প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত আফ্রিকার ২ দেশ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩; সময়: ১২:১৮ অপরাহ্ণ |
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত আফ্রিকার ২ দেশ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত আফ্রিকার মরক্কো ও লিবিয়ার জনজীবন। লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের আঘাত, অন্যদিকে প্রতিবেশী মরক্কোয় ভূমিকম্পে বহু মানুষের প্রাণহানি।

দুই দেশেই ধসে গেছে অসংখ্য পথ-ঘাট ও বাড়ি-ঘর। লিবিয়ায় এখন পর্যন্ত ২০০-এর মতো প্রাণহানির খবর পাওয়া গেলেও সংখ্যাটা ২ হাজার ছাড়াতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।

সব মিলিয়ে কয়েকদিনের ব্যবধানে আফ্রিকার মুসলিমপ্রধান দেশ দুটিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে।

শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল রবিবার তাণ্ডব চালায় লিবিয়ায়। ঝড় ও বন্যায় ডারনা এলাকায় বহু বাড়ি-ঘর, সড়ক তলিয়ে যায়। স্রোতের তোড়ে ভেসে গেছে বহু মানুষ।

কয়েক হাজার মানুষ নিখোঁজ। মূলত দুটি বাঁধ ভেঙে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত। সঙ্গে ভারী বর্ষণে পরিস্থিতিকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে।

পূর্বাঞ্চলীয় লিবিয়ার ন্যাশনাল আর্মি’র (এলএনএ) মুখপাত্র আহমেদ মিসমারি বলেছেন, ‘ডারনা শহর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে সম্ভবত ২ হাজার মানুষ মারা গেছেন। নিখোঁজ ৬ হাজার। বন্যার পানির তোড়ে দুটি বাঁধ ভেঙে পড়েছে।’

নিহতের প্রকৃত সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি সাংবাদমাধ্যম সিএনএন। সরকারও সঠিক সংখ্যাটা নিরূপণ করতে পারেনি এখনও।

প্রথমে দেশটির বেনগাজির রেড ক্রিসেন্ট ধারণ করছিল, ডারনায় ১৫০ থেকে ২৫০ জন মারা গেছে। লিবিয়ার জরুরি ও অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষের প্রধান ওসামা আলি সিএনএনকে বলেছেন, বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় সব পানি ডারনার দিকে ঢুকে।

লিবিয়ায় জাতিসংঘের সহায়তা মিশন এক্স-এ একটি পোস্টে, পূর্বাঞ্চলের জরুরি পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে।

লিবিয়ার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধুঁকছে উত্তর আফ্রিকার আরেক দেশ মরক্কো। গত শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সবাই যখন ঘুমের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, ঠিক সেই সময় ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে তছনছ করে দিয়ে গেছে এলাকার পর এলাকা। খোলা আকাশের নিচে তাঁবুতে রাত কাটাতে হচ্ছে হাজারো মানুষকে।

ভূমিকম্পটি মারাকেশ শহরের ৭২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে আঘাত হানে। সবশেষ ২ হাজার ৮০০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে মরক্কোর রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।

গত এক শতাব্দীর মধ্যে এত বড় ভূমিকম্প দেশটিতে আঘাত হানেনি। ফলে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যানটাও দীর্ঘ। ধ্বংসস্তূপে প্রাণের সন্ধানে সরকারের জরুরি পরিষেবার পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনও উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। কাতার ও স্পেনের বিশেষজ্ঞ দল দেশটিতে পৌঁছেছে।

দুটি গ্রাম ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল আল-হাউজ প্রদেশে অবস্থিত। কর্তৃপক্ষ বলছে, এই দুই গ্রাম থেকে এক হাজার ৩৫১ জনের মরদেহ এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে। প্রদেশের অন্তত ১৮ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের সোমবার বিবৃতিতে জানিয়েছে, মরক্কোয় শুক্রবারের ভূমিকম্পে অন্তত ১০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাজার হাজার ঘর-বাড়ি ধ্বংস। এতে অনেক পরিবার বাস্তুচ্যুত।

রাতের তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। স্কুল, হাসপাতাল এবং অন্যান্য চিকিৎসা ও শিক্ষা কেন্দ্রগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাপকভাবে, যা শিশুদের আরও প্রভাবিত করছে।

দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বের অনেক দেশ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেও কবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তা অনিশ্চিত।
শুক্রবারের ভূমিকম্পের পর কয়েক দফা আফটারশক অনুভূত হয়। আবারও হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে