রাজশাহীতে বাড়ছে চর্ম রোগী

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২০; সময়: ৮:২৯ অপরাহ্ণ |

নিজস্ব প্রতিবেদক : চর্ম বা ত্বকের সমস্যা এখন সব শ্রেণির মানুষের জন্য একটি সাধারণ সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। শীত কিংবা গরম সব ঋতুতেই এই সমস্যায় পড়ছে ছোট-বড় সবাই। আর অতীতের চেয়ে এই রোগের সংখ্যাও বাড়ছে।

রাজশাহীতে এখন ১৫ থেকে ১৬ ধরনের চর্ম রোগের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি গুরুতর রোগিদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। এর মাঝে শীতকালে ৫ শতাধিক ও গরমকালে ৬ শতাধিক রোগি বহির্বিভাগে এসে চিকিৎসা নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশগত সমস্যা, ব্যক্তিগত অপরিচ্ছন্নতা, বয়সগত সমস্যা ও অপরিষ্কারের কারণে চর্ম রোগে সংক্রমিত হচ্ছে মানুষ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে রামেক হাসপাতালে দুই লক্ষাধিক মানুষ চর্ম ও যৌন রোগে আক্রান্ত হয়ে সেবা নিয়েছে। যার মাঝে গরম কালে প্রতি মাসে চিকিৎসা নেয় ১৫ হাজার ও শীতকালে ১২ হাজার রোগি সেবা নিচ্ছে। এছাড়া প্রতিদিন নগরীর প্রাইভেট চেম্বারে সেবা নিচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ জন।

গত এক বছরে নগরীতে প্রায় ৬০ হাজার রোগি প্রাইভেট চেম্বারে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মাঝে শীতকালে ৮ থেকে ১০ ধরনের সমস্যা এবং গরম কালে ১৫ থেকে ১৬ ধরনের সমস্যা নিয়ে রোগিরা চিকিৎসকদের কাছে যাচ্ছে। এর মধ্যে বড় সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালের ডারমাটোলজি বিভাগে ভর্তি হচ্ছে ৬ থেকে ৭ জন রোগি। আক্রান্ত রোগিদের মাঝে সোরিয়াসিস, এটপিক, একজিমা, চিল, ব্লেইজ, খোসপাঁচড়া, দাউদ, ব্রণসহ ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাকজনিক রোগ নিয়ে চিকিৎসকদের দেখাচ্ছে রোগীরা। আর ভর্তি রোগিরা ড্রাগ রিয়েকশন, সোরিয়াসিস, ইগ্রেথ্রো গরম রোগী।

দিনে দিনে এই সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রাম থেকে শহর সব পরিবেশের মানুষকে নিজেদের ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে বিশেষভাবে সজাগ থাকতে বলছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের মতে, যারা অপরিচ্ছন্ন ও ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় বসবাস করে তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা অনেক বেশি লক্ষ করা গেছে। শিশুদের মধ্যেও চর্মরোগের সমস্যায় অভিভাবকদের নিজের সন্তানদের প্রতি গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।

বর্তমানে বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন ৮ জন। তবে চারজন নিয়মিত রোগী দেখছেন আর সিনিয়র চারজন প্রতি সপ্তাহে দিন ভাগ করে রোগি দেখছেন। তাই সঠিক সেবা দেয়ায় চিকিৎসক সংকট দেখা দিয়েছে। বর্তমানে একজন বিভাগীয় প্রধান, সহযোগী অধ্যাপক একজন, সহকারী অধ্যাপক ২ জন এবং মেডিকেল অফিসার রয়েছে চারজন। এর মাঝে সিংহ ভাগ রোগি দেখছেন চারজন মেডিকেল অফিসার। সংকট রয়েছে অফিস সহকারীর পদেও। তাই রোগি দেখতে নিয়ম শৃঙ্খলায় চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে এই অবস্থায় জনবল ও ওষুধ অপ্রতুল থাকলেও চিকিৎসকরা সর্বক্ষণ নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর নগরীর বিভিন্ন ব্যক্তিগত চেম্বারে সব মিলে চিকিৎসক আছে ১৪ জন।

মেডিকেল অফিসার ডা. ইবরাহীম মো. শরীফ জানান, এখন জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। চর্মরোগ সাধারণ একটি ছত্রাকজনিত রোগ। দিনের বেলার চেয়ে রাতের বেলায় চর্ম রোগের চুলকানির প্রবণতা বেশি বৃদ্ধি পায়। ছত্রাকের সংক্রমণে চর্মরোগে আক্রান্ত হয় মানুষ।

বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মকছেদুর রহমান জানান, ‘বর্তমানে ছেলেদের চেয়ে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে