ঈদের আগেই গরুর মাংসের কেজি ৮০০, মুরগির ২৬০ টাকা

প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২৩; সময়: ২:০৪ অপরাহ্ণ |
ঈদের আগেই গরুর মাংসের কেজি ৮০০, মুরগির ২৬০ টাকা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ঈদ-উল-ফিতরের চাঁদ উঠার আগেই মাংসের দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে গরুর মাংসের দাম কেজি প্রতি বাড়ানো হয়েছে ৫০ টাকা। লেয়ার ও ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়িয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগি কেজিতে দাম বাড়িয়েছে ৩০ টাকা।

ঈদকে কেন্দ্র করে কারসাজির মাধ্যমে মাংসের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। বিষয়টি স্বীকার করছে ব্যবসায়ীরাও। তারা বলছে, ঈদের কারণে মাংসের চাহিদা বেশি। চাহিদা বাড়ায় মাংসের টান পড়েছে। ফলে বেশি দামে গরু ও মাংস দুটোই কিনে আনতে হয়েছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করছি।

সব কিছু যাচ্ছে ক্রেতাদের ওপর দিয়ে। ক্রেতারা বলেন, মুরগি, গরু খাসি সব মাংসের দাম বাড়ছে কেজি প্রতি ৫০ টাকা করে। খেতে হলে কিনতে হবে, উপায় নেই।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীতে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজিতে। অথচ বুধবারও কেজি প্রতি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৫০ টাকা। একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ৫০ টাকা দাম বেড়েছে। দাম বাড়ার দিনে দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে।

মালিবাগ বাজারে আসা আসমা আক্তার নামের এক ক্রেতা বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে দাম বাড়তে পারে শুনে মাংস কিনতে এসেছি। এসেই দেখি দাম বেড়ে গেছে। ৫ কেজি মাংস কিনেছি ৮০০ টাকা কেজিতে। অথচ এ মাংসই গত সপ্তাহ ৭২০ টাকা কেজিতে কিনেছি। এটা কী ভাবা যায় বলেন? রীতিমতো ব্যবসার নামে ডাকাতি চলছে।

মালিবাগের ছানাউল্লাহ গোস্তবিতানের দোকানদার শাফিউল্লাহ বলেন, কলিজা-হাড়সহ গরুর মাংসের কেজি বিক্রি করছি ৮০০ টাকায়। যদি কেউ কলিজা না নিতে চায় তবে শুধু মাংস ও হার নিতে পারবে ৮০০ টাকা কেজিতে।

তিনি বলেন, গতকাল ৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি, আজকে ৮০০ টাকা কেজি। ঈদ ঘনিয়ে আসায় গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। আজকে গরু প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেড়েছে। এ কারণে বাধ্য হয়ে মাংসের দাম বাড়াতে হয়েছে। আগামী কয়েকদিন এ দাম বা তার চেয়ে বেশি দামে গরুর মাংস কিনতে হবে। কাস্টমার কেজিতে ৫০ টাকা করে বেশি দামে কিনছে।

এদিকে তুলনামূলকভাবে বেশি দাম বেড়েছে গরিবের গরুর মাংস বলে খ্যাত ব্রয়লার মুরগির। যা আজ রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০ টাকা কেজিতে। অথচ বুধবার বিক্রি হয়েছে ২১০-২২০ টাকা কেজিতে। অর্থাৎ কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দেখাদেখি কেজি প্রতি লেয়ার মুরগির দামও বেড়েছে ৩০ টাকায়। বুধবার ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার বিক্রি বৃহস্পতিবার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজিতে। আর সাদা লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজিতে।

গরুর মাংস কিনতে এসে চার কেজি ব্রয়লার মুরগি কিনে বাসায় ফিরেছেন বাড্ডার বাসিন্দা আসিয়া খাতুন। তিনি বলেন, গরুর মাংস কিনতে এসেছিলাম। দাম চায় ৮০০ টাকা, তাই না কিনে মুরগির মাংস নিয়ে যাচ্ছি। আজ গরুর মাংসের চেয়ে মুরগির মাংসের দাম আরও বেশি বেড়েছে। কেজি ৫০ টাকা বেড়েছে।

রামপুরা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদকে সামনে রেখেই ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির দাম বাড়ানো হয়েছে। ব্যবসায়ী শকওত আলী বলেন, বুধবার ব্রয়লারের কেজি কিনেছি ১১৭ টাকায়। আজ কিনেছি ১৪২ টাকা কেজিতে। এবার আপনি বলেন কীভাবে কম বিক্রি করব? যাতায়াত খরচ ও দোকান ভাড়া মিলে আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজিতে।

বাজারগুলোতে পাকিস্তানি ককগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ টাকা কেজিতে। বুধবার এ মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে। অর্থাৎ পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে।

বাজারগুলোতে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে। যা বুধবার বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে। এছাড়াও আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজিতে। ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা কেজিতে।

রামপুরা বাজারের ব্যবসায়ী সাজ্জাদুল হক মিন্টু বলেন, ঈদে সবাই মাংস খায়। সেই চিন্তা করেই বড় ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়িয়েছে। আমারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাই আমরা বেশি দামে কিনে সেগুলো বিক্রি করছি। খুব বেশি লাভ হচ্ছে না আমাদের। দাম বাড়ার পর দেখি আজও বিক্রি বেশি হচ্ছে। মানুষ যদি মাংস কেনা কমিয়ে দিত তাহলে এমনি এমনিতেই দাম কমে যেত।

সরকারি বাজার মনিটরিং প্রতিষ্ঠান টেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিবিসি) তথ্যমতে, বুধবার রাজধানীতে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকা। একইদিন খাসির মাংস বিক্রি হয় কেজিতে ১১০০ টাকা কেজিতে। দেশি মুরগি বিক্রি হয় ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজিতে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২১৫ টাকা কেজিতে। যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১৯০ থেকে ২১০ টাকা কেজি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে