পাঁচ দিনের শিশুর অঙ্গদানে নতুন জীবন পেল তিন শিশু
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : অঙ্গদানে জীবন বাঁচানোর ঘটনা প্রায়ই সংবাদের শিরোনামে ওঠে আসে। তবে শিশুর অঙ্গদানের খবর বিরল। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে ভারতের গুজরাটের সুরাতে। পাঁচ দিনের এক শিশুর অঙ্গদানে নতুন জীবন পেয়েছে তিন শিশু।
জানা গেছে, গত ১৩ অক্টোবর সুরাতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে জন্ম নেই শিশুটি। জন্মের পর শিশুটি নড়াচড়া না করায় ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা শহরের আরেকটি হাসপাতালে রেফার করে শিশুটিকে।
সেখানে ভেন্টিলেশন রাখা হয় তাকে। সেখানে বেশ কয়েক ঘণ্টা ভেন্টিলেশনে রাখার পরও সদ্যজাতের অবস্থার উন্নতি না দেখা দেওয়ায়, হাল ছেড়ে দেন চিকিৎসকরা। এরপর বুধবার শিশুটির ব্রেনডেথ ঘোষণা করা হয়।
সুরাতের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রধান বিপুল তালাভিয়া ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এইসময়কে জানিয়েছেন, তার কাছে খবর ছিল আরও তিন সদ্যজাত কিডলি ও লিভারের অসুখে ভুগছে। ব্রেনডেথ হওয়ার শিশুর খবর পেয়ে, সেখানে পৌঁছান তিনি।
মৃত শিশুর বাবা পেশায় হীরা কারিগর হর্ষ সাহানি ও মা চেতনাকে অঙ্গদানের গুরুত্ব বোঝান। তাদের মৃত সন্তানের অঙ্গ অন্য তিন শিশুকে নতুন জীবন দেবে, তা জেনে মুগ্ধ হন আমরেলির বাসিন্দা ওই দম্পতি। এরপর তারা মহৎ উদ্দেশ্যে সম্মতি দেন বলে জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ওই প্রধান।
বিপুল তালাভিয়া জানিয়েছেন, অঙ্গদানের মহৎ উদ্দেশ্যটির সম্মতির বিষয়ে সবেচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিলেন মৃত শিশুটির দিদা রশ্মিবেন। সাহানি দম্পতির পরিবারের এক সদস্য দান করা অঙ্গ পেয়ে নতুন জীবন পেয়েছিলেন।
আর সেটাই দম্পতির কাছে তুলে ধরেছিলেন মৃতের দিদা। সেই ঋণ শোধ করার এটাই উপযুক্ত সময় বলে হর্ষ এবং চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করেন তিনি।
পরিবারের সম্মতি পাওয়ার পর অঙ্গদানের চূড়ান্ত তৎপরতা শুরু করেন চিকিৎসকরা। ব্রেনডেথ হওয়া শিশুর শরীর থেকে ২টি কিডনি, ২টি কর্নিয়া, লিভার ও প্লীহা সংগ্রহ করেন।
তারপর গুজরাট স্টেট অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশন এর নির্দেশ অনুসারে কর্নিয়াগুলো সুরাটের একটি চক্ষু ব্যাঙ্কে দান করা হয়েছিল।
কিডনি ও প্লীহা ইনস্টিটিউট অফ কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে স্থানান্তরিত হয়। লিভারটি নতুন দিল্লির ইনস্টিটিউট অফ লিভার অ্যান্ড বিলিয়ারি সায়েন্সে (আইএলবিএস) পাঠানো হয়।
নবজাতকের যকৃতটি দিল্লিতে সফলভাবে ৯ মাস বয়সী এক শিশুর শরীরে প্রতিস্থাপিত করা হয়। দুটি কিডনি ১৩ বছর ও ১৫ বছর বয়সী শিশুকে দিয়েছে নতুন জীবন।