অ্যাপল হেডসেট অসামাজিক: জাকারবার্গ

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৩; সময়: ১:২৯ অপরাহ্ণ |
অ্যাপল হেডসেট অসামাজিক: জাকারবার্গ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : প্রযুক্তি অঙ্গনে চ্যাটজিপিটি নিয়ে আলোচনা যখন তুঙ্গে, এরই মধ্যে অ্যাপল ঘোষণা দিল তাদের মিক্সড রিয়ালিটি হেডসেট ভিশন প্রো-এর। গোটা দুনিয়া যেন চমকে উঠল ভিশন প্রো-এর ঝলকে। সর্বত্রই আলোচনার অন্যতম উপাদান এখন স্কি করার সময় ব্যবহৃত গগলসের মতো দেখতে এ হেডসেট। যার দাম ৩ হাজার ৪৯৯ ডলার থেকে শুরু। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার বেশি।

বলা হচ্ছে, ভিশন প্রো-এর ঘোষণার মধ্য দিয়ে মেটার সঙ্গে সম্মুখ প্রতিযোগিতায় নামল অ্যাপল। কারণ, বেশ কয়েক বছর ধরেই কোয়েস্ট সিরিজের হেডসেট উৎপাদন করে এ বাজার আধিপত্য করছে কোম্পানিটি। পাশাপাশি, মেটার হেডসেট দামেও তুলনামূলক সাশ্রয়ী। আসন্ন মেটা কোয়েস্ট ৩ হেডসেটের দাম মাত্র ৪৯৯ ডলার। তবে, এর মধ্যে অ্যাপলের কয়েকটি ফিচার। ইন্ডিপেনডেন্ট।

তাইতো অ্যাপলের এ হেডসেট নিয়ে সমালোচনা করতে ছাড় দেননি স্বয়ং মেটাপ্রধান মার্ক জাকার্বার্গও। অ্যাপলের নতুন হেডসেট ব্যয়বহুল, ‘জাদুকরী নয়’ ও মেটার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার সঙ্গে একেবারেই যায় না বলে মন্তব্য করেছেন জাকারবার্গ। এ ছাড়া এ ডিভাইসটির ব্যবহার ভয়াবহ নিঃসঙ্গতার অভিজ্ঞতা তৈরি করবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।

গত সপ্তাহে অ্যাপ নির্মাতাদের জন্য বিশেষ আয়োজন ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড ডেভেলপার্স কনফারেন্স (ডব্লিউডব্লিউডিসি)’-এ অগমেন্টেড রিয়ালিটির সুবিধা থাকা ‘ভিশন ওয়ান’ হেডসেটটি উন্মোচন করে অ্যাপল।

হাই-রেজুলিউশন ও এলইডি ডিসপ্লে রয়েছে এতে। এখনকার বেশির ভাগ হেডসেটের তুলনায় এর রেজুলিউশন অনেকটাই ভালো। ডুয়াল-ডিসপ্লে সিস্টেমের মাধ্যমে একেবারে যেন সত্যিকারের মিক্সড রিয়েলিটির জগতে প্রবেশ করে যাবেন। এ ভিশন প্রো হেডসেটে একটি ডিজিটাল ক্রাউনও রয়েছে, ঠিক অ্যাপল ওয়াচের মতো। সেটি ব্যাটারি দ্বারা চালিত, ২ ঘণ্টা একটানা চলতে পারে।

আয়োজনে ডিভাইসের হার্ডওয়্যার ও ‘স্পাশিয়াল কম্পিউটিংয়ের’ নতুন ধারণা, দুটোই দেখিয়েছে অ্যাপল। আর আগামী বছর থেকেই এটি বাজারে পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়।

অ্যাপলের হেডসেট উন্মোচনের প্রতিক্রিয়ায় মেটার প্রধান নির্বাহী জাকারবার্গ বলছেন, এটি ‘কম্পিউটিংয়ের ভবিষ্যৎ লক্ষ্যমাত্রা প্রদর্শন করলেও ‘সেটি তার কল্পনার সঙ্গে যায়নি’।

তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে অ্যাপল হেডসেটের সব প্রযুক্তি পর্যবেক্ষণ করেছে মেটা। তবে, কোম্পানিটি নিজেদের পণ্যে এর কিছুসংখ্যক প্রযুক্তির ব্যবহার এড়িয়ে গেছে।

এর কারণ হিসাবে তিনি কোম্পানির কর্মীদের ‘বাড়তি খরচের’ বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। ভার্জ। জাকারবার্গ বলেন, খরচের বিষয়টি হেডসেট উৎপাদনে মেটা ও অ্যাপলের মধ্যে অন্যতম দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য। পাশাপাশি, হেডসেটের মূল মনোযোগ বিভিন্ন সামাজিক ও ফিটনেসবিষয়ক ফিচারে থাকবে, মেটার এমন লক্ষ্যমাত্রা নিয়েও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

খোঁচা দিয়ে মেটা সিইও বলেন, ‘শুরুতেই আমি বলতে চাই, সুসংবাদ হলো, পদার্থবিদ্যার নানা সূত্রের প্রয়োগের বেলায় তাদের কাছে এমন কোনো জাদুকরী সমাধান নেই, যা আমাদের দল এরই মধ্যে খুঁজে পায়নি বা ভেবে দেখেনি।’ ‘তারা উচ্চ রেজুলিউশনের ডিসপ্লে নিয়ে কাজ করেছে।

পাশাপাশি তারা এটি চালাতে যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে, তাতে সাতগুণ বেশি খরচ হয়। এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এত বেশি বিদ্যুৎ লাগে যে, শুধু ব্যাটারি দিয়ে হবে না-তারের সংযোগও লাগবে। তারা এমন নকশার পক্ষে বাজি ধরেছে, যা তাদের হিসাব অনুসারেই কেবল যুক্তিযুক্ত মনে হবে।’

‘তবে দেখুন, তাদের ঘোষণা আসলে আমাদের মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য তুলে ধরে এবং আমি যা ‘সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মনে করি, আমাদের কোম্পানি সেটিই অনুসরণ করছে। আমরা এমনভাবে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করি, যা সাশ্রয়ী হয় এবং সবার হাতের নাগালে থাকে। আমাদের কার্যক্রমের মূল বিষয়ই এটি। এরই মধ্যে কোয়েস্ট সিরিজের কোটি কোটি হেডফোন বিক্রি করেছি আমরা।’

এর আগে মেটা ও অ্যাপল একসঙ্গে কাজ করলেও কোম্পানিগুলোর মধ্যে মতপার্থক্যও দেখা গেছে। উদাহরণ হিসাবে ধরা যায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় অ্যাপল বিভিন্ন প্রাইভেসি ফিচার চালু করে ফেসবুকের বিজ্ঞাপন ব্যবসায় প্রয়োজনীয় ট্র্যাকিং ব্যবস্থার পথ সংকুচিত করে দেয়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে