৩ অডিট কর্তাকে খুশি করতে চাঁদা দিলেন রামেকের ৫৭ কর্মকর্তা

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৪; সময়: ১০:২২ অপরাহ্ণ |
৩ অডিট কর্তাকে খুশি করতে চাঁদা দিলেন রামেকের ৫৭ কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্য অডিট অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তাকে খুশি করতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৫৭ নার্সিং কর্মকর্তাকে চাঁদা দিতে হয়েছে। এ নার্সিং কর্মকর্তারা হাসপাতালের ৫৭টি ওয়ার্ডের ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। অডিটে আসা কর্মকর্তাদের খুশি রাখতে তাদের কাছ থেকে চাঁদা তুলেছেন হাসপাতালেরই তিন কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ওয়ার্ড ইনচার্জ জানান, মাথাপিছু ১ হাজার ২০০ টাকা করে চাঁদা দিয়েছেন তারা। রোববার স্বাস্থ্য অডিট অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তা হাসপাতালটিতে নিরীক্ষায় এসেছিলেন। মঙ্গলবার তারা ফিরে যান। আর তাদের কথা বলে শনি থেকে মঙ্গলবার চাঁদার টাকা তোলা হয়।

ইনচার্জরা জানান, হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক সুফিয়া খাতুন, নার্সিং সুপারভাইজার ময়েজ উদ্দিন এবং নার্সিং অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক কামরুন্নাহার পান্নার মাধ্যমে এ চাঁদা তুলেছেন। নার্সিং সুপারভাইজার ময়েজ উদ্দিন হাসপাতালের ওয়ার্ড ইনচার্জ ও নার্সদের ফোন করে চাঁদা দিতে বলছেন- এমন একাধিক অডিও রেকর্ড পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, রোববার তিনজন নিরীক্ষক হাসপাতালে আসার পরই সেবা তত্ত্বাবধায়ক সুফিয়া খাতুন ও নার্সিং সুপারভাইজার ময়েজ উদ্দিন চাঁদা তোলার ছক কষেন। তারা প্রতিটি ওয়ার্ডের ইনচার্জের কাছ থেকে টাকা তোলার জন্য নার্সিং অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক কামরুন্নাহার পান্নাকে নির্দেশনা দেন।

এ নিয়ে কামরুন্নাহার পান্না ওয়ার্ড ইনচার্জদের ডেকে সভা করেন। সেখানে তিনি মাথাপিছু ১ হাজার ২০০ টাকা করে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। কামরুন্নাহার পান্না বলেন, ‘এটা নিয়ে আমি কথা বলতে চাচ্ছি না।’

ইনচার্জরা জানান, অডিটররা মূলত হাসপাতালের হিসাব শাখার ধোলাই বিল, যাতায়াত বিল ও যন্ত্রপাতি মেরামত খরচের অডিট করেছেন। এ ব্যয়ের সঙ্গে ওয়ার্ড ইনচার্জদের ওষুধপত্রের হিসাবের কোনো সম্পর্ক নেই। তারপরও নিরীক্ষা দলকে দেখিয়ে ইনচার্জদের কাছ থেকেও চাঁদা তোলা হয়েছে। এ টাকা অডিটরদের দেওয়া হয়েছে নাকি এ তিন কর্মকর্তা ভাগবাঁটোয়ারা করে নিয়েছেন, তা তারা বুঝতে পারছেন না।

নার্সিং সুপারভাইজার ময়েজ উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিবছর অডিটের সময়ই এভাবে টাকা তোলা হয়।’

কথা বলার জন্য সেবা তত্ত্বাবধায়ক সুফিয়া খাতুনের মোবাইল ফোনে কয়েকদফা ফোন করা হলেও ধরেননি। ফোন ধরেননি সুফিয়া খাতুনের সহকারী জান্নাতুল ফেরদৌসও। তাই তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

স্বাস্থ্য অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা ও হিসাব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অডিটে গিয়ে আমরা কোনো টাকাপয়সা নিইনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেবে।’

হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম শামীম আহম্মদ বলেন, চাঁদা তোলার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। কারা এ কাজ করেছেন, তিনি তা তদন্ত করে দেখবেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে