পত্নীতলায় শীত উপেক্ষা করে বোরো চাষে ব্যস্ত কৃষকরা
মাসুদ রানা, পত্নীতলা : মাঘের শীতে বাঘ কাঁদে, বাঘ না থাকলেও এলাকার মানুষ কে কাবু করে দিয়েছে শীত। হাড়কাপানো শীতের সকালে কুয়াশার চাদর আর কনকনে হিমশীতল হাওয়া চারিদিকে বীজতলায় চারা উঠানোয় ব্যস্ত কৃষক।
বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন ধান চাষের সূতিকাগার নওগাঁর শস্য ভান্ডার পত্নীতলা উপজেলার কৃষকরা। সাথে কৃষানীদেরও বেড়েছে ব্যস্ততা।
কয়েক দিনের শৈত্য প্রবাহ আর ঘন কুয়াশার সাথে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় বোরো আবাদ রোপনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। আর শীতের ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে জমি প্রস্তুতে পানি সেচ আর হাল চাষ এবং বীজতলা থেকে চাড়া তুলে জমিতে রোপণ চলছে। দিন ভর ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা।
এ এলাকায় আমণের ফলন কম হওয়ায় অনেক ক্ষতি সাধন হয়েছে উপজেলার কৃষককূলের সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই বোরো চাষে কোমর বেধে নেমেছে পত্নীতলার কৃষককূল। শ্রমিকেরা ধান রোপণের জন্য বিঘা প্রতি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত চুক্তিতে নিচ্ছেন। তারা জানান প্রচন্ড ঠান্ডার কারনে সকাল থেকে কাজ করা যাচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় চলতি মৌসুমে ১৯ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।
এবার উপজেলায় রোপন হচ্ছে উন্নত ফলনশীল ব্রিধান ৫৮, ব্রিধান ৬৩, ব্রিধান ৮১, ৮৪, ৮৬, ৮৯। এছাড়াও জিরাশাইল, গোল্ডেন আতপ, কাঠারি, হাইব্রিড জাতের ধান রোপন হচ্ছে ।
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, উঠান বৈঠক ও মাঠপর্যায়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ৩৫ – ৪০ দিনের চারা রোপন করা, প্রচুর পরিমান জৈব সার ব্যবহার করা, ধান লাইনে (১৫-২০সেমি:দুরত্বে) রোপন করা, প্রতি বিঘা জমিতে ৫টি করে খুটি পুতিয়ে পাখি বসানোর ব্যবস্থা করা(পার্চিং পদ্ধতি), প্রতি লাইন পরপর একটি লাইন গ্যাপ দিয়ে চারা রোপন করা, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করা সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়।
সরজমিনে উপজেলার পদ্মপুকুর মাঠে কৃষক হাবিবুর রহামান সহ একাধিক কৃষক জানান, গত বছরের তুলনায় এবার হাল চাষ, সার, রোপন, শ্রমিক সব ক্ষেত্রেই খরচ বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মর্কতা কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার জানান, কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকের পাশে আছে। শীত বেশি পরলে কয়েকদিন পরে চারা রোপণ করতে হবে। চারা রোপণের পর শীত পরলে জমিতে পানি ধরে রাখতে হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভাল ফলন হবে।