মহাদেবপুরে ধান কাটা-মাড়াই ফলন বিপর্যয়ে লোকসানের মুখে কৃষক

প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২২; সময়: ৭:৪৭ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
মহাদেবপুরে ধান কাটা-মাড়াই ফলন বিপর্যয়ে লোকসানের মুখে কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, মহাদেবপুর : নওগাঁর মহাদেবপুরে পুরোদমে চলছে চলতি মৌসুমের বোরো ধান কাটা-মাড়াই। মৌসুমের শুরুতে স্থানীয় কৃষি বিভাগ বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করলেও সে আশায় এখন গুড়েবালি। ধান পাকার আগ মুহুর্তে পোকামাকড়ের আক্রমণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে চরম ফলন বিপর্যয় ঘটেছে।

এতে বোরো চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছে কৃষক। বোরো চাষী কৃষকরা জানান, অন্যান্য বছর একবিঘা জমিতে ২৫ থেকে ৩০ মন ধান উৎপাদন হলেও প্রতিকূল আবহাওয়ায় এবার উৎপাদন হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ মন। এবার ধান কাটা-মাড়াইয়ের ভরা মৌসুমে ঝড় ও বৃষ্টিপাত ও বৈরি আবহাওয়া কৃষকদের মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে অনেক স্থানে পাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এসব তলিয়ে যাওয়া ধান দ্রুত তুলতে না পারলে পানির নিচেই নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে।

এসব ধান তোলার জন্য অতিরিক্ত মূল্য দিয়েও মিলছে না শ্রমিক। গত বছর ১ বিঘা জমির ধান কাটতে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫শ টাকা লাগলেও এবার তা বেড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। জয়পুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন জানান, তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। প্রতিবিঘা জমিতে বোরো চাষ করতে সার, বীজ, সেচ, কীটনাশকসহ খরচ হয়েছে ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা। খাজুর গ্রামের কৃষক লিয়াকত আলী বাবলু জানান, তিনি এবার ৮ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। তার ১ বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা।

তবে বর্গাচাষীদের ক্ষেত্রে জমিভাড়াসহ উৎপাদন খরচ হয়েছে আরও বেশী। বর্গাচাষীরা জানান, ১ বিঘা জমিতে ধান চাষ বাবদ জমিভাড়াসহ খরচ হয়েছে ২৩ থেকে ২৪ হাজার টাকা। এরমধ্যে রয়েছে রোপণ করতে ১ হাজার ২০০ টাকা, সেচ দিতে ১ হাজার ৫০০ টাকা, সার ৩ হাজার টাকা, নিড়ানী ১ হাজার টাকা, কীটনাশক ৩ হাজার ৫০০ টাকা, কাটা-মাড়াই ৬ হাজার টাকা ও জমি ভাড়া বাবদ ৭ হাজার টাকা। এ হিসেবে ১ বিঘা জমিতে বোরো চাষে বর্গাচাষীদের মোট খরচ হয়েছে ২৩ হাজার ২০০ টাকা। ১ বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ মন।

বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন প্রতিমন ধান বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা দরে। এতে প্রতিবিঘা ধান চাষে কৃষকের প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। বারবাকপুর গ্রামের কৃষক ইউনুস আলী জানান, মৌসুমের শুরুতেই ধান ভালো হলেও শেষ সময়ে ব্যাপকভাবে ব্লাষ্টরোগ দেখা দেয়। নানা প্রকার কীটনাশক প্রয়োগেও এ রোগ দমন না হওয়ায় ধানের ফলন অনেক কমে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, এ উপজেলায় এবার ২৮ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে