চারঘাটে ইউপি সদস্য প্রার্থী আলীমের প্রচারণায় বাধা ও ফেসটুন ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ

প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৪; সময়: ৮:০৭ অপরাহ্ণ |
চারঘাটে ইউপি সদস্য প্রার্থী আলীমের প্রচারণায় বাধা ও ফেসটুন ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ২নং শলুয়া ইউনিয়নের চামটা ও দৌলতপুর ৩নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য পদে উপ-নির্বাচনে দুই প্রার্থী আব্দুল আলীম টিউবয়েল মার্কা ও মুক্তার হোসেন মুক্তা মোরগ মার্কা। ওই ওয়ার্ডে নারী ও পুরুষ মিলে মোট ভোটার ২৫৮২ জন। তবে নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থী সমর্থকদের মাঝে চড়ম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় সংঘর্ষের আশঙ্কা নিয়ে আতঙ্কে আছে সাধারণ ভোটারা।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মুক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে গত ৪ মার্চ সোমবার নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন টিউবয়েল প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল আলীম। নির্বাচনি প্রচারণায় বাধা ও কর্মী সমর্থকদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেন আলীম।

অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চারঘাট উপজেলার ২নং শলুয়া ইউনিয়নের চামটা ও দৌলতপুর গ্রাম মিলে ৩নং ওয়ার্ড। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করার পর থেকে মুক্তা সন্ত্রাসী বাহিনি নিয়ে চরম বেপরোয়া হয়ে উঠেছে । গত ৩মার্চ শলুয়া ডিগ্রী কলেজে আব্দুল আলীমের টিউবয়েল মার্কার পোস্টার ফেস্টুন ছিড়ে ফেলেছে মোরগ মর্কার প্রার্থী মুক্তা হোসেনের লোকেরা।  এছাড়াও টিউবয়েল মার্কার প্রার্থী আব্দুল আলীমের স্ত্রী ও কর্মী সমর্থকরা গত (৪ মার্চ) নির্বাচনি প্রচারে গেলে তাদের বাধা প্রদান করে ও গায়ে  মটোরসাইকেল তুলে দেয়ার চেস্টা করে ও বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করে।

ওই ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য প্রার্থী মাত্র দুই জন। এর মধ্যে মুক্তা চামটা গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে, তিনি বিএনপি পন্থি রাজনীতি সাথে জড়িত বলে জানান স্থানীরা। মুক্তার বিরুদ্ধে মাদক, চাঁদাবাজি, অস্ত্রসহ প্রায় ২০টি মামলাও রয়েছে বলে জানা যায়। তার মা মতিয়া বেগমসহ পুরো পরিবার মাদক কারবারের সাথে জড়িতো। তার মায়ের বিরুদ্ধেও রয়েছে একাধিক মাদক মামলা। এছাড়াও সম্প্রতি এক যুবককে পনিতে ডুবিয়ে নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে,পরে মামলাও হয়। আর ওই ঘটনার নেতৃত্ব দেন মুক্তার হোসেন।

টিউবয়েল প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল আলী বলেন, আমি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনী আইন মেনে নির্বাচনের মাঠে আছি। আমার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী মুক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে নাশকতা, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলার আছে। সে বিএনপির একজন সক্রিয় সন্ত্রাসী হিসাবে পরিচিত। মনোনয়ন পত্র দাখিলের পর থেকে সে আমাকে ও আমার সমর্থকদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। সাধারণ ভোটারদের মাঝে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। সে জোর করে নির্বাচনে বিজয়ী হতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগের লেবাস ধরে নিজেকে আওয়ামী লীগের কর্মী বলেও দাবি করছে।

তিনি আরো বলেন, আমি ও আমার পরিবার জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনিতির সাথে জড়িতো। বিগত নির্বাচনে মৃত আশরাফ আলীর কাছে মাত্র দুই ভোটে হেরে যায়। চক্রান্ত করে আমাকে হারানো হয়েছে। পরে পুনোরায় ভোট গণনা করার বিষয় মামলা দায়ের করেছিলাম, কিন্তু কোন প্রতিকার পাইনি। এবার মুক্তার হোসেন এই প্রথম নির্বাচন করছেন। মুক্তার হোসেনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গত (৪ মার্চ) সোমবার নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

চারঘাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুজিবুল আলম জানান, অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন প্রার্থী যদি পেশি শক্তি দেখিয়ে ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আচরণ বিধি লঙ্ঘন করলে প্রার্থীতা বাতিলও করা হতে পারে। অভিযোগের ভিত্তিতে মুক্তাকে শোকজ করা হয়েছে।

এ বিষয় চারঘাট থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ সন্ত্রাশী কর্মকান্ড করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, চারঘাট উপজেলার ২নং শলুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফ আলী মাদক মামলায় জেল হাজতে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি জেল হাজতে অসুস্থ হয়ে ইন্তেকাল করেন। এ কারনে ইউপি সদস্য পদ শূন্য হয় এবং উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৯ মার্চ।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে