সম্মানসূচক ডি. লিট. উপাধি পেলেন নর্দান এডুকেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৩; সময়: ৫:২৫ অপরাহ্ণ |
সম্মানসূচক ডি. লিট. উপাধি পেলেন নর্দান এডুকেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) অধ্যাপক ও নর্দান এডুকেশন গ্রুপের চেয়াারম্যান ড. আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহকে সম্মানসূচক ডক্টরেট অব লিটারেচার (ডি. লিট.) উপাধিতে ভূষিত করেছে পশ্চিমবঙ্গের টেকনো ইন্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা, বাণিজ্য ও সামাজিক ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তাকে এই সম্মানসূচক উপাধি দেওয়া হয়।

বৃহষ্পতিবার (১০ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভারতের বিখ্যাত পদ্মভূষণ ও পদ্মশ্রী এন. আর. নারায়ণ মূর্তি এই সম্মাননা প্রদান করেন।

কলকাতার বিশ্ববাংলা অডিটরিয়ামে ভারতের বৃহত্তম কোম্পানি টাটা সন্সের প্রতিষ্ঠাতা রতন টাটা এবং বিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীর সঙ্গে এই সম্মাননা গ্রহণ করেন বরেণ্য এই শিক্ষাবিদ।

অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ কলকাতাকে বাঙালির প্রাণের শহর উল্লেখ করে বলেন, একজন বাঙালি হিসেবে আমি গর্বিত, আজ আপনাদের ভালোবাসা আর সম্মান আমায় পরিপূর্ণ করল।

এছাড়াও তিনি বাঙালি জাতিকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতিগুলোর একটি হিসেবে উল্লেখ করেন এবং একই সঙ্গে বাঙালি বিপ্লবীদের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

বাঙালির গৌরবের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে তিনি দুই বাংলার মধ্যে শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতি, বাণিজ্যের সুসম্পর্ক ও সম্প্রীতি রক্ষায় দৃঢ় থাকার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।

অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ ভারতের সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরা জেলাতে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চশিক্ষা শেষ করে তিনি ১৯৯৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করেন।

ইউরোপ আমেরিকাতে শীর্ষ পর্যায়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর শিক্ষা শেষে দেশের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসায় মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন এবং গত ৩০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও আঞ্চলিক বাজার অর্থনীতির একজন শিক্ষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে অধ্যাপনা করছেন।

তিনিই বাংলাদেশে আধুনিক মার্কেটিংকে পরিচয় করান এবং ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং সামিটে স্পিকার হিসেবে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরেন।

আন্তর্জাতিক এই সামিটে প্রতিবারই বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন- বাংলাদেশের শীর্ষ কর্পোরেট ও পলিসি মেকাররা।

মার্কেটিং বিশ্বের জনক প্রফেসর ফিলিপ কটলার এবং তার সহযোগীদের সঙ্গে গত চারবছর ধরে নিয়মিত কাজ করে আসছেন। সেই ধারাবাহিকতায় কটলার ইমপেক্ট এর গ্লোবাল এডভাইজার হিসেবে নিযুক্ত হন।

ড. আব্দুল্লাহ বাংলাদেশে মার্কেটিং জগতে এক অনন্য বিপ্লব ঘটান, যার ধারাবাহিকতায় তিনি প্রফেসর ফিলিপ কটলারের সঙ্গে সহ-লেখক হিসেবে লেখেন ‌‘এসেনশিয়ালস অফ মডার্ন মার্কেটিং’; প্রথমবারের মতো মার্কেটিং গুরুর বইতে অবস্থান হয় বাংলাদেশের ব্যবসায়িক জগতের দেশীয় সব কেইস।

‘এসেনশিয়ালস অফ মডার্ন মার্কেটিং’ তার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ যা এক এক করে ১৭টি দেশে উম্মোচিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার এ সব কৃতিত্বের জন্য ২০২৩ সালে তিনি প্রফেসর ফিলিপ কটলার কর্তৃক ‘কটলার ডিস্টিঙ্গুইসড প্রফেসর অফ মার্কেটিং’ উপাধি অর্জন করেন।

তিনি একই সঙ্গে একজন শিক্ষাবিদ ও সফল উদ্যোক্তা, যিনি তাত্ত্বিক এবং প্রায়োগিক শিক্ষার সম্মিলিত প্রচেষ্টার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন।

তাত্ত্বিক বিষয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে প্রায়োগিক ও দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রচলনে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন স্বনামধন্য ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

ড. ইউসুফ আব্দুল্লাহ ১৮টিরও বেশি বই লিখেছেন। যার ভেতরে অত্যন্ত জনপ্রিয় বই ‘ভারত ভাগে বাংলার বিয়োগান্তক ইতিহাস’; যেখানে তিনি বাঙালির হারিয়ে যাওয়া ইতিহাসকে তুলে ধরেছেন।

তিনি বাঙালির জাতিসত্তা, ইতিহাস-ঐতিহ্য জাগরণে বিশ্ব সংস্থা ‘আমি বাঙালি’ -এর স্বপ্নদ্রষ্টা এবং প্রতিষ্ঠাতা। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহর শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে যে অনন্য অবদান যা জাতীয় পরিমণ্ডলে ব্যপকভাবে সমাদৃত।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে