সারাদেশে হিট অ্যালার্ট

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৪; সময়: ১১:১৪ অপরাহ্ণ |
সারাদেশে হিট অ্যালার্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক: তীব্র গরমে সারাদেশের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষেরা। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম। তাপদাহের মাঝে খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। এমন পরিস্থিতিতে কোন সুখবর দেয়নি আবহাওয়া বিভাগ। বলেছে পুরো এপ্রিল জুড়েই সারাদেশে থাকবে তাপপ্রবাহ।

দেশজুড়ে চলমান তাপপ্রবাহ শিগগিরই কমছে না। আগামী অন্তত দু’সপ্তাহ তাপমাত্রা আরও বাড়বে জানিয়ে আবহাওয়া বিভাগ বলছে, পুরো এপ্রিল জুড়েই থাকবে তাপপ্রবাহ। মাঝেমধ্যে সামান্য বৃষ্টির দেখা মিললেও গরমের অস্বস্তি কমার সম্ভাবনা তাপপ্রবাহের তীব্রতা আরও বাড়ার আশঙ্কায় সারাদেশে জারি করা হয়েছে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার বার্তা দিয়েছে তারা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, জলীয়বাষ্প বেশি থাকার কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে। একই সঙ্গে সমুদ্রের লঘুচাপটি পশ্চিমবঙ্গ ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করার গরম প্রভাব দেখা যাচ্ছে ভূপৃষ্ঠে। এর আগে দেশে ১৫ থেকে ১৩ দিন পর্যন্ত লাগাতার তাপপ্রবাহ থাকার রেকর্ড থাকলেও এবার চলতি মাসেই ১৮ দিনই টানা তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী পাঁচ দিনেও আবহাওয়ায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

শুক্রবার নিয়মিত বুলেটিনে সকাল ৯টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টার বার্তায় আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, যশোর, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বজায় থাকতে পারে। এ ছাড়া, দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

এতে আরও বলা হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝাড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। অন্যত্র আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

টানা তিন দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বইছে চুয়াডাঙ্গায়। তাপদাহের কারণে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জেলায় হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। মাইকিং করে হিট অ্যালার্ট এবং করণীয় তাপদাহ থেকে রক্ষায় করণীয় কি সেই বিষয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। তীব্র তাপদাহের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। ফলে ঘরের মধ্যেও স্বস্তিতে থাকতে পারছেন জেলার বাসিন্দারা।

গত ১৬ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল চুয়াডাঙ্গায়, ১৭ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল চুয়াডাঙ্গা এবং সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে। তবে পরিবেশগত কারণে অনুভূত তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রির বেশি বলে জানাচ্ছে আবহাওয়ার সংক্রান্ত অ্যাপ আকুয়া ওয়েদার।

এদিকে, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শুক্রবার। আগেরদিন বৃহস্পতিবার ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বুধবার ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এ জেলায়।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জেষ্ঠ্য পর্যবেক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, “বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে যাওয়ায় রাজশাহী অঞ্চলে তাপমাত্রা বাড়ছে, যা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে।”

বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। এরপর ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে