তানোরে আলুক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২০; সময়: ৬:৪৪ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
তানোরে আলুক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর : রাজশাহীর তানোরে আলু’র পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এখন পর্যন্ত আলুগাছে কোনো ধরনের মড়ক লাগেনি। ফলে ভালো ফলন ও দাম ভালো পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা। তবে, প্রান্তিক আলু চাষীর সংখ্যা করেছে বেড়েছে প্রজেক্ট আকারে আলু চাষ।

গত বছরের লোকসান পুষিয়ে নিতে চলতি মৌসুমে আলু রোপণ করেছেন ব্যবসায়ী ও চাষিরা। তবে, দাম নিয়ে শঙ্কা থাকলেও আলুর চাষ কম হওয়ায় ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন চাষীরা।

সরেজমিন তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আলুর মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা তাদের জমিতে কেউ সেচ দিচ্ছেন কেউ ট্রপ ড্রেসিং করছেন কেউ সার ও কীটনাশক স্প্রে করছেন। আলুর মাঠে মাঠে কৃষকরা জমির আলুর পরিচর্যায় ব্যাস্থ্য সময় পার করছেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এমদাদুল ইসলাম বলেন, গত মৌসুমের প্রথম অবস্থায় আলুতে চাষি ও কৃষক ভালো দাম পেয়েছিলেন। কিন্তু শেষে কৃষকের কিছুটা লোকসান হয়েছিলা। ফলে চলতি মৌসুমে উপজেলায় আলুচাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এবছর ১৩ হাজার ৬শ’ ৯৬ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪ হাজার ২শ হেক্টর। গত মৌসুমের চেয়ে আলু চাষের জমি কমেছে ১ হাজার ৪৯৬ হেক্টর।

তানোর পৌর এলাকার ধানতৈড় গ্রামের আলু চাষী আশরাফুল আলম বলেন, স্থানীয় কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিয়মিত আলুক্ষেত দেখতে আসছেন। যথাযথ পরামর্শ দিচ্ছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবং গাছ রোগবালাই মুক্ত থাকলে আলুর এবার সর্বোচ্চ ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এবার ১০ বিঘা জমিতে ডায়মন্ড ও কার্ডিনাল জাতের আলু লাগিয়েছেন।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আলুতে কোন রকম রোগ দেখা দেয়নি। যথাসময়ে মাঠ থেকে আলু ঘরে তুলতে পারলে এবং দাম ভালো পেলে তিনি লাভবান হবেন বলে আশা করেন। তিনি আরো বলেন, আলুক্ষেতে কৃষকের ব্যাস্থ্যতা এখন মাঠজুড়ে। আলু ক্ষেতে সেচ দেওয়া, সারিতে মাটি তোলা, রাসায়নিক সার প্রয়োগ এবং কীটনাশক স্প্রে করছেন চাষিরা।

তবে সত্যিকার অর্থে লোকসান গুনতে গুনতে প্রান্তিক চাষীর সংখ্যা কমেছে আলু চাষ এখন ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। এবার অনেক প্রান্তিক চাষি ব্যবসায়ীদের কাছেই জমি লিজ দিয়েছেন। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরাও কম দামে লিজ নিচ্ছে এসব জমি। প্রান্তিক চাষিরা আলুচাষ থেকে ফিরে আসায় এবছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শমসের আলী বলেন, রবি মৌসুমের অর্থকরি ফসল হিসেবে স্থান করে নিয়েছে আলু। উপজেলায় কমবেশি সব এলাকায় আলুর চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে অন্যতম এলাকা হচ্ছে তানোর পৌর এলাকা, পাঁচন্দর, সরণজাই ও তালন্দ ইউনিয়ন। এসব এলাকায় বিপুল পরিমাণ জমিতে আলু চাষ হয়েছে, এখন চলছে আলুর পরিচর্যা।

তিনি আরও বলেন, আলু চাষে প্রচুর টাকার প্রয়োজন হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পোকামাকড়সহ কাণ্ডপচা ও নাভিধসা মোড়কে ব্যাপক ক্ষতি হয়। আলুচাষ একটি ঝুঁকিপূর্ণ ফসল। তবে, এবারে আলু চাষে আবহাওয়া অনুকূল মনে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের মড়ক না থাকায় ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি।

এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে আলুর ক্ষেত সারাক্ষণ দেখভাল করছেন। চলতি বছরে প্রান্তিক চাষি কমেছে। বেড়েছে প্রকল্প আকারে আলুচাষ। তবে, আবহাওয়া ভালো থাকলে ফলন ভালো হবে বলে আশা করছেন তিনি।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে