শীতকালে কেন ঘন ঘন মন খারাপ হয়?

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২২; সময়: ১১:২০ পূর্বাহ্ণ |
শীতকালে কেন ঘন ঘন মন খারাপ হয়?

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : শীত মানেই উৎসবের ঋতু। পৌষপার্বণ, নতুন বছর, পিকনিক, ঘোরাঘুরি লেগেই থাকে। এত আনন্দের মাঝেও মনজুড়ে কেমন যেন মন খারাপ জাঁকিয়ে বসে কারোর। হঠাৎ মনের কোণে ভিড় জমায় অজানা মন খারাপের গল্প। উদাসীন হয়ে থাকে মন।

মন খারাপের এই বিষয়টি কি আপনার সঙ্গে শীতের প্রায় দিনই ঘটে? জেনে অবাক হবেন, কেবল আপনার নয়, অনেকেরই এমনটা হয়ে থাকে। শীতকালীন এই মনখারাপকে ইংরেজিতে ‘উইন্টার ডিপ্রেশন’ কিংবা ‘উইন্টার ব্লুজ’ বলা হয়। ঠান্ডা পড়তেই সৃষ্টি হওয়া মানসিক অবসাদকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘সিজন্যাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার’।

কেন হয়?

শীতকালে মন খারাপ হওয়ার এই বিষয়টির সূচনা হয় শীতপ্রধান দেশে। আমাদের দেশে শীতকালে মাঝেমধ্যে রোদের দেখাও মিলে। কিন্তু শীতপ্রধান দেশে একদমই রোদের দেখা মেলে না। শীতে সেসব দেশে আলো কমে আসে। সঙ্গে থাকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি, বরফপাত, ভীষণ ঠান্ডা। দীর্ঘ শীতের এই মাসগুলোতে অবসাদ চলে আসে। বহুদিন সূর্যের আলো না দেখায় মন খারাপ হতে শুরু করে।

শীতকালীন মন খারাপের এই বিষয়টি আর শীতপ্রধান দেশে সীমাবদ্ধ নেই। পৃথিবীর নানা ভৌগলিক অবস্থানে থাকা মানুষের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়েছে।

উপসর্গ কী? 

শীতের অবসাদের বেশ কিছু উপসর্গ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো- 

ক্লান্তি

অতিরিক্ত ঘুম পাওয়া

বেশি করে খাওয়ার ইচ্ছা

ওজন দ্রুত বেড়ে যাওয়া

সব কিছু থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা

ভাবনা-চিন্তার ব্যাঘাত ঘটা ইত্যাদি

করণীয় কী? 

শীতকালে অবসাদে ভুগলে কাছের মানুষ, পরিবার বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মন খুলে কথা বলুন। ভালো লাগে এমন কাজ করুন। পাশাপাশি কিছু যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। এতে উপকার পাবেন।

ত্রিকোণাসন-

এই আসনটি করতে পা দুটো ফাঁক করে সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত দুটি দুই পাশে লম্বা করে রাখুন। এবার বাঁ পাশে শরীরকে বেঁকিয়ে বাঁ হাত দিয়ে বাঁ পায়ের আঙুলকে স্পর্শ করুন। এসময় ডান হাতটি উপরের দিকে একেবারে সোজা করে রাখতে হবে। হাঁটু ভাঙা চলবে না। এক থেকে দশ অবধি গুনুন। এরপর দু’টি হাত না ভেঙে সোজা হয়ে দাঁড়ান। একইভাবে ডান হাত দিয়ে ডান পায়ের আঙুল স্পর্শ করুন। ৩ বার এই আসনটি করুন। এই আসনে মন শান্ত থাকবে।

পশ্চিমোত্তানাসন-

সামনের দিকে দুটো পা ছড়িয়ে বসুন। পায়ের পাতার অভিমুখ রাখুন আপনার দিকে। শিরদাঁড়া সোজা রাখুন। সময় নিয়ে শ্বাস নিন। দুই হাত একসঙ্গে মাথার ওপর সোজা করে তুলুন। এরপর শ্বাস ছাড়ুন। এবার ধীরে ধীরে সামনের দিকে ঝুঁকুন। হাত দুটি গোড়ালি পর্যন্ত পৌঁছলে একটির কব্জি দিয়ে আর একটি ধরে রাখুন। মাথা রাখুন হাঁটুতে। এরপর শ্বাস ছাড়ুন।

খেয়াল রাখুন শিরদাঁড়া যেন সামনের দিকে প্রসারিত থাকে। শ্বাস নিন। আস্তে আস্তে হাত দুটি সরিয়ে মাথার ওপর নিয়ে গিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এবার হাত দুটি নামিয়ে নিয়ে আগের ভঙ্গিতে ফিরে যান। এই ব্যায়াম মানসিক উদ্বেগ কমাবে।

মালাসন-

বেশ সহজ একটি যোগাসন। প্রথমে মাটিতে বসুন। এবার দুই পা দুই দিকে দিয়ে উঁচু হয়ে বসুন। দুটি পা যথাসম্ভব কাছাকাছি রাখুন। হাত দুটি নমস্কারের ভঙ্গিতে একসঙ্গে জড়ো করে রাখুন। টানা ৩-৪ মিনিট এই আসনে থাকার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় আসুন। মন খারাপ নানা কারণেই হতে পারে। তবে অবসাদ সঙ্গী করে বেশি সময় থাকবেন না। মনের যত্ন নিন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে