রাজশাহীতে ইউপি চেয়ারম্যানকে ধরতে সীমান্তে অভিযান
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কমপ্লেক্সে মোফাজ্জল হোসেন (২৬) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার আসামিরা পলাতক রয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান বজলে রেজভী আল হাসান মুঞ্জিলসহ আসামীদের গ্রেপ্তার করতে সোমবার হরিপুর ইউনিয়নের চর মাজারদিয়ায় পুলিশ অভিযান চালিয়েছে।
ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন এই গ্রামে আসামিরা লুকিয়ে থাকতে পারেন, এমন চিন্তা থেকেই চরটিতে অভিযান চালানো হয়েছে। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) দামকুড়া থানা পুলিশ এই অভিযান চালায়। দামকুড়া থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সকালে ইউপি ভবনে মোফাজ্জলের লাশ পাওয়ার পর থেকেই আসামিরা পলাতক। রাতে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হওয়ার পর গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু পাওয়া যায়নি। সোমবার আমরা নদীর ওপারে গিয়েছিলাম। কিন্তু খোঁজ পাওয়া যায়নি। কেউ যেন সীমান্ত অতিক্রম করতে না পারে সে জন্য গ্রামবাসীকে সতর্ক থাকতে বলে আসা হয়েছে।
উল্লেখ্য, হরিপুর ইউপি ভবনের একটি কক্ষে রোববার ভোরে জানালার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় মোফাজ্জল হোসেনের লাশ পাওয়া যায়। তিনি ১২ দিন আগে হরিপুর ইউনিয়নের নলপুকুর গ্রামে বিয়ে করেন। পারিবারিকভাবেই তার বিয়ে দেয়া হয়েছিল। তার শ্বশুরের নাম রফিকুল ইসলাম। মোফাজ্জলের বাড়ি জেলার তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের যুগলপুর গ্রামে। তার বাবার নাম ইসরাফিল মণ্ডল। বিয়ের পর শ^শুরবাড়ি গেলেও মোফাজ্জলের স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে আসেন।
তিনি আর যেতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু মোফাজ্জল তাকে নিতে শ্বশুরবাড়ি আসেন। বিষয়টির সমাধানে গত শনিবার ইউপি কার্যালয়ে দুইপক্ষের লোকজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসেছিলেন। তখন চেয়ারম্যান বলেছিলেন, মেয়েটি সংসার করবে না। তাই মোফাজ্জলকে দেনমোহরের টাকা দিয়ে ফিরে যেতে হবে। যতক্ষণ দেনমোহরের টাকা পরিশোধ না হচ্ছে ততক্ষণ সে ইউপি কার্যালয়েই থাকবে। এভাবে তাকে রাতেও ইউপি কার্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। ভোরে তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। স্বজনদের অভিযোগ, মোফাজ্জলকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।
এ নিয়ে নিহতের ভাই উজ্জল বাদী হয়ে দামকুড়া থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় নিহত মোফাজ্জলের শ^শুরকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলার দুই নম্বর আসামি হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান বজলে রেজবী আল হাসান মুঞ্জিল। এছাড়া মামলায় মোফাজ্জলের স্ত্রী এবং শাশুড়িসহ অজ্ঞাত আরও ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে সোমবার রাত ৯টা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
267