প্রথম শারদীয় দুর্গোৎসব রাজশাহীর তাহেরপুরে (ভিডিওসহ)
নিজস্ব প্রতিবেদক : একসময় দুর্গোৎসব ছিলো পারিবারিক। ৫৪০ বছর আগে রাজশাহীর তাহেরপুরের রাজা কংস নারায়ন রায় প্রথম এই পূজাকে সার্বজনীন করেন। নিয়ে যান পারিবারিক গন্ডির বাইরে। কালের টানে বাংলায় দূর্গাপূজা শারদীয় উৎসবে রূপ পায়।
অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তির লক্ষ্যে রাজা কংস নারায়ন রায় ১৪৮০ সালে রাজশাহীর তাহেরপুরে শ্রী শ্রী দুর্গামাতা মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সেই মন্দিরেই সার্বজনীন শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রবর্তন করেন তিনি। এর পর থেকেই দেবীর অকালবোধন পারিবারিক গন্ডির বাইরে আসে, উৎসবে পরিণত হয়।
তাহেরপুর রাজবংশ বাংলাদেশের প্রাচীন রাজবংশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে জায়গাটি রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার একটি পৌরসভা। এই রাজবংশের আদিপুরুষ ছিলেন মৌনভট্ট। কংস নারায়ন রায় ছিলেন সেই বংশের একজন সামন্ত রাজা।
রাজশাহীর তাহেরপুর ডিগ্রী কলেজের ইতিহাস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুকুমার চন্দ্র সাহা জানান, রাজপ্রথা অবসানের পর প্রায় ৬০ বছর ওই মন্দিরে দুর্গাপূজা বন্ধ ছিল। ১৯৬৭ সালে ওই মন্দিরসহ রাজবাড়িটি স্থানীয় কলেজের অধীনে চলে যায়। ২০১২ সালে কলেজ থেকে আলাদা হয় মন্দিরটি। প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর এই মন্দিরে আবার শুরু হয় শারদোৎসব। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় অষ্টধাতুর প্রতিমা।
শ্রী শ্রী ঐতিহাসিক দুর্গামাতা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক চিরঞ্জীব রায় বলেন, ত্রেতাযুগে রামচন্দ্রের অকাল বোধন এখন শরতের প্রকৃতিতে উৎসবের রঙ আর ভক্তির রস মেখে ফিরে আসে প্রতি বছর। এটা যেহেতু ঐতিহ্যবাহি মন্দির। তাই প্রতিবছর পুজার সময় এখানে দেশ বিদেশ থেকে অনেকেই আসে। তবে এবার করোনা পরিস্থিতিতে উৎসব আয়োজন সীমিতি।
মন্দিরটিকে প্রত্নসম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি স্থানীয় বাসিন্দাসহ জনপ্রতিনিধিদের। মন্দির কমিটির কোষাধ্যক্ষ শীতলচন্দ্র সাহা বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি যেনো এই মন্দিরটিকে জাতীয়করণ করা হয়।’
তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকার যদি আরও বরাদ্দ দেয় তবে আগামীতে এটাকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করবো। এ নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে প্রকল্প দেয়া হবে বলে জানান তিনি।