মান্দায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক!
নিজস্ব প্রতিবেদক, মান্দা : নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডর অধিগ্রহণ করা সম্পত্তিতে একের পর এক পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব স্থাপনার নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য নোটিশও দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। কিছুদিন বন্ধ রাখার পর অলৌকিক ক্ষমতাবলে ওইসব স্থাপনার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করছেন দখলদারেরা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত ৫ বছরে মান্দা উপজেলায় আত্রাই ও ফকিন্নি নদীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পাউবোর অধিগ্রহণ করা সম্পত্তিতে অন্তত দুইশর বেশি পাকা নির্মাণ করা হয়েছে। এসব নির্মাণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হলে প্রাথমিকভাবে নোটিশ দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এরপর কিছুদিন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখেন দখলদারেরা। পরবর্তীতে পাউবোর কর্তাদের ম্যানেজ করে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। এসময় অভিযোগ দেওয়া হলেও আর আমলে নেন না পাউবোর কর্মকর্তারা। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তারা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাঁজরভাঙ্গা বাজারের একাধিক বাসিন্দা জানান, পাঁজরভাঙ্গা বাজার এলাকায় নতুন করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন ফজলুল করিম বাবু ও বুলবুল হোসেন। অভিযোগ দেওয়ার পর স্থাপনা দুটির নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য নোটিশ দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কিছুদিন বন্ধ রাখার পর ফজলুর করিম বাবু সম্প্রতি ওই স্থাপনার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেন। অভিযোগ উঠেছে দেড় লাখ টাকায় পাউবোর কয়েকজন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে এই কাজ সম্পন্ন করেন তিনি।
এরই মধ্যে এই বাজারে আলাউদ্দিন প্রামাণিক, আতাউর রহমান, গৌউর চন্দ্র প্রামাণিক, জালাল হোসেন একইভাবে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেন। আতাউর রহমান নির্মাণ করছেন বহুতল ভবন।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত ফজলুল করিম বাবু বলেন, ‘স্থাপনা নির্মাণের সময় নোটিশ দিয়ে কাজ করে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে পাউবো অফিসে যোগাযোগ করে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শেষ করেছি। কীভাবে ম্যানেজ করলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে বলা যাবে না।’
এ প্রসঙ্গে জোতবাজার বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি ফজলুল বারী সাফি বলেন, ‘জোতবাজার চৌরাস্তা মোড়ের অদুরে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ করে পাউবোর সম্পত্তিতে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের জন্য এলাকাবাসি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
পত্রপত্রিকায় বহু লেখালেখি হয়েছে। পাউবোর সকল দপ্তরে অভিযোগও দিয়েছি। কিন্তু স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ হয়নি। তবে পকেট ভারী হয়েছে পাউবোর কর্মকর্তাদের।’
এ প্রসঙ্গে পাউবো নওগাঁর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মহসীন রেজা বলেন, ‘পাউবোর সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে ঘর নির্মাণ কাজে এ দপ্তরের কেউ জড়িত আছে কি না আমার জানা নেই। তবে আমি জড়িত নই।’
পাউবো নওগাঁর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী পবিত্র কুমার পাল এ বিষয়ে মোবাইলফোনে কথা বলতে রাজি হননি।
জানতে চাইলে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী ফইজুর রহমান বলেন, এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। এভাবে মোবাইলে কথা হবে না। অফিসে আসেন বলে সংযোগ কেটে দেন।