খিচুড়ি
জেসমিন হক বৃষ্টি
আমায় নিয়ে তোমাদের এত যন্ত্রণা তা-
বুঝিনি আগে; হ্যাঁ সত্যি বলছি বুঝিনি!
আজীবন তোমাদের শুধু দিয়েই গেলাম-
অথচ দুদিন ধরে আমায় নিয়ে খেলছো ছিনিমিনি!
কী’ অপরাধ করেছি এই দেশি খিচুড়ি আমি-
বিদেশের খিচুড়ি কী’ আমার চেয়েও নামী?
আমি খিচুড়ি, জানি সবাই আমার কদর করে-
দেখেছি তো’ আমার উপরেই তোমাদের নজর পড়ে।
ওই যে হামিদা বুবু, সে কত সুন্দর আমায় রাঁধে-
কতজন খায় আর বলে অতুলনীয় হয়েছে স্বাদে।
জানো, হামিদা বুবু প্রশিক্ষণ নিতে যায়নি কোথাও-
বলি মূর্খ হামিদা বুবুর রান্না এই আমি সেরা তাও।
সারাজীবন পেন্সিল কলম ভেঙ্গে তুমি হলে অফিসার-
ছোটবেলায় শুনেছো লেখাপড়া করে যে গাড়ি ঘোড়া তার!
হঠাৎ তবে কী’ এমন হলো আমাকে নিয়ে গবেষণার?
কেন যাচ্ছো আমার মত খিচুড়ির জন্য বিদেশের দ্বার?
সব সময় জগাখিচুড়ি পাকানো তোমাদের বদ অভ্যাস-
আজকাল তোমরা হয়ে যাচ্ছো অন্যের দাস!
বর্ষাকাল! বাংলা আমায় নিয়ে কত গর্ব করে বৃষ্টির ক্ষণে-
কেউ বা তখন রান্না করে, কেউ বা খায় আমায় মনে মনে!
আমাকে নিয়ে করো না টানাটানি, এই ভালো আছি-
আমার যা চেহারা আর পুষ্টিগুণ ঐ নিয়েই বাঁচি।
যেভাবেই আমাকে ঘাটো,সেই তো চালে ডালে আমি-
বাংলার বুকে এখনো পর্যন্ত আমি খিচুড়ি সব’চে দামী।