এই লড়াইয়ে হয় জিতব, না হয় মরব : ফখরুল

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২২; সময়: ১০:২২ অপরাহ্ণ |
এই লড়াইয়ে হয় জিতব, না হয় মরব : ফখরুল

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : লুটপাট করে এই দেশকে সরকার শ্মশানে পরিণত করেছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের জন্য আবারও যুদ্ধ করতে হবে। এই লড়াই খুব বড় লড়াই। এই লড়াইয়ে হয় জিতব, না হয় মরব। এই অবৈধ সরকারকে যদি হটাতে না পারি, তাহলে আমাদের উপনিবেশ হিসেবে থাকতে হবে।’

বুধবার বিকেলে নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারকে হটানো শুধু বিএনপি বা জাতীয় পার্টির প্রশ্ন নয়, সমগ্র জাতির প্রশ্ন। অস্তিত্বের প্রশ্ন, বেঁচে থাকার প্রশ্ন। আমরা যদি প্রতিবাদ করতে না পারি, তাহলে স্বাধীনতা হারাব, গণতন্ত্রও ফিরে পাব না।’

শুধু র‍্যাবকে নয় শেখ হাসিনা সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘এমন একটা অবস্থায় এসেছি, যুক্তরাষ্ট্র র‍্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। শুধু র‍্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিলে হবে না, হাসিনা সরকারকে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। শেখ হাসিনাকে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। কারণ হাসিনা সরকারের নির্দেশে গুমের ঘটনা ঘটেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেছে। টর্চার করে মানুষকে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শেখ মুজিবের ভাষায় বলতে চাই গত ১৪-১৫ বছর ধরে এই সরকার পুরো দেশকে শ্মশান করে দিয়েছে। আমরা জিজ্ঞেস করতে চাই, বাংলাদেশ আজকে শ্মশান কেন। এই শ্মশানের কারণ, আওয়ামী লীগ দানব, শেখ হাসিনা দানব। যারা আজকে আমাদের মুখের ওপর বসে সবকিছু লুট করে নিয়ে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। আর আমাদের মানুষকে গরিব করে রেখে যাচ্ছে। আজকে আমরা চাল, ডাল ও তেলের মূল্য কমানোর জন্য সংগ্রাম করছি। জ্বালানি তেলের দাম কমানোর জন্য লড়াই করছি।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, কত টাকায় চাল দেবে বলছিল, শেখ হাসিনা মনে আছে! ১০ টাকা না, আজকে কত দাম ৭০ টাকা। প্রত্যেক জিনিসের দাম ৫ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে। আবার শুনতে পারছি, বিদ্যুতের দামও নাকি বাড়াবে। তিন-চারবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে তারা। দাম বাড়ার কারণ একটাই, জনগণ থেকে চুরি করে ডাকাতি করে বিদেশে পাচার করে কানাডায় বেগম পাড়ায় বাড়িঘর তৈরি করা।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, শতকরা ৪২ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে। কোনো মানুষের নিরাপত্তা নাই। মা-বোনদের কোনো সম্মান দেওয়া হয় না। অনেকে বলেছে নিজেরা লুকিয়ে আছে, গুমের ঘটনা ঘটেনি। জাতিসংঘ পরিষ্কার করে বলেছে, মানবাধিকার কমিশন বলেছে, বাংলাদেশে গুম হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক দিন আগে ৭৪ পৃষ্ঠার রিপোর্ট বের হয়েছে।

তারা বলেছে বাংলাদেশে মানবাধিকার নাই। এখানে গুম হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়, এমনকি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নাই। বেগম খালেদা জিয়াকে যে সাজা দিয়েছে এটি রাজনৈতিক সাজা বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করেছে। রাজনীতি থেকে দূরে থাকার জন্য তাকে সাজা দিয়েছে। চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে।

এই নির্বাচন কমিশনকে ডিসিরাও মানে না উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, কয়েক দিন আগে ডিসিরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছে আমরা আপনার কথা মানি না। শেখ হাসিনার কথা মানি। এ রকম নির্বাচন কমিশন দিয়ে কোনোভাবেই নির্বাচন নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়ে নির্বাচন দিতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গতকাল রাত থেকে বাধা দেওয়ার পরও চট্টগ্রামের জনগণ প্রতিহত করে সমাবেশে যোগ দিয়েছে। ৬ লাখ মানুষ সমাবেশে যোগ দিয়ে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করার রায় দিয়েছে। আগামী নয়, পরশু নয় এখনই এখনই পদত্যাগ করো।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদেরকে আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে। সেই যুদ্ধ এই সরকার বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের সংবিধানে কোথায় লেখা আছে সমাবেশ করতে পারবে না। পুলিশ ভাইদের বলব, সার্ভিস রুলস মেনে চাকরি করেন। কারণ আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, জনগণের সেবক। শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত কর্মচারী নন আপনারা।’

সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ বিভাগীয় পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে