বাগমারায় কমিউনিটি ক্লিনিকে নারী রোগীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কোয়ালীপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের একজন ‘কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারে’র (সিএইচসিপি) বিরুদ্ধে নারী রোগীদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নজরে বিষয়টি আসার পর সোমবার থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা ওই স্বাস্থ্যকর্মীর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তবে অভিযুক্ত স্বাস্থ্য কর্মী নিজেকে ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ থেকে জানা যায়, নরদাশ ইউনিয়নের কোয়ারীপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার’ আসাদুল ইসলাম নারী রোগীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে থাকেন। তিনি অনেক নারীকে কুপ্রস্তাবও দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার কমিউনিটি ক্লিনিকের ভেতরে একজন নারী রোগীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। ওই রোগীকে ক্লিনিকের ভেতরেই স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে তাঁর কাছ থেকে ঘটনাটি জানতে পারেন। পরে লোকজনেরা ওই নারী রোগীকে ক্লিনিকের ভেতর থেকে উদ্ধার করে।
ঘটনাটি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানার পর তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে। তারা সরেজমিন ঘটনার অনুসন্ধান করেন। দুপুরে দলটি আকস্মিক এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয়রা ওই দিনের ঘটনা বর্ণনাসহ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার আসাদুল ইসলামের নারী রোগীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ বিষয়ে অভিযোগ দেন। এসময় ভুক্তভোগী কয়েকজন নারীও ছিলেন। যাঁরা চিকিৎসা নিতে গিয়ে অশোভন আচরণের শিকার হয়েছিলেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আসাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী রোগীদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অনেক নারী লজ্জায় বিষয়টি গোপন রাখেন। পাশের গ্রামে তাঁর বাড়ি হওয়াতে স্থানীয়ভাবে তিনি প্রভাবশালী বলেও অভিযোগ করা হয়। এর আগেও তাঁকে স্থানীয়রা ক্লিনিক পরিচালনার স্থানীয় কমিটির মাধ্যমে সতর্কও করে দিয়েছিলেন। তাঁরা আসাদুল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
কোয়ালীপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সভাপতি সংরক্ষিত নারী সদস্য রারেয়া খাতুন বলেন, তিনিও ঘটনাটি শুনেছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতিনিধিদলের কাছে এলাকার লোকজন নারী রোগীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সোমবার আসাদুল ইসলামে সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার তিনি। তবে কারা এই পক্ষ এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলতে পারেননি।
ঘটনার তদন্তে থাকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা কোন মন্তব্য করতে চাননি। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, তিনি বিষয়টি জানার পরই তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলেন। দলটি সরেজমিনে তদন্ত করেছে। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে গত বৃহস্পতিবার যে নারীকে নিয়ে ঘটনা ওই নারীর সঙ্গে প্রোভাইডারের আগ থেকে জানাশোনা ছিল। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ চাওয়া হয়েছে। পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।