পত্নীতলায় বোরো’র বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২২; সময়: ১২:০৯ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
পত্নীতলায় বোরো’র বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, পত্নীতলা : নওগাঁর উত্তরে ভারতের সীমান্ত ঘেষা বরেন্দ্র জনপদের উপজেলা পত্নীতলায় মাঠে মাঠে বেড়েছে বোরোর চাষাবাদ, আবহাওয়ার অনূকূল সেচ ,সার ,কীটনাশক সবকিছু সঠিক ভাবে পাওয়াই আবাদও হয়েছে ভাল। দুচোখ যতদুর যায় সবুজ আর সবুজ। পত্নীতলার মাঠগুলো যেন সেজেছে প্রকৃতির সবুজ কন্যায় । কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় বোরো ধানের গাছ গুলো সতেজ হয়েউঠছে, ধান ক্ষতের আগাছা পরিষ্কার, সেচ, সার কীট নাশক স্প্রে বিভিন্ন কাজে দিনভর ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক শ্রমিকরা। দিন যতই পার হচ্ছে কৃষকদের মনে আশার সঞ্চার হচ্ছে ।

এ এলাকায় আমণের ফলন কম হওয়াই কৃষকদের অনেক ক্ষতি সাধন হয়েছে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই বোরো চাষে কমড় বেধে নেমেছে পত্নীতলার কৃষক কূল।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় চলতি মৌসুমে ১৯ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল চাষ হয়েছে তার চেয়ে বেশী । উৎপাদন ধরা হয়েছে ৭৭ হাজার ২ শ মেঃ টন।

এবার উপজেলায় রোপন হয়েছে উন্নত ফলনশীল ব্রিধান ৫৮, ব্রিধান ৬৩ ব্রিধান ৮১,৮৪,৮৬,৮৯ জিরাশাইল, গোল্ডেন আতপ, কাঠারি, হাইব্রিড জাতের ধান রোপন হচ্ছে ।

কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন প্রশিক্ষন, উঠান বৈঠক ও মাঠপর্যায়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৩৫ – ৪০ দিনের চারা রোপন করা, প্রচুরপরিমান জৈব সার ব্যবহার করা,ধান লাইনে (১৫-২০সেমি:দুরত্বে) রোপন করা, প্রতি বিঘা জমিতে ৫টি করে খুটি পুতিয়ে পাখি বসানোর ব্যবস্থা করা(পার্চিং পদ্ধতি),প্রতি লাইন পরপর একটি লাইন গ্যাপ দিয়ে চারা রোপন করা।সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করা।

সরজমিনে উপজেলার মাঠে মাঠে দেখা যায় বোরো আবাদ ভাল হয়েছে, মাঠগুলো সবুজে ভরে গেছে ধান গাছগুলো ফাগুন হাওয়ায় বাতাসে দোল খাচ্ছে, আবার কোন কোন জমিতে ধান গাছের বুক চিরে শীষ বের হচ্ছে। তবে একাধিক কৃষক জানান গত বছরের তুলনায় এবার হাল চাষ,সার,রোপন,শ্রমিক সব ক্ষেত্রেই খরচ বেড়েছে। ভাল ফলনের সাথে ভাল দাম না থাকলে তাদের লস হবে।

পত্নীতলা বালুঘা এলাকার কৃষক পরিতোষ বর্মণ জানান সে আট বিঘা জমিতে জিরা জাতের ধান আবাদ করেছেন ধানের গাছ ভাল হয়েছে সেচ ও সারের কোন সমস্যা নেই আশা করছেন বিঘা ২৮/৩০ মণ ফলন হতে পারে। নজিপুর পৌর এলাকার কৃষক রতন কুমার হালদার জানান ২ বিঘা আবাদ করেছেন, ধান ভাল হয়েছে ধারনা করছেন ২৫ মণ হারে পারে নজিপুর পুঁইয়া এলাকার কৃষক আলোক, সুজিত হাফিজুর রহমান সহ অনেকেই জানান বোরো আবাদ ভাল হয়েছে এবার তেমন রোগ বালাই নেই ফলনও ভাল হবে আশা করছেন।

উল্লেখ্য একটা সময় এ এলাকার মানুষের জমি থেকেও ভাত হয়নি, বর্ষা মওসুমে কেবল একটা ফসল হতো খড়া মওসুমে মাঠ গুলো ধু ধু করতো, পানির অভাবে বোরো চাষ হতো না, কিছু এলাকায় খাবার পনিরও ছিল ব্যপক কষ্ট কৃষিতে সরকারের সুদৃষ্টতে ঠ্যাঁ ঠ্যাঁ বরেন্দ্র জনপদ এখন কৃষি সমৃদ্ধি। কৃষি মন্ত্রনালয়ের অধীনে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ( বিএম ডিএ) এর গভীর নলকূপ গুলো অত্র জনপদের কৃষিতে আশির্বাদ হয়ে এসেছে। এখন একই জমিতে তিন/ চার ফসল বা এক জমিতে একসাথে দু ফসল করতে পারছে। অনেক এগিয়েছে এখানকার কৃষি ব্যবস্থা।

উপজেলা কৃষি কর্র্মকতা কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার জানান কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকের পাশে আছে । উপজেলায় এবার বোরো আবাদ ভাল হয়েছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভাল ফলন হবে। কৃষক লাভবান হবেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে