্গে রাজশাহীতেও লকডাউনের বিকল্প নেই বলেন তিনি।

এদিকে, সোসবার দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার জানান, গত ২৪ ঘন্টায় রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় ৩০০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহীর ১২৭ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৯৩ জন, নওগাঁর ১৯ জন, নাটোরের ১১ জন, জয়পুরহাটের ২২ জন, বগুড়ার ১০ জন, সিরাজগঞ্জের ছয়জন ও পাবনার ১২ জন।

এছাড়াও শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় বিভাগের তিন জেলায় করোনা আক্রান্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচজন, রাজশাহীর দুইজন ও জয়পুরহাটের একজন।

অপরদিকে, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে রাজশাহীতে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসনের চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালত। সোমবার বিভিন্ন মোড়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে অনেকের জরিমানা করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাওসার হাবিব বলেন, নগরীতে চারটি ভ্রাম্যমাণ টিম কাজ করছে। সরকারি নির্দেশনাসহ যারা স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করছেন তাদের জরিমানা করা হচ্ছে।

  • 1.2K
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে