রাজশাহীতে ১২ দিনেও উদ্ঘাটন হয়নি ২ চিকিৎসক খুনের রহস্য

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৩; সময়: ৪:৪৮ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে ১২ দিনেও উদ্ঘাটন হয়নি ২ চিকিৎসক খুনের রহস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম কাজেম আলী আহমেদের খুনিরা এখনো অধরা। একই রাতে খুন হওয়া পল্লী চিকিৎসক এরশাদ আলী দুলালের খুনিরাও কেউ শনাক্ত বা ধরা পড়েনি।

গত ১২ দিনেও পুলিশ রাজশাহী নগরীতে সংঘটিত দুটি চাঞ্চল্যকর হত্যার মোটিভ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে তদন্তে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে তারা দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সামনে আনতে পারবেন বলে আশা করছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরএমপির রাজপাড়া থানার এসআই রাজিবুল ইসলাম বলেছেন, ডা. কাজেম হত্যার তদন্তে বলার মতো এখনো কিছু তাদের হাতে নেই। সিনিয়র অফিসারদের নির্দেশনা মোতাবেক তদন্ত চলছে।

আরএমপি কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেছেন, ডা. হত্যার তদন্তে উল্লেখ করার মতো কোনো অগ্রগতি হয়নি। পুলিশ দুটি হত্যা রহস্য উন্মোচনসহ খুনিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যদিও নিহত ডা. কাজেম আলীর বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গোলাম মর্তুজা মন্টু সম্প্রতি দাবি করেছেন, তার ছেলে হত্যায় কাজেমের স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজন জড়িত থাকতে পারেন। তবে পুলিশ এখনো এই বিষয়ে তার বক্তব্য গ্রহণ করেনি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্রে জানা গেছে, নগরীর বর্ণালী মোড়ে যে রাতে (২৯ অক্টোবর) ডা. কাজেম খুন হন তার ৩ ঘণ্টা আগে কাছাকাছি এলাকা চন্দ্রিমা থানার কৃষ্টগঞ্জ বাজার থেকে অস্ত্রের মুখে এরশাদ আলী দুলাল নামের একজন পল্লী চিকিৎসককে তুলে নিয়ে খুন করা হয়। দুই খুনের কিলিং প্যাটার্ন প্রায় এক ও অভিন্ন। দুটি খুনে ব্যবহার করা হয় একই রংয়ের হাইস মাইক্রোবাস।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা মতে, দুটি কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া হত্যাকারীদের শারীরিক বর্ণনাও প্রায় অভিন্ন। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, ডা. কাজেম ও ডা. দুলাল হত্যার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত, যাকে টার্গেট কিলিং হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ডা. কাজেম আলী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ছিলেন। তিনি জামায়াতের একজন বড় দাতা সদস্য। অন্যদিকে ডা. দুলালও স্থানীয়ভাবে জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও অর্থ জোগানদাতা সদস্য। এখনো খুনিরা ধরা না পড়ায় রাজশাহীর চিকিৎসক মহলে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

আরএমপির কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, খুনিদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে পুলিশের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। পুলিশ দুই চিকিৎসকের হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন ও খুনিদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের লক্ষ্যে কাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডা. কাজেম ও ডা. দুলাল হত্যার ঘটনা ছাড়াও রাজশাহীর হরিয়ান বাজার ও নাটোরের লালপুরে একই ভাবে আরও দুই ব্যক্তিকে হত্যা চেষ্টা হয়েছে কাছাকাছি সময়ে। এই দুটি ঘটনাতেও একই ধরনের মাইক্রোবাস ব্যবহার করা হয়েছে।

অপরদিকে, ৪ অক্টোবর রাজশাহীর হরিয়ান বাজারের ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী শাহীন আলমের দোকানের সামনে একটি নম্বরপ্লেটবিহীন মাইক্রোবাস থেকে নেমে দুই দুর্বৃত্ত দোকানের ভেতরে তাকে কুপিয়ে মৃত ভেবে ফেলে আসে। ঘটনাস্থল ত্যাগের সময় দুর্বৃত্তরা ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে চলে যায়। তবে ভাগ্যক্রমে শাহীন আলম বেঁচে যান। এই ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি এখনো।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে