পোরশায় লোডশেডিং ও তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৪; সময়: ২:২৬ অপরাহ্ণ |
পোরশায় লোডশেডিং ও তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, পোরশা : নওগাঁর পোরশায় ঘনঘন লোডশেডিং ও তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মরে যাচ্ছে মাঠের ফসল।

তীব্র লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি তীব্র তাপদাহে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা উপজেলার মানুষের। রোদের প্রখর তাপে বিপর্যস্ত জনজীবন। ফলে বিরুপ অবস্থা দেখা যাচ্ছে ফসলের মাঠে।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তীব্র তাপদাহে ফসলে পানি দিয়েও জমিতে পানি থাকছেনা। রোদ ও গরমে পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। আর তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে গভীর ও অগভীর নলকূপ থেকে ঠিকমত পানি উঠানো যাচ্ছেনা।

এছাড়াও পানির স্তর নেমে যাওয়ায় সেচের জন্য তুলনামূলক প্রয়োজনীয় পানি পাওয়া যাচ্ছেনা নলকূপগুলোতে।

এতে কৃষকদের চাষ করা বিভিন্ন ধরনের ফসল মরে যাচ্ছে। এর প্রকট প্রভাব পড়েছে উপজেলার তেঁতুলিয়া ও নিতপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।

সরেজমিনে নিতপুর ইউনিয়নের গানইর গ্রামে গিয়ে কৃষক মনিরুল ইসলাম বাদশা, এনামুল হক, জামাল উদ্দিন ও মোকছের আলীর সাথে কথা বললে তারা জানান, তীব্র তাপদাহ থেকে বোরো ধান রক্ষা করতে পানি প্রয়োজন কিন্তু তীব্র লোডশেডিং এর কারনে পানি ঠিকমত পাওয়া যাচ্ছেনা।

ফলে তাদের জমির ধান মরার উপক্রম হয়েছে। এসময় আনেকে পাকা ধান মাঠ থেকে উঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিলেও তা পাচ্ছেনা। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে তারা জানান।

তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের জালুয়া গ্রামের সবজী চাষী মতিউর রহমান জানান, তিনি দির্ঘ্যদিন থেকে বিভিন্ন জাতের সবজির চাষ করে আসছেন। কিন্তু এবারের তাপদাহে তার সবজি ফসল মরে যাচ্ছে।

এতে তার অর্ধলক্ষ টাকা ক্ষতি হবে বলে তিনি জানান। তবে এ বছরের মত তীব্র তাপদাহ তিনি কখনও দেখেননি বলেন। একই গ্রামের সবজি চাষী ছয়ফর জানান, তীব্র তাপদাহে সবজির বাগান কম ক্ষতি হতো যদি লোডশেডিং কম হতো।

ঘাটনগর ইউনিয়নের বাজিনাপুকুর গ্রামের কৃষক ইলিয়াস জানান, পানির অভাবে তার প্রায় ৬বিঘা জমির ধান মরে যাচ্ছে। এই মহুর্তে বৃষ্টি বা যেকোনভাবে পানি না পেলে তার ব্যাপক ক্ষতি হবে।

কিন্তু তাপদাহের সাথে লোডশেডিং হওয়ায় ফসলের বেশী ক্ষতি হচ্ছে। এতে কৃষকদের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে তিনি জানান।

অপরদিকে উপজেলার আম চাষিরা জানান, গভীর নলকূপ থেকে ঠিকমত পানি না পাওয়ায় পানির অভাবে সদ্য রোপনকৃত এবং দুই-তিন বছর বয়সের আমগাছ মরে যাচ্ছে। আর পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া ও লোডশেডিংয়ের জন্য দায়ী বলছেন তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, নওগাঁ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২, পোরশা জোনাল অফিসে কর্মরত এজিএম আনোয়ার হোসেন জানান, চাহিদার চেয়ে অর্ধেক বরাদ্দ পাওয়ায় তাদের লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।

তীব্র তাপদাহের কারণে এরকম হচ্ছে এবং বৃষ্টি হলেই এই সমস্যা থাকবেনা বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখার জন্য তারা তাদের উর্দ্ধতন কতৃপক্ষ ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সাথে কথা বলেছেন বলে তিনি জানান।

অপরদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৩৪৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তাপদাহে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কিছুটা ব্যাহত হতে পারে।

তবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের সব সময় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে আসলে কৃষকরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে এবং এতে লক্ষমাত্রা অর্জনেও তেমন প্রভাব ফেলবেনা।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে