অ্যাসিস্ট্যান্ট-নার্সরা ‘ডাক্তার’ হলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধসে পড়বে,
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ডাক্তার পদবির অপব্যবহার বন্ধ চায় দেশের চিকিৎসকদের অন্যতম জাতীয় সংগঠন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)। সেইসঙ্গে হাইকোর্টে করা ডাক্তার পদবি ব্যবহার সংক্রান্ত রিটের নিষ্পত্তি চেয়েছে সংগঠনটি। তাদের দাবি, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, নার্স যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, ফিজিওথেরাপিস্ট যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার তাহলে তো পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধসে পড়বে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) এনডিএফের সভাপতি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এনডিএফ অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে বেশ কিছু স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য নামের পূর্বে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করছে এবং এই লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে তারা প্রতারণামূলকভাবে জনগণের চিকিৎসা লাভের রাষ্ট্রীয় এবং সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারকে প্রত্যাখ্যান করছে, তাদের শারীরিক, মানসিক, আর্থিক এবং সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’
আরও বলা হয়, ‘স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য পৃথিবীজুড়ে চিকিৎসকদের চিকিৎসা কর্মে সহায়তা করার জন্য অ্যালাইড হেলথ প্রফেশন রয়েছে, যেখানে নার্স, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট, মিডওয়াইফারিসহ নির্দিষ্ট কিছু জনশক্তি রয়েছে, যারা নির্দিষ্ট কর্ম বাস্তবায়ন করে থাকেন। প্রত্যেকের উচিত তার নিজস্ব অবস্থানের স্বকীয়তা বজায় রেখে নির্ধারিত কাজ বাস্তবায়ন করা। বিএমডিসি আইন ২০১০ এবং বিশেষ করে ধারা ২৯ লঙ্ঘন করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, নার্স যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, ফিজিওথেরাপিস্ট যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার তাহলে তো পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধসে পড়বে।’
সংগঠনটি জানায়, ‘এই সব অসৎ তৎপরতার মধ্যে অন্যতম ২০১৩ সালে হাইকোর্টে মামলা (রিট নং ২৭৩০/২০১৩) করে তা নিষ্পত্তি না করে এই পর্যন্ত ৬৮ কোন শুনানি না করেই পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ৫ নভেম্বর ৬৯তম বার এসে রিটটির শুনানি হয় কিন্তু শুনানি অসমাপ্ত রেখে তা আবারো পেছানো হয়। এনডিএফ মনে করে এভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়কে বারবার পেছানোর মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষকে সঠিক স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির মৌলিক ও রাষ্ট্রীয় অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’
এতে বলা হয়, ‘ছাত্র জনতার ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ যখন রাষ্ট্রের সব সেক্টরকে নিয়মতান্ত্রিক আর সুশৃঙ্খল করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে, ঠিক এই সময়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চরম অব্যবস্থাপনার অন্যতম কারণ এই অচিকিৎসকদের চিকিৎসক হিসেবে চিকিৎসা দেওয়ার বৈধতা দেওয়া এই দেশে কখনোই কাম্য নয়।’
‘অনতিবিলম্বে এ ধরনের বিদ্যমান আইন ও জনস্বাস্থ্য বিরোধী, মানুষের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতে বাধাদানকারী রিটের নিষ্পত্তি এবং এ সংক্রান্ত সব অপতৎপরতা বন্ধকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের নিকট উদাত্ত আহ্বান করা হচ্ছে’, বলা হয় সংগঠনটির বিবৃতিতে।