জয়পুরহাটে জুয়ার টাকাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে আহত ২
নিজস্ব প্রতিবেদক, জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের ঐতিহ্যবাহী তেঘরবিশা মেলায় জুয়ার আসর কে কেন্দ্র করে দু-পক্ষের হামলায় ছুরিকাঘাতে যুবলীগের দুই কর্মী আহত হয়েছে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টায় উপজেলার মোহাম্মদাবাদ ইউনিয়নের আজাদ অটো রাইস মিলের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ২০ এপ্রিল রাতে জয়পুরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- জেলা যুবলীগের কর্মী শহরের আদর্শপাড়া এলাকার মোসলেম উদ্দিনের ছেলে খোরশেদ আলম মন্ডল ও একই এলাকার কাজেম উদ্দিনের ছেলে ফারুক হোসেন।
মামলার আসামী হলেন- জয়পুরহাট কলেজ শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ও শহরের আদর্শপাড়া এলাকার বাবুর ছেলে পিয়াস আহমেদ পৃথিবী (২৮), একই এলাকার রেজাউল করিমের ছেলে আল আমিন (২৫), ওসমান আলীর ছেলে রুহুল আমিন (২৪), হানিফের ছেলে হাসিব (২২), রফিকুল ইসলামের ছেলে রঞ্জু (২৮)। এই মামলায় অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫ জনকে আসামী করা হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, সনাতন ধর্মালম্বীদের শিবপূজা উপলক্ষে তেঘরবিশায় মেলা বসে। প্রতিবছর উপজেলা প্রশাসন দরপত্র আহবান করে মেলাটি ইজারা দেয়। এ বছরও দরপত্র আহবান করা হয়েছিল। তবে কেউ দরপত্রে অংশ নেয়নি। উপজেলা প্রশাসন মেলা থেকে খাস আদায় করে। মেলাটি গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়। মেলা শুরুর পর থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালী আ.লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা অশ্লীল নৃত্য ও জুয়ার আসর চালু করে। দুদিন পর অশ্লীল নৃত্য বন্ধ হলেও চলতে থাকে জুয়া। মেলায় পুলিশের পাহারাও ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনেই জুয়া চালিয়ে গেছেন প্রভাবশালীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, মেলায় জুয়া চলার সময় গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ছাত্রদলের পিয়াস নামের এক নেতা তার কিছু ছেলেপেলে নিয়ে মেলায় জুয়া বোর্ড হইতে টাকা দাবি করে এবং ভিডিও ধারনের চেষ্টা করে। এসময় জুয়া বোর্ডের পাশে অবস্থিত দোকানদার তাকে বাধা দিলে পিয়াস দোকানদারকে চড় থাপ্পড় মারেন এবং ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পরে খোরশেদ তাদের ডেকে নিয়ে শাসিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে মেলা থেকে বের করে দেন। এরপর রাতে বাড়ি ফেরার পথে খোরশেদ ও ফারুকের গতিরোধ করে ছুরিকাঘাত করার ঘটনার ঘটে।
মামলার বাদী মোসলেম উদ্দীন বলেন, আমার ছেলে খোরশেদ ও ভাতিজা ফারুককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে খোরশেদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বগুড়া মেডিকেলে রেফার্ড করেন। আর ফারুক হোসেন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছি।
জয়পুরহাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল জান্নাত শাহ্ বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর রুহুল আমিন নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।