বদলগাছীতে বরই চাষে ভাগ্য উন্নয়নে নতুন চমক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১, ২০২২; সময়: ১২:৪৩ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
বদলগাছীতে বরই চাষে ভাগ্য উন্নয়নে নতুন চমক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বদলগাছী : নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় আম চাষের পাশাপাশী স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফা আয়ে সুমিষ্ট মৌসুমী ফল উন্নত জাতের বরই কৃষকের ভাগ্যে উন্নয়নে নতুন চমক সৃষ্টি করেছে।

ইতোমধ্যে বাগান থেকে ফল সংগ্রহ ও বাজারজাত করণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে বাজারদর ভালো থাকার ফলে সন্তোষ প্রকাশ করছেন এলাকার বরই চাষীরা।

স্বল্প সময়ে অধিক ফলন ও লাভবান হবার ফলে বরই চাষে এলাকার চাষীদের অধিক আগ্রহ দেখা গেছে।

উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ অফিস সূত্রে জানাযায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ব্যনিজিক ভাবে মোট ১৫ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের বরই। যার মধ্যে ১০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে কাশ্মীরি ও ৫ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে বল সুন্দরী জাতের বরই।

চলতি বছরে প্রতি হেক্টরে আড়াই থেকে ৩মেট্রিক টন বরই উৎপাদন হতে পারে বলে ধারণা করছে।এছাড়াও এ অঞ্চলে কাশ্মিরী, বাউকূল, আপেল কূল, বলসুন্দরী জাতের বরই ও চাষ হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কাদিবাড়ী গ্রামের আকতার হোসেনের বাগানের প্রতিটি গাছে বরই ধরেছে। ফলের ভারে গাছসহ ডালগুলো মাটির দিকে ঝুলে পড়েছে। বাঁশের খুঁটি দিয়ে আগলে রাখা হয়েছে প্রতিটি বড়ই গাছ। পাখি ও চোরের হাত থেকে বরই রক্ষা করার জন্য পুরো বাগান চারপাশে জাল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।

বাগান পাহারা দেওয়ার জন্য বাগানের এক পাশে উঁচু করে মাচা তৈরি করে রেখেছেন। রাতে বাগান মালিক আখতার হোসেন টোলে বসে বাগানটি পাহারা দেন। এই ধরনের বরই চাষ করে আখতার হোসেন এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন।

আখতার হোসেন বলেন, আমি শখ করে ১০ কাঠা জমিতে ৯ মাস আগে বল সুন্দরী নামক বরই এর বাগান তৈরি করি। বর্তমানে আমি গাছ থেকে বরই তুলতে শুরু করেছি। প্রতি মণ বরই ২৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রয় করছি। আমি আশা করছি এবার এই জমি থেকে আমি ৩০ থেকে ৩৫ মণ বরই পাবো।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বরই চাষী তুষার জানান, আমি বদলগাছীর হার্টিকালচার থেকে বরই চারা দেখে এসে নিজেই বরইয়ের বাগান করার প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়ে ৬ একর জমিতে বরইয়ের বাগান করেছি। অন্যান্য ফসলের তুলনায় বরই অধিক লাভজনক চাষ বলেও জানান তিনি। প্রতি মণ বল সুন্দরী বড়ই ২৬০০টাকা দরে বিক্রি করছি। ফল বিক্রেতারা বাগানে এসে বড়ই নিয়ে যাচ্ছে।

বাগান পরিচর্যাকারীরা বলছেন , বরই বাগানে তেমন কোন পরিচর্যা করতে হয়না। প্রথমে গাছ লাগানো এবং জমি তৈরীর পর কীটনাশক ও যৎসামান্য পরিচর্যা ছাড়া কঠিন কোন পরিচর্যা করতে হয়না ।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হাসান আলী জানান, সবচেয়ে সুস্বাদু ও চাহিদা বেশি হবার ফলে এ উপজেলায় বলসুন্দরী জাতের বরই বেশী চাষ হচ্ছে। ফল চাষে মুনাফা অধিক ও মাটির গুণগত মান ভালো থাকায় এ উপজেলার কৃষি খাতে নতুন সম্ভাবনার আরেক নাম বরই চাষ সংযুক্ত হয়েছে।

ইতোমধ্যে বদলগাছী উপজেলাটি নাগ ফজলি আম উৎপাদন করে সারা দেশে পরিচিতি লাভ করেছে। আম বাগানে সাথী ফল বাগান হিসেবে বরই চাষ সহ নতুন করে বরই বাগান তৈরীতে স্থানীয় কৃষকেরা ঝুঁকে পড়েছেন।

তিনি আরো জানান, আম চাষ ব্যাপক লাভ জনক হলেও আম বাগান করার পর প্রায় দু বছর পর আম পাওয়া সম্ভব কিন্তু বরই স্বল্প সময়ে পাওয়া সম্ভব এবং এটি একটি লাভ জনক চাষ পদ্ধতি বটে। তাই অধিক লাভের আশায় কৃষকেরা বরই চাষে ব্যাপক ভাবে ঝুঁকে পড়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে