প্রতিমন্ত্রীর নৌকার বিজয়ে বাধা স্বতন্ত্রের কাচি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২৪; সময়: ৩:৩৯ অপরাহ্ণ |
প্রতিমন্ত্রীর নৌকার বিজয়ে বাধা স্বতন্ত্রের কাচি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চারঘাট : রাজশাহীর ৬টি নির্বাচনী আসনের মধ্যে গুরুত্বপুর্ণ আসন হিসেবে ব্যাপক পরিচিত রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনটি। এ আসনে সরকারের হ্যাভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে পরিচিত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের ২ বারের প্রতিমন্ত্রী ও তিনবারের সাংসদ মো. শাহরিয়ার আলম।

আসনটিতে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নাম লেখালেও প্রতিমন্ত্রীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বি নিজ দলের সাবেক এমপি চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাহেনুল হক রায়হান। এ আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে কাঁচি প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছেন।

একই দলের দলীয় প্রার্থী ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী হওয়ায় দুটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এতে করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গেই স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হকের কাচি প্রতীকের হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

অন্য দলের প্রার্থীরা রয়েছেন অনেকটাই নিরব। তারা হলেন,জাতীয় পার্টির শামসুদ্দিন রিন্টু (লাঙ্গল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মহসিন আলী (আম), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের জুলফিকার মান্নান জামী (মশাল), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের আব্দুস সামাদ (নোঙ্গর)।

সরজমিনে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় ভাবে কাজ করছেন চারঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, সম্পাদক পৌর মেয়র একরামুল হক, বাঘা উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্পাদক বাবুল আক্তারসহ দুটি উপজেলার যুবলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের বর্তমান কমিটির অনেক নেতাকর্মীরা।

অপরদিকে একই দলের স্বতন্ত্রপ্রার্থী রাহেনুল হকের পক্ষে সক্রিয় ভাবে কাজ করছেন বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলু, ভাইস চেয়ারম্যান মোকাদ্দেস আলী, বাঘা পৌর মেয়র আক্কাছ আলী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ, চারঘাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বিপ্লব, নারী ভাইস চেয়ারম্যান তাজমিরা খাতুন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক জালাল উদ্দিন, ভায়ালক্ষিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত আলী বুলবুল, সরদহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মতিউর রহমান তপন, ইউসুফপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শফিউল আলম রতন, শলুয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মকলেচুর রহমান মকা প্রমুখ।

প্রতীক বরাদ্দের পর গণসংযোগে ব্যস্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহরিয়ার আলম এবং কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক রায়হান। নির্বাচনী মাঠে নৌকার প্রার্থী শাহরিয়ার আলম ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী রাহেনুল হকের দেখা মিললেও বাকি ৪ জন প্রার্থী নিরব ভূমিকায় রয়েছেন। বাঘা ও চারঘাট উপজেলায় নৌকা ও কাঁচির পোস্টার শোভা পেলেও অন্য প্রার্থীদের কোনো পোস্টার ও প্রচারণা তেমন চোখে পড়েনি।

নৌকার প্রার্থী শাহরিয়ার আলম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে সফলতা দেখিয়েছেন। সমালোচনা, বিতর্ক এসব থেকে দূরেই থেকেছেন সব সময়ই। সারা দেশে ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। শিক্ষিত-মার্জিত হিসেবে সুখ্যাতিও আছে শাহরিয়ার আলমের। কিন্তু জনপ্রিয়তা খুইয়েছেন নিজের দলের নেতাকর্মীদের কাছে। তাই তো এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের নির্বাচনী এলাকায় বহিরাগত তকমা লেগেছে শাহরিয়ার আলমের গায়ে। ফলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন দুভাগে বিভক্ত হয়ে মাঠে নেমেঁেনছেন শাহরিয়ার ও রাহেনুল হকের পক্ষে-বিপক্ষে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তির দাবি, এ এলাকায় সবচেয়ে বেশি বিএনপির সাধারণ ভোটার রয়েছেন। এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ায় ভোটের মাঠে ভোট দিতে যেতে পারেন অনেক বিএনপির ভোটার। আর ভোট দিতে গেলে বিএনপির ভোটাররা নৌকায় ভোট না দিয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর ঘরেই সিল দিতে পারেন। এতে করে নৌকার বিজয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হকের কাচি বড় বাধা। ফলে কাচি প্রতীকের সঙ্গে নৌকার হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।

এ আসনে চারঘাটে ৫৭টি মোট ১১৮টি ও বাঘা ৬১ কেন্দ্র রয়েছে। দুটি উপজেলায় মোট ভোটার ৩ লক্ষ ৪০ হাজার ৫২৭ ভোট। এরমধ্যে পুরুষ ১ লক্ষ ৭০ হজার ৫২৮ ও নারী ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯৯৯ ভোট।

এরমধ্যে চারঘাটে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার ৬৬৬ ও বাঘায় ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৮৬১ ভোট। পুরুষ ৮১ হাজার ৪৭২ ও নারী ৮১ লক্ষ ৩৮৯ ভোট। ভোট। পুরুষ ৮৯ হাজার ৫৫ ও নারী ৮৮ হাজার ৬১০ ভোট।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে