শ্রীলংকায় প্রতি কেজি চাল ২২০, গুঁড়ো দুধ ১৯০০টাকা
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে বেসামাল শ্রীলংকা। রোববার রাতে দেশটির ২৬ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করার পরও সরকার বিরোধী বিক্ষোভ কমছে না। এই অবস্থায় দেশে মূল্যবৃদ্ধি আকাশ ছুঁয়েছে। চালের দাম ২২০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম এবং এক কিলোগ্রাম গুঁড়ো দুধ বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ টাকা দরে।
বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, অগ্নিমূল্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম- গোতাবায়া সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছিলই। জনরোষ সামাল দিতে ৩৬ ঘণ্টা কারফিউ জারি করে গোতাবায়া সরকার। তা উপেক্ষা করেই আজ কলম্বোর ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্কোয়ারে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা করেছিলেন আন্দোলনকারীরা।
শ্রীলঙ্কার একটি দৈনিকে আজ লেখা হয়েছে, ‘আরব বসন্তের মতো বিক্ষোভের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে দেখে সরকার দেশ জুড়ে কারফিউ জারি করেছে’।
দিন কয়েক আগেই শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট এক নির্দেশিকায় ঘোষণা করেছিলেন, ‘দেশে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা প্রয়োজন নির্দেশ দিচ্ছি, কোনও ব্যক্তি রাস্তা, রেলপথ, পার্ক, মাঠ বা সমুদ্র উপকূলে যেতে পারবেন না। শনিবার সন্ধে ৬টা থেকে সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এই নির্দেশ কার্যকর থাকবে। বিশেষ প্রয়োজনে অনুমতি নিয়ে বাড়ির বাইরে বার হতে হবে’।
বিরোধীদের অভিযোগ, গতকাল ৩৬ ঘণ্টা কারফিউ ঘোষণার পর থেকে ধরপাকড় শুরু করেছে সরকার। শুধু পশ্চিমাঞ্চল প্রদেশ থেকেই সরকার-বিরোধী কাজের অভিযোগে ৬৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এক সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে শ্রীলঙ্কার একটি দৈনিকে লেখা হয়েছে, গতকাল রাত ১০টা থেকে আজ ভোর ৬টার মধ্যে পুলিশি অভিযান চলে।
আজ সকালে প্রতিবাদে শুরু হয় পেরাডেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। ছাত্র বিক্ষোভ সামাল দিতে নাজেহাল হতে হয় পুলিশকে। শেষে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্কোয়ারের জমায়েতে শামিল হওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল।
পুলিশি ধরপাকড় সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীদের দমিয়ে রাখা যায়নি। মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে, ‘দমনপীড়ন বন্ধ করো’। ‘গোতা গো হোম’ স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড, পোস্টারও ছিল অনেকের হাতে।
বিরোধী দলনেতা সাজিত প্রেমদাসার নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কার আইনসভার বিরোধী সদস্যেরা আজ মিছিল করেন। কিন্তু সেই মিছিলকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্কোয়ারে যাওয়ার আগেই আটকে দেয় পুলিশ। প্রেমদাসা বলেন, ‘জনগণের প্রতিবাদের অধিকারকে জননিরাপত্তা অধ্যাদেশের মাধ্যমে খর্ব করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধেই আমরা প্রতিবাদে শামিল হয়েছি।’
গোতাবায়া সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেশে দাবানলের মতো ছড়াতে শুরু করেছিল। গতকাল রাত থেকে তাই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল সরকার।
তবে এ নিয়েও আজ সকাল থেকে শোরগোল শুরু হওয়ায় ইন্টারনেট পরিষেবা ফের চালু করে দিয়েছে সরকার।