সফল উদ্যোক্তা রাফার গল্প

প্রকাশিত: ১৩-০১-২০২৪, সময়: ১৬:১২ |
Share This

নিজস্ব প্রতিবেদক : একটি গল্প নিজের হবে, যে গল্পের প্রতিটা শব্দে থাকবে একজন সফল মানুষের কথা। তাইতো নিজের গল্প তৈরিতে উদ্যোগী হন চাঁপাইনবাবগঞ্জের অর্নাস পড়ুয়া উম্মে সাহিদা আকতার রাফা।

রাফা অল্প পুঁজি দিয়ে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করে আজ একজন সফল উদ্যোক্তা। গ্রামে বড় হওয়া রাফা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে হ্যান্ডপেইন্ট পাঞ্জাবী, শাড়ি , কুর্তি, কাঠের গহনাসহ বিভিন্ন রকমের পণ্য বিক্রি করে নিজের জীবন পরির্বতন করেছেন। রাফার তৈরি করা বিভিন্ন রংয়ের শাড়ি, পাঞ্জাবী এখন দেশ থেকে বিদেশে পাঠানো হয়ে থাকে।

করোনার সময় যখন পুরো পৃথিবী থমকে ছিলো, চারিদিকে মানুষ ঘরবন্দি ছিলো। ঠিক তখনই রাফার হঠাৎ ছোটবেলার ভালো লাগা রং তুলির প্রতি মনোযোগ বেড়ে যায়।

রাফার আগ্রহ দেখে মা তার শাড়িতে রঙ দিয়ে পেইন্ট করে দেওয়ার কথা বলেন। এরপর রাফা শখের বসেই আত্মীয়দের কয়েকটা শাড়ি, পাঞ্জাবীতে পেইন্টের কাজ করে দেন। সবাই যখন অনেক পছন্দ করে, তখন বন্ধুরা রাফাকে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম খোলার কথা বলে। এমনকি ঠিক করে দেয় পেজের নামও। বিভিন্ন রং নিয়ে কাজ করা হবে বলে পেজের নাম দেওয়া হয় ‘C0lorQ’। এরপর রাফার অনলাইন ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মে কাজের যাত্রা শুরু হয়।

উম্মে সাহিদা আকতার রাফা বলেন, আমার কাজের আগ্রহ দেখে মা আমাকে ৩০০০ টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা দিয়ে আমি আমার কাজের জন্য শাড়ি, পাঞ্জাবী, বিভিন্ন রং ও প্রয়োজনীয় জিনিস কিনি। লাল, নীল, সাদা ও বিভিন্ন রংয়ের শাড়ি ও পাঞ্জাবীতে বাহারি ফুলের ডিজাইন করে পেইন্ট করা শুরু করি।

নিজের মনের ভিতর যেমন রং ভালো লাগতো তা দিয়ে বিভিন্ন ফুলের ডিজাইন করতাম। এরপর সেইগুলো পেজে পোস্ট করা হলে ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাওয়া শুরু হয়। অল্প দিনেই ব্যাপক পরিচিত ছড়িয়ে পড়ে। দিন যত যায় অর্ডারের চাহিদা তত বেড়ে যায়। তখন চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনলাইনে নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। তাই আমি দ্রুত আমার কাজের জন্য সবার কাছে প্রিয় হয়ে উঠি।

এমন অনেক রাত গেছে ক্রেতাদের আশা পূরণ করতে সারারাত জেগে কাজ করতে হয়েছে। দিনশেষে তাদের খুশি করতে পেরে নিজেকে এখন সফল মনে করি।

এক সময় নিজের ভালো লাগার কিছু কিনার ইচ্ছা হলে অন্যের উপর আশা করে থাকতে হতো, কিন্তু এখন নিজের ইচ্ছা পূরণের সাথে সাথে পরিবারের মানুষদের জন্য ও কিছু করতে পারি। ভবিষ্যতে ‘C0l0rQ’ নিয়ে আরও বড় কিছু করার ইচ্ছা আছে।

বর্তমানে রাফা পড়াশোনা ও সংসারের কাজের পাশাপাশি এইসব কাজের সবটাই প্রায় নিজের হাতেই করে থাকেন। রাফা শাড়ির ডিজাইন ঠিক করা, সেলাই করা, পেইন্ট করা নিজেই সবটা একা হাতে করেন।

তবে রাফার কাজে প্যাকেজিং ও ডেলিভারিতে স্বামী সাহায্য করে থাকে। রাফা প্রথমে শাড়ি পাঞ্জাবী নিয়ে কাজ করলেও এখন বিভিন্ন কাঠের গহনা, খাদি পাঞ্জাবী, কুর্তি ইত্যাদি পণ্যে ও যুক্ত করেছেন। রাফার এইসব পণ্যে দেশের বিভিন্ন জনপ্রিয় তারকা ও ব্যবহার করেন।

এছাড়া বিদেশ থেকে ও রাফার তৈরি করা পণ্যের অনেক অর্ডার আসে। অল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করা ব্যবসায় রাফা আজ সফল উদ্যোক্তা ও সাবলম্বী নারী হতে পেরেছেন। রাফার এই উদ্যোগ নিজের সফলতার পাশাপাশি আরও নারীদের উদ্যোগী হতে সাহায্য করবে।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
উপরে