কচুয়ায় আলুর বাম্পার ফলন

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২২; সময়: ৩:২৪ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
কচুয়ায় আলুর বাম্পার ফলন

মাসুদ রানা, কচুয়া : চাঁদপুরের কচুয়ায় নভেম্বর ও ডিসেম্বরে আলু রোপনের সময় ভারী বর্ষণ হওয়ায় আলু চাষে কৃষকরা নিরুৎ সাহিত হলেও যাারা আশায় বুক বেঁধে ঝুঁিক নিয়ে আলু চাষ করেছে তারা লাভবান হচ্ছে। আলু রোপনের পর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় উৎপাদন হয়েছে অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি।

গত বছর আলু মৌসুমের প্রথম দিকে বৃষ্টিপাত হওয়ায় এতে করে কৃষকরা অনেকটাই ক্ষতি হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে। ক্ষতি পুষিতে উঠতে পূণরায় আলু চাষে এবছর বাম্পার ফলন হওয়ায় দাম নিয়ে কৃষকরা আশাবাদী। কচুয়ায় চলতি বছর আলু চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ৯শ ১০ হেক্টর।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর কচুয়ায় ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। তন্মধ্যে ডায়মন্ড ১ হাজার ৫৮০, মুলটা ২১০, এসটেরিক্সটি ৭০ ও ভারী ৫০ হেক্টরে চাষাবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে মাঠ পর্যায়ে আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। আগামী এক সাপ্তাহের মধ্যে সমগ্র উপজেলায় আলু উত্তোলনের হিড়িক পড়বে বলে কৃষকরা জানায়।

এ ব্যাপারে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদেরকে স্থানীয় ভাবে আলু সংরক্ষন সহ হিমাগারে মজুদের পারামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। আগামী পক্ষকাল যাবৎ ভারী বৃষ্টিপাত না হলে কৃষকের প্রত্যাশিত আলু ঘরে উঠবে ও তারা লাভের মুখ দেখবে।

উপজেলার পালাখাল গ্রামের আলু চাষী রফিক ও নজরুল হোসেন জানান, গত তিন বছর ধরে আলু মৌসুমে বৃষ্টি হওয়ায় অনেক আলু নষ্ট হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে চলতি মৌসুমে দাম পাবার আশায় আলু চাষাবাদ করেছি। এবছর আলুর বাম্পার ফলণ হওয়ায় ভালো দাম পাবো আশাবাদী। গত কয়েকদিন ধরে আলু তোলা শুরু হলেও কোন কোন জমির আলু পুষ্ট হতে আরো ৭-৮দিন সময় লেগে যাবে। তাই এবছর বৃষ্টিপাত দেখা দেয়ার আগেই আলুর ফলন ঘরে তোলার চেষ্টা করছি।

দোয়াটি গ্রামের আলু চাষী শহীদ ও আব্দুর রশিদ বলেন, গত বছর এক একর বিশ শতাংশ জমিতে আলু চাষ করি। ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর ৫ একর জমিতে আলুর চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন পাবো।

উপজেলার বুধুন্ডা গ্রামের আলু চাষী শহিদুল ইসলাম জানান, আমি ৪ একর জমিতে আলু চাষ করেছি, ফলন পেয়েছি প্রায় সাড়ে ১২শ মণ। এ আলু ইতিমধ্যে হিমাগারে সংরক্ষণ করেছি। প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৯ থেকে ১০ টাকা। বর্তমানে ১২থেকে ১৩ টাকা পাইকারি মূল্যে আলু বিক্রি হচ্ছে।

এ হিসেবে আমি প্রতি কেজি আলুতে অন্তত দেড় থেকে দুই টাকা লাভের মুখ দেখছি। দুই/আড়াই মাস পর সংরক্ষিত আলুর দাম আরো বেড়ে গেলে লাভের অংক ও বেড়ে যাবে।

উপজেলার দোয়াটি গ্রামের রুহি দাস জানান, আমি ১৩০ শতক জমিতে আলু চাষ করেছি। আমার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। প্রতি গন্ডায় (৬ শতকে) অন্তত ২০ মণ করে ফলন পাব বলে আশা করছি। কেজি প্রতি পাইকারি ১৩ টাকা মূল্যে বিক্রি করলেও প্রায় ৭০/৭২ হাজার টাকা লাভের মুখ দেখব।

এব্যাপারে কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোফায়েল হোসেন বলেন, এবছর ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আবহাওয়া বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ভালো থাকায় ফলন ও বিগত বছরের তুলনায় বেশি হয়েছে। আগামী পক্ষকাল যাবৎ ভারী বৃষ্টিপাত না হলে আলু চাষীরা লাভবান হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তাছাড়া বৃষ্টিবাদল শুরুর পূর্বে আলী চাষিদের ঘরে আলু তুলতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে