যে জালে জড়ালে বেরিয়ে আসা যায় না

প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২৩; সময়: ৩:৫৮ অপরাহ্ণ |
যে জালে জড়ালে বেরিয়ে আসা যায় না

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : পশ্চিমা বেশ কিছু অর্থ-গবেষণা সংস্থার হিসাবে বিশ্বের অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ‘উদ্ধার ঋণ’ বা ‘রেসকিউ লোন’ দেওয়ার পরিমাণে বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, যুক্তরাষ্ট্রকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে চীন।

প্রধানত অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে টাকা ধার দিচ্ছে চীন। চীনের ঋণ-মানচিত্রে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, সাহারা মরুভূমির দক্ষিণ দিকে অবস্থিত আফ্রিকার দেশগুলোসহ পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, লাওস, কিরগিজস্তান, মঙ্গোলিয়া, আর্জেন্টিনা, মিসর জাম্বিয়া, ঘানা ইত্যাদি।

জানা যাচ্ছে, ৪০টিরও বেশি দেশের চীনের কাছে ঋণের পরিমাণ তাদের জিডিপির ১০ শতাংশেরও বেশি। কয়েকটি দেশের ক্ষেত্রে সেটা আবার ২০ শতাংশেরও বেশি।

চীনের সুদের হার আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাংক বা ফ্রান্স-জার্মানির তুলনায় দুই থেকে চার গুণ পর্যন্ত বেশি এবং ঋণ শোধ করার সময়সীমাও অনেক কম।

স্বাভাবিকভাবেই নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলো যখন সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে পারে না, চীন তখন আবারও এবং আরও ঋণ দেয়, আগের ঋণ শোধ করার জন্য।

এভাবে চীনের ঋণচক্রে চলতেই থাকে। ঋণের অর্থে সেসব দেশের বন্দর, মহাসড়ক, রেল, খনি, টেলিকমসহ প্রধান ও বড় বড় পরিকাঠামো ক্ষেত্রগুলোতে চীনের প্রকল্প চলছে। দেশগুলো নির্ধারিত সময়ে ঋণ শোধ করতে না পারায় প্রকল্পগুলোর বাণিজ্যিক দখল নিচ্ছে চীন।

২০১৭ সালে হাম্বানটোটা বন্দর প্রকল্পের ৭০ শতাংশ অংশীদারী চীনা ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয়েছিল শ্রীলঙ্কা।

ব্রিটেনসহ বহু পশ্চিমা দেশ অভিযোগ করে আসছে, এই ঋণ দেওয়া আসলে চীনের পাতা ফাঁদ। এ জালে জড়ালে বেরিয়ে আসা যায় না। অর্থব্যবস্থা তথা অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ঋণকে চীন করে তুলেছে ভূ-রাজনীতি ও কূটনীতির মহাস্ত্র।

চীনের ঋণদানের কোনো সরকারি খতিয়ান নেই, প্রক্রিয়াটি অস্বচ্ছ— দুর্নীতি ও সুবিধাবাদে ভরা- এমন অভিযোগও রয়েছে অনেকের।

নানা দেশে চলা চীনা প্রকল্পগুলোতে শ্রম-অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে প্রচুর, বহু প্রকল্পই পরিবেশবান্ধব নয়। অথচ এসবের বিরুদ্ধে কথা বলার ক্ষমতা নেই সেসব দেশের।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে