ইউনিয়ন পরিষদে হাসছে সূর্যমুখী, নজর কাড়ছে সেবাগ্রহীতাদের

প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৩; সময়: ১:৪৯ অপরাহ্ণ |
ইউনিয়ন পরিষদে হাসছে সূর্যমুখী, নজর কাড়ছে সেবাগ্রহীতাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ: ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে লাগানো হয়েছে সূর্যমুখী ফুল। ফলে নজর কাড়ছে স্থানীয় ও সেবাগ্রহীতাদের। আর ফুলগুলো শুধু নজরই কাড়ছে না, এর কারনে পরিষদ চত্বরে গড়ে উঠেছে সৌন্দর্যবর্ধন এক পরিবেশ।

এছাড়াও নানা ধরনের ফুল, ফল ও সবজির গাছ রোপণ করা হয়েছে পরিষদ চত্বরে। আর এমন প্রকৃতির শোভা বিচরণ করছে নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছী ইউনিয়ন পরিষদে। আর এসব ব্যতিক্রমী কাজের উদ্যোক্তা ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন। পরিষদের স্টাফদের নিয়ে প্রতিদিন তিনি এগুলোর যত্ন করেন।

জেলা শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার শৈলগাছী বাজারের পাশে অবস্থিত ১২নং শৈলগাছী ইউনিয়ন পরিষদ। ২০২১ সালের শেষের দিকে নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। এরপর এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি তার নিজ উদ্যোগে ইউনিয়ন পরিষদের ব্যাপক পরিবর্তন করেন। পুরো ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর সবুজের সমারোহ গড়ে তুলছেন তিনি।

পরিষদের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য পরিষদের চারপাশে বিভিন্ন ফল, ফুল ও সবজি গাছ রোপণ করেছেন। চারপাশে বাউন্ডারি ও সেবাগ্রহীতাদের জন্য বসার জন্য তৈরি করেছেন গোল চত্বর। পরিষদ চত্বরে প্রবেশের ডান পাশে চোখে পড়বে দৃষ্টিনন্দন সূর্যমুখী ফলের সমারোহ। এছাড়াও গোলাপ, রজনীগন্ধা, পাতা বাহার, ঘাস ফুল, জবাফুলসহ ১৫ রকমের ফুল। আরেক পাশে ঢ্যাঁড়শ, করোলা, বেগুন, লাউ, পেঁপে, টমেটো, কাঁচা মরিচ, পেয়ারা, আম, লিচু, সুপারি ফলের গাছ।

ব্যতিক্রম ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের ফলে পরিষদের স্টাফ ও জনসাধারনের মধ্যে ইতোমধ্যে সাড়া পড়েছে। সাধারণ মানুষ ইউনিয়ন পরিষদে কোন কাজের জন্য এলে আগে কোথাও চুপ করে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকতেন। কিন্তু এখন পরিষদে এসে কাজ করতে দেরি হলেও কিছুটা সময় কাটান চত্বরের নির্মল পরিবেশে।

স্থানীয় বাসিন্দা আজাহার উদ্দিন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এখন সূর্যমুখী লাগানো হয়েছে। সেগুলো দেখে ভালো লাগছে। প্রায়ই বিকেলে এই পথ দিয়ে যাই। তখন ফুলের সৌন্দর্য আমাদের মুগ্ধ করে। কারন এই ফুল যেখানে-সেখানে দেখা যায়না। এই উদ্যোগ আসলেই প্রশংসার যোগ্য।

হাসান আলী নামে এক সেবগ্রহীতা বলেন, চেয়ারম্যান পরিষদের মধ্যে বিভিন্ন রকমের ফুলের গাছ লাগিয়েছে। দেখে খুবই ভালো লাগলো। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতিছে সূর্যমুখী ফুল। এছাড়াও বিণ্নি রকম সবজি লাগানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা মাঝে মাঝে পরিষদে কাজে আসি চেয়ারম্যানের ব্যস্ততার কারণে অনেক সময় খুব বিরক্ত লাগে। এখন বাগানগুলা ঘুরা দেখি। বসার জন্য পাকা গোল চত্বর বানানো হয়েছে সেখানে বসে থাকি। আবার সময়মতো পরিষদের কাজ শেষ করে বাড়ি চলে যাই।

ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ ওয়াহেদ বলেন, প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় গাছগুলোর পরিচর্যা করা হয়। চেয়ারম্যান নিজেও তাদের সঙ্গে বাগান পরিচর্যা করেন। সেবাগ্রহীতাদের পাশাপাশি প্রতিদিন বিকেলে এখানে অনেকে ঘুরতে আসেন।

ইউপি সদস্য বাদল হোসেন ও সেকেন্দার আলী বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান অনেক সৌখিন মানুষ। তিনি নির্বাচিত হওয়ার ১৪-১৫ মাসে ইউনিয়ন পরিষদের চেহারা পাল্টে গেছে। আম, লিচু সুপারির গাছসহ বিভিন্ন রকম ফুলের গাছ রোপণ করেছেন। একপাশে সবজি চাষ করেছেন। পরিষদে যে বাগান করা হয়েছে খুবই চমৎকার একটি কাজ। যারা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যায় তারাও অনেক সময় ফুলের বাগানে এসে ছবি তোলে। এত সুন্দর মনোরম পরিবেশের জন্য সাধারন মানুষ এখন ইউনিয়ন পরিষদের প্রশংসা করে।

ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, একজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা মানুষকে সঠিক সময়ে সেবা দিতে চেষ্টা করি। মানুষ যেন সেবা নিতে এসে বিরক্ত বা ক্লান্তিবোধ না করে, সেজন্য পরিষদ চত্বরকে মানসম্মত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, তারই ধারাবাহিকতায় পরিষদের চারপাশে বাউন্ডারি দিয়েছে ও গেট নির্মাণ করেছি। পরিষদ চত্বরে বসার জন্য গোল চত্বর তৈরি করেছি। এছাড়াও ফুল, ফল ও বিভিন্ন সবজি চাষ করেছি। গাছগুলোর পরিচর্যা আমি নিজেই করি। পাশাপাশি ইউপি সদস্যরা ও গ্রাম পুলিশ এগুলো দেখাশোনা করেন। এতে করে ইউনিয়নবাসী অনেক খুশি। মানুষ মন থেকে যদি দোয়া ও ভালো কাজের প্রশংসা করে, সেটাই আমার জন্য পরম প্রাপ্তি।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে