মহাদেবপুরে মাঠে মাঠে সুবাস ছড়াচ্ছে চিনি আতব ধান

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২০; সময়: ৬:৩১ অপরাহ্ণ |
মহাদেবপুরে মাঠে মাঠে সুবাস ছড়াচ্ছে চিনি আতব ধান

আইনুল ইসলাম, মহাদেবপুর : বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুরে মাঠে মাঠে এখন সুবাস ছড়াচ্ছে চিনি আতব ধান। সে সাথে রঙিন হয়ে উঠছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। এবার এ অঞ্চলের কৃষকের মুখে হাসি ফোটাবে চিনি আতব ধান। চলতি মৌসুমে সুগন্ধী চিনি আতব ধানের চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।

আবহাওয়া অনুকুল ও পোকার আক্রমণ কম থাকায় চলতি মৌসুমে ক্ষেতে চিনি আতবের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। চিনি আতবের চাহিদা থাকায় বাজারে দামও ভাল।

আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হলেও চিনি আতব কৃষকের ঘরে উঠতে আরো কিছু দিন সময় লাগবে। সময় লাগলেও আতবেই স্বপ্ন বুনছে কৃষকেরা।

কৃষকেরা জানান, কযেক বছরে বরেন্দ্র অঞ্চলে আতব চাষ করে পথে বসেছিল কৃষকেরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর পোকার আক্রমনের কারণে ঘরে ধান তুলতে পারেনি কেউ। কিন্ত গত বছর থেকে আবার আতব চাষে ঝুঁকেছেন কৃষকেরা। কৃষকেরা জানান, অন্য মোটা ধানের তুলনায় চিনি আতব ধানের দাম বেশি পাওয়ায় এবং বাজারে চিনি আতবের চাহিদা বেশি থাকায় অনেকে এবার মোটা ধানের পাশাপাশি আতব চাষ করেছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে মোট ১১ হাজার হেক্টর জমিতে চিনি আতপ ধান চাষ হয়েছে। উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের পূর্ব গোসাইপুর গ্রামের মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘বীজ তলা থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত বিঘা প্রতি খরচ হবে ৫-৬ হাজার টাকা। এবার আশা করছি ধানের ভাল ফলন পাওয়া যাবে, বিঘা প্রতি প্রায় ১৫ থেকে ১৬ মণ পর্যন্ত। এতে বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতি মণ বিক্রি হবে দেড় হাজার থেকে ১৬শ টাকা। হিসাব অনুযায়ী বিঘা প্রতি প্রায় লাভ হবে প্রায় ১৫ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, নতুন ধানের গন্ধে ভরে উঠবে মন। উপজেলার সদর ইউনিয়নের দাউল বারবাকপুর গ্রামের কৃষক ইউনুসার রহমান জানান, ধান বিক্রি করে কিনে দেয়া হবে ছেলে মেয়ের নতুন জামা, জুতা, বই, খাতা, কলম। এছাড়াও নতুন ধান পেয়ে শীতের পিঠা উৎসবে মেতে উঠবে গ্রামের কৃষক। তাদের মতো উপজেলার অনেক কৃষক এবার চলতি মৌসুমে লাভের আশা করছেন। মহাদেবপুরে ১৪ টি অটো রাইস মিলে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার মেট্রিক টন আতব চাল উৎপাদন হয়।

যা মহাদেবপুরের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, যশোর, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠান ছাড়াও বিয়ে-জন্মদিনসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে আপ্যায়নে চিনি আতব চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এর সিংহভাগই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোসহ আমেরিকাতেও রপ্তানি হচ্ছে। এতে কৃষির বৈপ্লবিক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, অন্যান্য বছর বৃষ্টির পানির সঙ্কট থাকলেও চলতি বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় পানির অভাব থেকে কিছুটা মুক্ত ছিল কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার চিনি আতপ ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভনা রয়েছে। এতে লাভের মুখ দেখবেন কৃষকরা এমনটাই আশা করছেন তিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে