পুঠিয়ায় সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস ও এডিনিয়াম চাষ করে সাবলম্বী পঙ্কজ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩; সময়: ১২:৩৯ অপরাহ্ণ |
পুঠিয়ায় সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস ও এডিনিয়াম চাষ করে সাবলম্বী পঙ্কজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া : রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের পঙ্কজ কুমার মহন্ত। ইতিমধ্যেই রাজশাহী কলেজ থেকে সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী সম্পন্ন করেছেন। শখের বসে বাগান করতেন।

লেখাপড়ার পাশাপাশি সুন্দর্য্য বর্ধক গাছ সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস এবং এডেনিয়াম তৈরি এবং বিক্রয় করাকে দিয়েছেন বাণিজ্যিক রুপ। চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় তার বার্ষিক আয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

পঙ্কজ কেউরাজোরা তার পৈত্রিক ৩০ শতক জমির উপর তৈরি করেছেন এই ফার্ম। তিনি ভারত, থাইল্যান্ড ও চীন থেকে ইনপোটারদের মাধ্যমে চারা সংগ্রহ করেন।

নিজের ফার্মে সুন্দর্য্য বর্ধক গাছ সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস এবং এডেনিয়াম চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হয়ে উঠেছে পঙ্কজ। বাজারে বাড়তে থাকা চাহিদা এবং ভালো দামের কারণে এগিয়ে আসছে অনেক বেকার যুবক।

এই সুন্দর্য্য বর্ধক গাছ চাষের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে সঠিক দিক-নির্দেশনা এবং সরকারী সহায়তা চান তারা। আর পঙ্কজের পুরো ব্যবসাই অনলাইন ভিত্তিক।

বর্তমানে বাগানের পলি হাউসের নিচে কিছুটা উঁচু চৌকির উপর চাষ করেছেন প্রায় ৩০০ প্রজাতির ৪০ হাজারের বেশি সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস, এবং এডেনিয়াম। তাই নিজের বাগানের নাম রেখেছেন ‘সাকুলেন্ট প্যারাডাইস’। সাকুলেন্ট এক বিশেষ ধরনের উদ্ভিদ, যা পানি সংগ্রহ করে জমা রাখে শরীরে।

এজন্য তাদের পাতা বেশ পুরু ও রসাল হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা সাকুলেন্ট প্রজাতির উদ্ভিদের জন্য বিখ্যাত। আমাদের দেশে বাসাবাড়ির সজ্জার জন্য কিংবা বাগানের জন্য এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে।

সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা দামের গাছ আছে তার বাগানে। আর সাকুলেন্টের দাম ২৫০ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা। তবে সহজ শর্তে ঋণ ও সরকারী পৃষ্টপোষকতা পেলে এর চাষ আরো বাড়বে বলে দাবী স্থানীয়দের।

উদ্যোক্তা ও চাষী পঙ্কজ কুমার মহন্ত জানান, ছোট বেলা থেকে গাছা পালার প্রতি আমার আলাদা একটা আকর্ষণ ছিলো। শহরে লেখাপড়ার সময় আমি ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট সর্ম্পকে জানতে পারি। তখন থেকেই আমি ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট সংগ্রহ করা শুরু করি।

এখন আমার ফার্মে ২৫০ থেকে ৩০০ প্রজাতির সাকুলেন্ট এবং ১৫০ থেকে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস আছে। এবং সাকুলেন্টের একক ফার্ম হিসেবে এটা আমার জানা মতে বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় ফার্ম।

এবং আমার এই অর্জনটার পেছনে আমাদের এখানকার যে কৃষি কর্মকর্তারা রয়েছে তারা আমাকে সার্বক্ষণিক সাহয্য ও সহযোগীতা করেন এবং যে কোন সমস্যায় আমি তাদের দারস্ত হই।

তিনি আরও বলেন, এগুলো বিক্রিয় করা জন্য সবচেয়ে উপযোগী মাধ্যম হলো অনলাইন। আর বর্তমানে এটা অফলাইনেও ভালো বিক্রি হয়। অনেকেই বাইরে থেকে আমার ফার্ম দেখতে আসে। আমার যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সেটা হচ্ছে যে আমি এটা করে সবার কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই। যে নিজের ইচ্ছাতেই অনেক কিছু করা যায়।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবির মাহামুদ জানান, এই ফার্মটা প্রথম এতো বড় সাকুলেন্ট ও ক্যাকটাসের ফার্ম আমাদের শ্রদ্ধেয় উপ-পরিচালক ও কৃষি কর্মকর্তার নির্দেশ ক্রমে আমরা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সব সময় আসি এবং তাকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদান করে থাকি।

এই ফার্ম দেখে এলাকার অনেক তরুণ যুবক তারা উদ্যোক্তা হিসেবে আগ্রহ প্রকাশ করছে। আমাদের সার্বিক সহযোগীতায় পঙ্কজ কুমার অনেকটা সাবলম্বী হয়ে উঠেছে। আমরা তার সার্বিক মঙ্গল কামনা করি।

শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মুকুল জানান, পঙ্কজ লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজের উদ্দ্যেগে নিজের জমিতে সাকুলেন্ট, এডেনিয়াম এবং ক্যাকটাসের যে ফার্মটা তৈরি করেছে এটা বোধ করি রাজশাহী জেলাতে আর কোথাও এরকম নাই। এখানে সে নিজস্ব উদ্দোগে নিজম্ব উদ্ভাবনে এই কাজটা করছে। সরকারী বা বেসরকারী কোন সংস্থার সাপোর্ট পেলে এই ফার্মটা আরও ভালোভাবে করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, আমি তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে, সে লেখাপড়ার পাশাপাশি যে এইরকম একটা উদ্দ্যেগ নিয়েছে। কিন্তু গ্রীণ হাউস করার মত যে সামর্থটা লাগে তার সেই সামর্থটা নাই তাই আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে অনুরোধ করি যে তাকে সাহায্য সহযোগিতা করলে হয়তো সে এখান থেকে একটা ভালো কিছু করতে পারবে।

এবং ক্যাকটাস ও সাকুলেন্ট দেশে বিদেশে বিভিন্ন যায়গায় রপ্তানি করে সে কিছু উর্পাজনও করতে পারবে। পাশাপাশি তার দেখা দেখি আরও কিছু উদ্দ্যেগতা হয়তো তৈরি হবে ও তারা এই গুলো কাজ করে নিজেরা সাবলম্বী হতে পারবে।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে