রাজশাহীতে বায়োচার সমৃদ্ধ ইউরিয়া ব্যবহারকৃত ভুট্টা কর্তন উপলক্ষে কৃষক সমাবেশ

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪; সময়: ৩:০৫ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে বায়োচার সমৃদ্ধ ইউরিয়া ব্যবহারকৃত ভুট্টা কর্তন উপলক্ষে কৃষক সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর পবায় বায়োচার সমৃদ্ধ ইউরিয়া সারের ব্যবহার করে ভুট্টার আশানুরুপ ফলন বৃদ্ধি হয়েছে। বৃহস্পতিবার পবা উপজেলার মুরারীপুরে ফসল কর্তন উপলক্ষে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ফসলে সারের ব্যবহার দক্ষতা বাড়াতে বায়োচার সমৃদ্ধ সার ব্যবহার শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ভুট্টা ফসলের ক্ষেতে বায়োচার কোটেড ইউরিয়া ব্যবহার করে আশানুরুপ ফলাফল পাওয়া গেছে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট গবেষকবৃন্দ দাবি করছে।

গবেষকগণ বলেন, সাধারণ ইউরিয়া সার ফসলের জমিতে প্রয়োগের পর দ্রুততার সাথে তার অধিকাংশ মাটিতে প্রয়োগের সাথে সাথে অপচয় হয়ে থাকে-যা ফসলের ক্ষেতে কৃষকের ইউরিয়া সার ব্যবহারের মাত্রা বহুগুন বাড়িয়ে দিচ্ছে। উপরোন্ত প্রতিবছর সরকারকে বেশী পরিমান ইউরিয়া সার ভর্ভুকির মাধ্যমে আমদানি করতে হয়। গবেষকগণ দাবি করেন এই বায়োচার কোটেড ইউরিয়া জমিতে প্রয়োগের ১৫ দিন পর্যন্ত ফসলের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমান নাইট্রোজেন সরবরাহ করতে থাকে। যার মাধ্যমে ১০-১৫ শতাংশ ইউরিয়া সারের ব্যবহার সাশ্রয় করা সম্ভব। এতে সামগ্রীকভাবে ইউরিয়া সারের আমদানি কমানো সম্ভব-যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ভুট্টা চাষি ইকবাল আলী বলেন, ‘এই বায়োচার ব্যবহারে জমিতে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমেছে। সেচও কম লেগেছে। এমনকি শ্রমিক কম পড়েছে। এতে অনেক খরচ কম লেগেছে। ভুট্টার বড় বড় মোচাসহ ভরাট হয়েছে। আশারাখি আশাতীত ফলন পাওয়া যাবে। আমার মনে হচ্ছে অন্যান্য ভুট্টা চাষির চেয়ে ২০-৩০ শতাংশ ভুট্টা বেশী পাব’।

কৃষক সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক ও কৃষিতত্ত্ব বিভাগ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোপাল সাহা, বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা ইনস্টিটিউট’র মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. ইলিয়াস হোসেন, প্রকল্পের পিএইচডি ফেলো ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট’র উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম মাহবুবুল আলম।

জানা যায়, বায়োচার একটি কার্বন সমৃদ্ধ জৈব পদার্থ। যা বিভিন্ন জীবাষ্ম (জৈব পদার্থ-ধানের তুষ, কাঠের গুঁড়া, কাঠ, এমনকি নালা-নর্দমার বর্জ্য পদার্থ, আবর্জনা থেকে তৈরি করা হয়) থেকে সীমিত অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বা অক্সিজেনবিহীন অবস্থায় তৈরী করা হয়। বায়োচার পানি বিশুদ্ধকরণ এবং মাটির লবণাক্ততা কমাতেও ভূমিকা রাখে। মাটির স্বাস্থ্যরক্ষায় বায়োচার একটি অদ্বিতীয় অনুষঙ্গ। উৎকৃষ্টমানের বায়োচার বছরের পর বছর মাটিতে থেকে যায়। ফলে মাটির স্বাস্থ্যের স্থায়ী উন্নয়ন ঘটে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বায়োচার মাটিতে প্রায় ১০০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে