খোলাচিঠি

প্রকাশিত: ২৭-০১-২০২৩, সময়: ১৮:০০ |

বুধবার, জানুয়ারি, ২৫, ২০২৩

প্রিয় অনিমেষ, দিন কয়েক আমি আপনাকে লিখিনি। তার কারণ আমি সবার আগে চেয়েছিলাম আপনাকে নিয়ে ভাবতে। আমার মতো একজনের পক্ষে আপনার চিন্তা মাথায় রাখা বেখাপ্পা।

আগে কখনো বলিনি, আসলে আমার মনে হয়, আমার মত মেয়ের কথাবার্তা কোনো আগ্রহ জাগাবে না আপনার মনে। তা হোক, কি আসে যায় তাতে?

আমি চাই বলতে। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা হলো, আমার বুকের গভীরে যা কিছু চাপা পড়ে রয়েছে আমি চাই সেসব বের করে আনতে।

যে দিনগুলোতে আমার মন ভার হয়ে থাকে, সে রকম একটা দিনে গালে হাত দিয়ে আমি বসে থাকবো আপনার সামনে। এমন একটা নেতিয়ে পড়া ভাব যে, চুপচাপ বসে থাকবো নাকি লুকিয়ে রাখা সমস্ত কিছু বলে ফেলবো সেটা ঠিক করে উঠতে পারছি না।

হ্যাঁ, এটা ঠিক কাগজে কলমে যেটা অনায়াসে বলা যায়, সামনাসামনি সেটা হয়তো বলা কঠিন হয়ে উঠে। কাজগের আছে সহ্য গুন। এতটা সহ্য গুন হয়তো মানুষ জাতির নেই।

এবার আদত ব্যাপারটাতে আসা যাক। কেন আমি এই চিঠি লেখাটা শুরু করছি তার কারণটা হলো আমার তেমন সত্যিকার কোনো বন্ধু নেই।

কেননা এই মেয়েটি দুনিয়ায় নিজেকে একেবারে একা বলে মনে করে। এটা কারো বিশ্বাস হবে না। হবার কথাও নয়। আমার চেনা অনেক জন আছে যাদের বন্ধু বলা যেতে পারে৷

আমার ছেলে বন্ধু আছে অনেক। যারা আমাকে এক ঝলক দেখবে বলে উদগ্রীব হয়ে থাকে।

আমাদের আড্ডাগুলো হয় ভীষণ প্রাণবন্ত। তবে আমার সব বন্ধুরই সেই এক ব্যাপার, কেবল হাসি তামাশা আর ঠাট্টা-ইয়ার্কি, তার বেশি কিছু নয়।

আমি কেমন যেন কিছুতেই সেরকম ঘনিষ্ঠ হতে পারি না আসল সমস্যা সেইখানে। হতে পারে আমার আত্মবিশ্বাসের অভাব, কিন্তু সে যাই হোক, ঘটনাটা অস্বীকার করা যায় না এবং এ নিয়ে আমার কিছু করার আছে বলে মনে হয় না।

সত্যি বলতে যে বন্ধুটির আশায় এতদিন আমি পথ চেয়ে বসেছিলাম সেটা আপনি। আমি অধিকাংশ মানুষের মত অকপটে বলে দিতে পারি না কিছুই। কোনো কিছু সাজাতেও চাই না।

আমার লেখা চিঠিগুলো যদি হঠাৎ দুম করে শুরু করে দিই তাহলে কি বলছি বা বলতে চাইছি কেউ বুঝবে না। আপনি তার উল্টো হতে পারেন।

না বুঝেও বুঝে উঠতে পারেন অনেক কিছু। তাই আরম্ভে কিছুটা অনিচ্ছার সঙ্গে মাত্র কয়েকটা কলমের আঁচড়ে আমার জীবনের ছবি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করলাম মাত্র।

আজও কীভাবে আমার হৃদয় মন জুড়ে আছেন তা আমি জানি না। আমি ভালোবাসি সে কথা আপনি কখনো বুঝবেন না। বুঝে উঠতে পারবেন না।

‘আপনার মেঘবতী’

লেখা:
সবনাজ মোস্তারী স্মৃতি
শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী

 

উপরে