ইউএনও ওয়াহিদার উন্নতি ‘মিরাকল’, বাবার অবস্থা এখনো সন্তোষজনক নয়: ডা. বদরুল হক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০; সময়: ১২:৩৮ অপরাহ্ণ |
ইউএনও ওয়াহিদার উন্নতি ‘মিরাকল’, বাবার অবস্থা এখনো সন্তোষজনক নয়: ডা. বদরুল হক

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার উন্নতিকে মিরাকল বলতে হবে। আজ সোমবার তিনি তার ডান হাত মাথার উপরে তুলতে পারছেন। তবে, তার বাবার অবস্থা এখনো সন্তোষজনক নয়।

আজ সকালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স ও হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল হক তার হাসপাতাল রুমে বসে বিষয়টি জানান।

অধ্যাপক ডা. বদরুল হক বলেন, ‘আজকে তিনি ডান হাত মাথার উপর পর্যন্ত উঠাতে পারছেন। এত অল্প সময়ের মধ্যে তার শারীরিক অবস্থার যে উন্নতি হয়েছে, এটা একটা বিস্ময়কর ঘটনা। সাধারণত এটা ঘটে না। তার ক্ষেত্রে এমনটা হয়েছে। এটা তার সুস্থ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে খুবই ভালো সাইন। তবে, তার পা এখনো স্বাভাবিক হয়নি, প্যারালাইজড অবস্থাতেই আছে। কিন্তু, পায়েও তিনি অনুভূতি পাচ্ছেন। এটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে হয়তো পা স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। যেহেতু মাথা খুব সেন্সিটিভ, আর সেখানেই তিনি গুরুতর আঘাত পেয়েছেন, সেক্ষেত্রে রোগীরা সাধারণত এত দ্রুত রিকভার করে না। কিন্তু, তিনি করতে পারছেন। এটা খুবই ইতিবাচক একটা দিক।’

‘ওয়াহিদার ওপর হামলার ঘটনাটা ঘটেছে রাত ৩টার দিকে। আর আমরা তার অপারেশন করেছি পরের দিন রাত ৯টায়। কিন্তু, পরের দিন সকালেই যদি রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে তার অপারেশন করানো যেত, তাহলে আরও দ্রুত তার অবস্থার উন্নতি হতো। এখানে বিষয় হচ্ছে, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার অপারেশন করার মতো যথেষ্ট অভিজ্ঞ ও মানসম্পন্ন চিকিৎসক ছিলেন। কিন্তু, অপারেশন পরবর্তীতে যা যা দরকার, সেসব সুযোগ-সুবিধার ঘাটতির কারণে সেখানে তার অপারেশন করা যায়নি। আমাদের দেশে এই জায়গাগুলোতে আরও উন্নত করা দরকার। ঢাকা পর্যন্ত আনতে যে পরিমাণ সময় লাগে, এতে অনেক সময় সংকটাপন্ন রোগীদের অনেক সমস্যা হয়। যদিও ওয়াহিদার ক্ষেত্রে খুব বড় কোনো সমস্যা হয়নি। তবে, যদি রংপুরেই তার অপারেশন করা যেত, তাহলে হয়তো পরিস্থিতি এত জটিল হতো না’, বলেন তিনি।

ওই হামলায় আহত হয়ে বর্তমানে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখও (৬৫)। তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে অধ্যাপক ডা. বদরুল হক বলেন, ‘তার দুই পা অবশ হয়ে আছে। যেহেতু তার বয়স বেশি, সে কারণেই তার সমস্যা হচ্ছে। তার আঘাতটা মূলত লেগেছে ঘাড়ের পেছনে স্পাইনাল কর্ডে। এ কারণেই এখনো তার শারীরিক অবস্থা বেশ জটিল মনে হচ্ছে। তার চিকিৎসায় আজ সকালে ১২ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড বসে আলোচনা করেছি। মেডিকেল বোর্ড তার এমআরআই করাসহ অন্যান্য চিকিৎসার বিষয়ে আলোচনা করেছে। ইতোমধ্যে তার এমআরআই করানো হয়েছে। এখনো রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। তারও অপারেশনের দরকার হতে পারে। তবে, আমরা তাড়াহুড়ো করছি না। সবকিছু দেখে বিবেচনা করে তারপর তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

‘তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। এমনিতেই আমরা সব রোগীকে গুরুত্ব দিয়ে দেখি। আর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে আমাদের আলাদা গুরুত্ব থাকে। যেটা তার ক্ষেত্রেও আছে’, যোগ করেন অধ্যাপক ডা. বদরুল হক।

উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলা হয়। পরদিন সকালে তাদের প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় নেওয়া এনে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর ওমর আলী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে গত ১২ সেপ্টেম্বর তাকেও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স ও হাসপাতালে আনা হয়েছে।

  • 67
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে