রামেকে করোনা রোগি নিয়ে সক্রিয় দালাল চক্র

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২১; সময়: ৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ |
রামেকে করোনা রোগি নিয়ে সক্রিয় দালাল চক্র

তারেক মাহমুদ : শনিবার (৫ জুন) বেলা ১টা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ। চাঁপাইনবাগঞ্জের মহারাজপুর থেকে হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে শিউলি বেগম (২৭) করোনা ওয়ার্ডে ভর্তির জন্য অপেক্ষা করছেন। সঙ্গে আছেন শিউলির মা হাজেরা বেগম ও তার মেয়ে জয়ী। ভুক্তভোগি শিউলির ছোট মেয়েটি পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। হাজেরা বেগম জানান, গত বৃহস্পতিবার করোনা আক্রান্ত হয় তার মেয়ে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে তার চিকিৎসা চলছিলো।

হঠাৎ অবস্থার অবনতি হয়। শিউলি প্রচন্ড শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। শনিবার (৫ জুন) রামেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য বেলা ১০টায় এসেছেন। পরিবারে ছেলে মানুষ বাইরে থাকায় রাজশাহী নিয়ে আসে তার মেয়ে জয়ী ও মা হাজেরা বেগম। এক ঘণ্টা পরে বেলা দু’টায় আবারো সেই জরুরি বিভাগের একই জায়গায় দেখা হয় প্রতিবেদকের সঙ্গে। টানা চার ঘণ্টা গরমের মধ্যে জরুরি বিভাগের বারান্দায় ছটফট করতে থাকে শিউলি। সাথে প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট! শিউলির মা একা এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করছেন। তার ছোট মেয়ে মাকে বাতাস করছে আর কাঁদছে।

করোনা আক্রান্ত শিউলি ও মেয়ে এক সাথে কাঁদছে। একটু পরে শিউলির মা হাজেরা বেগম এসে তাদের জানালেন ভর্তির ব্যবস্থা হয়েছে। ২০ নম্বর ওয়ার্ডে বেডে নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রলি আসছে।

তার মা বলেন, সেই বেলা ১০ টায় এসেছি। এখানে যারা দায়িত্বরত তারা প্রথমে জানিয়েছে এখানে বেড নেই! পরে মেয়ে ও নাতনিকে বসিয়ে অনেক ঘুরেছি। আড়াই ঘণ্টা পরে এখন ভর্তির ব্যবস্থা করতে পারছি। কিন্তু এই গরমে বারান্দায় ফ্যান নেই মেয়েটা আমার শ্বাসকষ্টে ছটফট করেছে, ভয়ে কেঁদেছে।

কেঁদে কেঁদে এভাবেই বলছিলেন করোনা আক্রান্ত শিউলির মা। শিউলি প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট থাকায় তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছিলেন না। হাসপাতালে বেড ও আইসিইউ এর জন্য হাহাকার।

কিন্তু কর্তৃপক্ষ বলছেন, হাসপাতালের বাইরে ও বারান্দায় যথেষ্ট বেড করা হয়েছে। বেড়ের সঙ্কট নেই। কিন্তু কারা রোগিদের জানাচ্ছেন বেড নেই! হাসপাতালে শনিবার এমন ঘটনা ঘটেছে কয়েকটি করোনা আক্রান্ত রোগি ও তাদের স্বজনদের সাথে। হাসপাতালে দীর্ঘক্ষণ দৌড়াদোড়ির পর তারা করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হতে পেরেছেন।

হাসপাতালের একটি সূত্র বলছে, করোনা রোগি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাইরের বিভিন্ন ক্লিনিকের কিছু চক্র এই অপপ্রচার চালাছে। কিছু রোগিকে তারা বাইরে নিয়ে ভর্তির চেষ্টা করছে। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত কয়েকজনকে ম্যানেজ করেই তারা এই কাজ করছে।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী বলেন, হাসপাতালে করোনা রোগিদের জন্য যথেষ্ট বেড আছে। কিন্তু জরুরি বিভাগ ও কিছু জায়গায় দুষ্ট লোকের অভাব নেই। কিছু দুষ্ট লোক এই কথা বলছে বলে আমি অভিযোগ পেয়েছি।

তিনি বলেন, একজনকে জরুরি বিভাগে সেখান থেকে বাদলি করেছি। কিছু কিছু ডে লেবারসহ যারা এমন কাজে জড়িত তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাদের হাসপাতালের চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হবে। রোগি বাড়ার সাথে সাথে আমরা সকল কিছু বাড়িয়েছি। এখন পর্যন্ত করোনা রোগিদের বাইরে ভর্তি হতে হবে না। হাসপাতালে যথেষ্ট ব্যবস্থা আছে।

  • 264
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে