ঈশ্বরদীতে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীর মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঈশ্বরদী : পাবনার ঈশ্বরদীতে পাওনা টাকা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধের জেরে তৃতীয় পক্ষের লোহার পাইপের হামলায় এক নারী নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ওই এলাকা থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এর আগে সোমবার ভোররাতে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ওই নারী শ্রমিককে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মৃত ওই নির্মাণ শ্রমিকের নাম ময়না বেগম (৫০)। তিনি শহরের মশুরিয়া পাড়া কামারপাড়ার রহম আলী স্ত্রী।
একই সময় ময়না বেগমের মেয়ে নিশি খাতুনসহ (২৮) পরিবারের তিন সদস্য আহত হন। তারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ময়না বেগমের মেয়ে নিশি খাতুন তাদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী ঝাড়পাড়া গ্রামের ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ী শিলা খাতুনের কাছ থেকে বাকিতে কাপড় কেনেন। পরে কিছু টাকা পরিশোধও করেন তিনি।
এরই মধ্যে সোমবার রাত আটটার দিকে বাকি টাকা আদায়ের জন্য নিশি খাতুন লোকজন নিয়ে ময়নার বাড়িতে এসে চড়াও হয়। এসময় উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতি শুরু হয়। বিরোধী থেমে গেলে শিলা সেখান থেকে চলে আসেন।
কিছুক্ষণ পরে একই গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন নামে এক রাজমিস্ত্রীর সঙ্গে পূর্বের ঘটে যাওয়া (শিলার সঙ্গে তর্কাতর্কি) কাহিনি বলতে গিয়ে তাদের মধ্যেও ‘তর্কাতর্কি ও মারামারি বাঁধে।
খবর পেয়ে জাহাঙ্গীরের লোকজন ছুটে এসে ময়না খাতুন ও তাঁর ছেলেমেয়েসহ পরিবারের সদস্যদের মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর লোহার পাইপ দিয়ে মাথায় আঘাত করলে ময়না খাতুন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
তাকে রাতেই ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাত সাড়ে তিনটার দিকে ময়না খাতুন মারা যান।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী জানান, দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের পর তৃতীয় পক্ষের হামলায় ময়না খাতুন মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
ভিকটিমের পরিবার এ ঘটনার জন্য জাহাঙ্গীর হোসেন নামে এক ব্যক্তিসহ বেশ কয়েকজনকে দায়ী করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত ময়না বেগমের মেয়ে নিশি খাতুন বলেন, তার মাকে জাহাঙ্গীরসহ কয়েকজন মিলে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে খুন করেছে। তিনি এ জন্য জড়িতদের বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী থানায় মামলা করবেন।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, এ ঘটনায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।