আকাশ রেল দেখলাম, এবার পাতাল রেল করবো: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৩; সময়: ৫:২৬ অপরাহ্ণ |
আকাশ রেল দেখলাম, এবার পাতাল রেল করবো: প্রধানমন্ত্রী

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত উড়ালপথে মেট্রোরেল চালুর পর এবার পাতাল রেলের স্বপ্ন বুনছে রাজধানীবাসী। শনিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৫ নর্দান রুটের (সাভার-ভাটারা) নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আরামবাগে জনসভায় তিনি বলেন, আকাশ রেলের পর এবার পাতাল রেল হচ্ছে।

এর আগে এমআরটি লাইন-৬, আগারগাঁও থেকে মতিঝিল স্টেশনে বিকেল ৩টা ৩৮ মিনিটে এই নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর আরামবাগে জনসভায় অংশ নেন সরকারপ্রধান।

সেখানে ঢাকাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আজকে আমরা নিয়ে এসেছি মেট্রোরেল। উত্তরাবাসী মাত্র ৪০ মিনিটের মধ্যে মতিঝিল পৌঁছে যাবেন। যানজটে আটকে থাকতে হবে না। এখন আমরা সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাতাল রেল করবো। আকাশ রেল আমরা দেখলাম, এখন পাতাল রেল করবো।

এমআরটি লাইন বা মেট্রোরেলের মাধ্যমে ১২ হাজার প্রকৌশলীর চাকরির সংস্থান হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

এমআরটি লাইন-৫ হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় পাতাল মেট্রোরেল। এই প্রকল্পে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে রাজধানীর ভাটারা পর্যন্ত ১৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার পাতাল এবং ৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার উড়ালসহ মোট ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল লাইন তৈরি হবে। এর মাঝে যাত্রী ওঠা-নামার জন্য মোট ১৪টি স্টেশন (৯টি পাতাল ও ৫টি উড়াল) থাকবে।

প্রকল্পটির কাজ ২০২৮ সালের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। এ প্রকল্পেও ঋণসহায়তা দিচ্ছে জাইকা।

এমআরটি লাইন-৫ এর রুট অ্যালাইনমেন্ট হলো-হেমায়েতপুর-বলিয়ারপুর-বিলামালিয়া-আমিন বাজার ও গাবতলী। সেখান থেকে দারুস সালাম-মিরপুর ১- মিরপুর ১০-মিরপুর ১৪ ও কচুক্ষেত হয়ে যাবে বনানী। এরপর গুলশান ২ ও নতুনবাজার হয়ে লাইনটি যাবে ভাটারায়। এর মধ্যে হেমায়েতপুর থেকে আমিন বাজার ও ভাটারা এই অংশে মেট্রোরেলের উড়াল পথ হবে। গাবতলী থেকে নতুন বাজার অংশে পাতাল মেট্রোরেল হবে।

এর আগে বেলা আড়াইটার পর আগারগাঁও স্টেশন থেকে আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সবুজ পতাকা উড়িয়ে তিনি উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এর আগে তিনি আগারগাঁও স্টেশনে স্বয়ংক্রিয় টিকিট মেশিন থেকে মেট্রোরেলের টিকিট কাটেন।

এরপরই মতিঝিল স্টেশনে এমআরটি লাইন-৫ এর নর্দান রুটের কাজের উদ্বোধনের জন্য তিনি মেট্রোরেলে চড়ে মতিঝিলের উদ্দেশে যাত্রা করেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকরা ট্রেনটি নির্ধারিত গতিতে চলেনি। একটু গতি কমিয়ে ট্রেনটি চলেছে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত। এ জন্য সময় লেগেছে ২৫ মিনিট।

শনিবার আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন হলেও এর বাণিজ্যিক চলাচল শুরু হবে আগামীকাল রোববার (৫ নভেম্বর) থেকে।

এর আগে গত ৭ জুলাই মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশে ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাত্রার উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানী ঢাকায় দেশের প্রথম এলিভেটেড মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন। এরপর উত্তরা-আগারগাঁও মেট্রোরেলের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরইমধ্যে এই অংশের সবগুলো স্টেশন চালু হয়েছে। এখন মেট্রোরেল সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলাচল করছে।

উত্তরা থেকে মতিঝিল-কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটারের পুরো রুটটি ৪০ মিনিটেরও কম সময়ে ভ্রমণ করে মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০,০০০ যাত্রী বহন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২৪ জুন এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ উদ্বোধন করেন।

মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। শুরুতে এই প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। মূলত মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার বাড়তি অংশ নির্মাণ, প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হওয়ায় খরচ বেড়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা।

মেট্রোরেল প্রকল্প নেয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে