সাদার মায়ায় ঘেরা কাঠগোলাপ

প্রকাশিত: ০৬-০৭-২০২৩, সময়: ১২:৩৬ |

ইন্দ্রাণী সান্যাল : কাঠগোলাপ। অনন্য সুন্দর একটি ফুল। এই ফুলের রূপ এতটাই মোহনীয়, যে কেউ যদি কাঠগোলাপ দেখে না ছুঁয়ে পারবে না। ধবধবে সাদা রঙের পাপড়িগুলোর মাঝে গাঢ় হলুদ রঙের ছোঁয়া লাগা এই ফুলকে সবাই পছন্দ করে।

কেউ কেউ মনে করে কাঠগোলাপের মতো এত সুন্দর ফুল আর পৃথিবীতে হয় না। এক পলক দেখাতেই এই ফুলের প্রেমে পড়ে যাবে যে কেউ। কাঠগোলাপের পাপড়িগুলো কতই না মনোরম।

বৃষ্টিভেজা কাঠগোলাপ দেখতে সে কী অপরূপ সুন্দর! বলে শেষ করা যাবে না। সাদা, গোলাপি, হলুুদ কত রঙের, কত জাতের কাঠগোলাপই না আছে। তবে কাঠগোলাপ যে জাতেরই হোক না কেন, মানুষের মন কাড়বেই।

কাঠগোলাপের নামটি কেমন যেন অদ্ভূত। তেমনি কাঠগোলাপও অদ্ভূত রকমের সুন্দর। এ যাবৎ মানুষ যত ফুলকে নিয়ে মেতেছে তার মধ্যে কাঠগোলাপ সবার শীর্ষে।

খোঁপায় কাঠগোলাপ গুঁজে ছবি তুলতে অনেকেই পছন্দ করে। আবার কেউ কেউ সূর্যাস্তের সময় হাতে কাঠগোলাপ রেখে ছবি তুলতে পছন্দ করে। যেভাবেই ছবি তোলা হোক না কেন, কাঠগোলাপের রূপ-সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করবেই।

কাঠগোলাপ গাছের ডালে ডালে যখন থোকা থোকা ফুল ফুটে থাকে, সেই থোকা থোকা ফুলগুলো দেখতে কতই না সুন্দর লাগে! কাঠগোলাপের মোহনীয় রূপে মুগ্ধ হয়নি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিশেষ করে, এখনকার মেয়েরা কাঠগোলাপকে অনেক বেশি পছন্দ করে।

কাঠ গোলাপ নামের ফুলটির সাথে আমরা সবাই কম-বেশি পরিচিত। গোলাপের মত নয়, আবার কাঠের সঙ্গেও তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে ফুলটির নাম কাঠ গোলাপ দেওয়া হয়েছে।

তবে গুলাচি, কাঠচাম্পা, গোলকচাঁপা, গৌরচাম্পা, গুলঞ্চ নামেও পরিচিত। এশিয়ার নানা দেশে শোভাবর্ধনকারী উদ্ভিদ হিসেবে আগমন ঘটেছে ফুলটির। মূলত মেক্সিকো, দক্ষিণ আমেরিকা, ক্যারিবীয় অঞ্চল, ভেনিজুয়েলা ও দক্ষিণ ভারতীয় অঞ্চলের স্থানীয় ফুল।

আমেরিকাতে প্লুমেরিয়া, দক্ষিণ চীনে এগ ফ্লাওয়ার, ভেনিজুয়েলাতে অ্যামপোলা নামে সবাই ডাকে। সারা বছর ফুল ফোটে কাঠগোলাপ গাছে। চমৎকার সুগন্ধিযুক্ত ফুলের গুচ্ছ একরাশ প্রশান্তি নিয়ে আসবে মনে।

কাঠগোলাপের সাদার মায়া যে কারো মনে ভালোবাসার সঞ্চার করে। দুধের মতো সাদা পাপড়ি আর জাতভেদে ফুলের ওপর হলুদ দাগ, আবার কোনো ফুলের ওপর লালচে গোলাপি রঙের দাগ দেখা যায়। ফুলটির শুভ্র পাপড়ির কেন্দ্রের ওপর এই রং বিন্যাস যে কোনো ফুলপ্রেমিককে সহজেই মুগ্ধ করে।

কাঠগোলাপ গাছ ৮-১০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। দীর্ঘ ছাল আবৃত ও ঘন বৃত্তাকার শাখাপ্রশাখায় বিস্তৃত। বাকল মোটা ও পুরু। গাছের ডালে সাদা বিষাক্ত রস আছে।

সারাবছর ফুল ফুটলেও গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শরতে বেশি ফুলের দেখা মেলে। ফুলের ব্যাস দুই ইঞ্চির মতো । পাঁচটি পাপড়ি থাকে। ফুলটির সুগন্ধি সুঘ্রাণ রাতে বেশি ছড়ায়।

জাতভেদে কাঠগোলাপ গাছ ছোট বড় হতে পারে। শুধু সৌর্ন্দযের দিক থেকে নয়। এই গাছ থেকে সুগন্ধি, তেল, লোশন এবং মোম বানানো হয়। নারকেল তেলের সঙ্গে এর কষের মিশ্রণ চর্মরোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে।

উপরে