নতুন টাকার ব্যবসা রমরমা

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২২; সময়: ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ |
নতুন টাকার ব্যবসা রমরমা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ঈদ মানেই নতুন টাকা। সালামি হিসেবে নতুন টাকা পেলে শিশুদের আনন্দ আর ধরে না। শুধু ছোটরা নয়, নতুন কড়কড়ে নোট বড়দেরও আনন্দ দেয়। এ জন্য ঈদ এলেই কদর বাড়ে টাকার নতুন নোটের। অনেকে ফিতরা ও জাকাত হিসেবে চকচকে নতুন নোট দেন।

নতুন টাকার চাহিদা বাড়ায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী নতুন টাকা বিকিকিনির দোকান। নতুন নোটের পসরা সাজিয়ে বিক্রেতারা বসে আছেন। ক্রেতাদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো।

ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে যারা সময় নষ্ট করতে চান না, অথবা অফিস সময়ের পরে ঝামেলামুক্তভাবে নতুন টাকা নিতে চান, মূলত তারাই এসব অস্থায়ী দোকানের ক্রেতা। সে ক্ষেত্রে বান্ডিল (১০০টি নোট) প্রতি নোটভেদে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে।

রাজধানীর বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে, গুলিস্তান ও মার্কেটের পাশে দেখা মেলে নতুন টাকার কারবারিদের।
অস্থায়ী বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদে ১০ ও ২০ টাকার নতুন নোটের চাহিদা বেশি।
৫০ আর ১০০ টাকার বান্ডেলের চাহিদা নেই বললেই চলে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে ও গুলিস্তানে টাকা বিক্রি করছে এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জনা গেছে, ১০ টাকার নোটের চাহিদা বেশি। ১০ টাকার একটি বান্ডিলের মূল্যমান এক হাজার টাকা হলেও এসব টাকার দোকান থেকে নিতে হলে কোথাও এক হাজার ১৫০ টাকা, আবার কোথাও এক হাজার ১২০ টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

২০ টাকার বান্ডিল কিনতে হলে মূল্যমান দুই হাজার টাকার সঙ্গে বাড়তি দিতে হচ্ছে আরও ১০০ টাকা।
৫০ টাকার নোটে পাঁচ হাজারে বাড়তি ১০০ টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

১০০ টাকার এক বান্ডিলের নোটে ১০ হাজার টাকায় বাড়তি ১০০ টাকা এবং ২০০ টাকার নোটে হাজারে ২০ টাকা বেশি রেখে বিক্রি হচ্ছে।

তবে বান্ডিল ছাড়া ভেঙে ভেঙে বিক্রির ক্ষেত্রে দাম আরও চড়া।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সামনে টাকা কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি বছর রোজার ঈদে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার আগে এখান থেকে নতুন টাকা কিনে নিয়ে যাই। করোনার কারণে গত দুই বছর বাড়ি যাওয়া হয়নি। গ্রামে অনেক আত্মীয়স্বজন আছে, তাদের ঈদের দিন নতুন টাকা সেলামি দিতে হয়। নতুন টাকা দিলে সবাই খুশি হয়।’

তিনি বলেন, ‘এবার দাম বেশি। নতুন পাঁচ হাজার টাকা নিব। বান্ডিল না নিয়ে বিভিন্ন নতুন নোট কিনতে চাইছি। কিন্তু এ জন্য ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেশি চাইছেন বিক্রেতারা।’

নতুন টাকার আরেক ক্রেতা আমেনা খাতুন বলেন, ‘ ব্যাংকে গিয়ে অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়াতে হয়। এ জন্য এখান থেকে টাকা নিতে এসেছি। ছোট-বড় সবাইকে সেলামি বা অন্য কাজে টাকা দেয়ার জন্য নতুন টাকা নিলাম ।’
ব্যাংকে নতুন টাকা ঝামেলা বলে বাইরে থেকে নতুন টাকা কিনতে এসেছেন আমিনুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এক হাজার টাকার নতুন নোটে ১২০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। আগে এত দাম ছিল না। বাজারে সবকিছুর দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন টাকায়ও বাড়তি দিতে হচ্ছে। ’

টাকা বিক্রেতা আফসার আলী বলেন, ‘করোনার আগে নতুন টাকার যত বিক্রি হতো এ বছর এখনো তেমন বেচাকেনা নেই। করোনার কারণে অনেকের হাতে টাকা নেই। আর নতুন টাকার দামও বাড়তি। ক্রেতা এলেও দাম শুনে ফিরে যাচ্ছেন।’

আরিফ হোসেন নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, প্রথম নতুন নোট নিয়ে এলে মানুষের তেমন আগ্রহ ছিল না। তেমন বিক্রিও হয়নি। কিন্তু ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। এখন ১০ টাকা ও ২০ টাকার চাহিদা বেশি। সবাই এ দুই ধরনের নোট কিনছেন। পাশাপাশি নতুন ৫০ টাকাও কেউ কেউ নিচ্ছেন।

একাধিক দোকানির কাছে নতুন নোট কিভাবে সংগ্রহ করেন জানতে চাইলে তারা জানান, ব্যাংকে তাদের ঢুকতে দেয় না। এ জন্য সরাসরি ব্যাংক থেকে নতুন টাকা তারা নিতে পারেন না। আগে থেকেই যোগাযোগ থাকে ব্যাংকে। কিন্তু অনেক হাত ঘুরে টাকা তাদের হতে আসে। এ জন্য দাম বেশি পড়ে যায়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে