পাবনায় পাউবোর দুই প্রকৌশলীকে জেলহাজতে প্রেরণ

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৪; সময়: ২:৩৩ অপরাহ্ণ |
পাবনায় পাউবোর দুই প্রকৌশলীকে জেলহাজতে প্রেরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগে আটক পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দুই উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়েে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তারা আদালতে জামিন আবেদন করলেও বিচারক নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আটক দুইজন হলেন, মাসুদ রানা (২৯) ও মোশাররফ হোসেন (৪২)। এদের মধ্যে মাসুদ রানার বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের বড় দিকশাইল গ্রামে। তিনি ভারপ্রাপ্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী।

আর অপরজন মোশারফ হোসেনের বাড়ি কুমিল্লার মেঘনা থানার শিবনগর এলাকায়। তিনি একই কার্যালয়ের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর তাদের নিজ কার্যালয় থেকে আটক করা হয়। ওই সময় ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

পরে এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে সদর থানায় ফৌজদারি কার্যবিধির আইনের ৫৪ ধারায় একটি জিডি দায়ের করা হয়। জিডি নাম্বার ১৯১৮। এরপর ৫৪ ধারায় আটক দুইজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

পাবনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মোরশেদুল আলম তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ওসি রওশন আরও জানান, ঘটনাটি দুদকের সিডিউল ভিত্তিক অপরাধ হওয়ায় তারা মামলা দায়ের করবে। সে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সেইসাথে ঘটনাটি আরো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে দুদক পাবনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ খাইরুল হক জানান, ‘তাদের বিরুদ্ধে জিডি সম্পর্কিত কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী করণীয় বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

পাউবো পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, ‘বিষয়টি প্রধান কার্যালয়কে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হবে। তদন্তে দু’প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডে অনুসন্ধানের কাজে যান কয়েকজন সাংবাদিক।

সেখানে প্রকৌশলী মাসুদ রানার কক্ষে দুই ঠিকাদার রাজিব ও কনকসহ আরেক প্রকৌশলীকে দেখতে পান তারা। এ সময় টেবিলে বিপুল পরিমাণ টাকার বান্ডিল ছিল।

বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় পুলিশকে জানান সাংবাদিকরা। পুলিশ পৌঁছানোর আগেই সেখান থেকে পালিয়ে যান দুই ঠিকাদার রাজিব ও কনক।

পরে পুলিশ এসে দুই প্রকৌশলীকে আটক করে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কে খবর দেয়। জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে দুদক ও পুলিশ। সন্ধ্যার পর তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

এদিকে সচেতন মহলের প্রশ্ন, ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে যদি দুই প্রকৌশলী দোষী হন, তাহলে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে দুই ঠিকাদার রাজিব ও কনকও দোষী। তাদের গ্রেপ্তার করে ঘটনার আসল কারণ উদঘাটনের দাবি সচেতন মানুষের।

ঘটনার পর থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের এড়িয়ে চলছেন দুই ঠিকাদার। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই কল কেটে দিচ্ছেন।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় ঠিকাদার আরিফুজ্জামান রাজিবের সাথে। কেন তিনি প্রকৌশলীকে টাকা দিতে গিয়েছিলেন, আর পালালেন কেন জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এরপর প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়ে ফোনের লাইন কেটে দেন তিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে