এক ডিমের দামই ১৪ টাকা
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : গেল কয়েকদিনে প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়ে এখন ১৬০ টাকায় ঠেকেছে। বাজারে লাল ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা হালি। সেই হিসাবে এক ডিমের দাম পড়ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা।
অন্যদিকে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ এলেও আগের সেই বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। ফলে নিত্যপণ্য হিসেবে পেঁয়াজ আর ডিমের দাম বাড়তি থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।
শুক্রবার (১৭ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। গত ২ সপ্তাহ ধরে খুচরা বাজারে এই দামেই বিক্রি চলছে। অথচ দেশে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। তবু সেই উচ্চমূল্যেই বিক্রি হচ্ছে নিত্য দরকারি এ পণ্যটি।
অন্যদিকে তীব্র গরম, বাজারে সরবরাহ কম এমন নানান অভিযোগে গত কয়েকদিন ধরে ডিমের দাম বেড়েই চলছে। ১০/১৫ দিন আগেও খুচরা বাজারে লাল ডিমের ডজন ১২০ টাকা থাকলেও কিছুদিনের ব্যবধানে এখন সেটির ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। আর প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা।
আর সে অনুযায়ী প্রতি পিস ডিমের দাম পড়ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা। এ বিষয়ে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, অতিরিক্ত গরমে ডিম উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, বাজারে সরবরাহ কমেছে, ফলে দাম বাড়তি যাচ্ছে।
রাজধানীর মহাখালী বাজারে সপ্তাহের ছুটির দিন বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী খাদেমুল ইসলাম বলেন, এখন পেঁয়াজের দাম কম থাকার কথা। কিন্তু আমরা সাধারণ ক্রেতারা তা বাড়তি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছি।
আজ কতদিন ধরে ৭০ টাকা করে পেঁয়াজের বাজার চলছে। এদিকে নতুন করে পেঁয়াজ আমদানিও শুরু হয়েছে, তবুও বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে। আমাদের সাধারণ ক্রেতাদের পক্ষে যেন কেউ নেই, ব্যবসায়ীরা যখন যেটার দাম বাড়ানোর ইচ্ছা করছে তা বেড়ে যাচ্ছে। যেন ব্যবসায়ীদের কাছে আমরা জিম্মি।
পেঁয়াজের দাম বাড়তি বিষয়ে মালিবাগের এক খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, সাড়ে পাঁচ মাস পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকার পর আমদানি শুরু হয়েছে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক জটিলতায় অনেকেই খুব বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করছে না। আমদানি শুরু হওয়ার পর দেশি পেঁয়াজের দামও বেড়েছে।
কিছু আগে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫২ থেকে ৫৮ টাকা থাকলেও এখন তা কিনতে হচ্ছে ৫৭ থেকে ৬৩ টাকা পর্যন্ত। ফলে খুচরা বাজারে বাড়তি দামই রয়ে গেছে। আমরা যখন যেমন দামে পাইকারি বাজার থেকে কিনতে পারি তখন তেমন দামেই খুচরা বাজারে বিক্রি করি। তবে বেশ কিছুদিন ধরে পেঁয়াজের দাম ৭০ টাকাই চলছে খুচরা বাজারে।
অন্যদিকে মালিবাগ বাজারে ডিম কিনে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আফজাল হোসেন। তিনি বলেন, ভাবা যায় এক ডজন ডিম কিনলাম ১৬০ টাকায়, যা কিছুদিন আগেই ছিল ১২০ টাকা।
হঠাৎ করে ডজনে ৪০ টাকা বেড়ে গেল অথচ সংশ্লিষ্ট কারও কোনো উদ্যোগ নেই বাজার নিয়ন্ত্রণের। ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কাছে আমরা সাধারণ ক্রেতারা কতটা জিম্মি হয়ে আছি তা জেনেও সবাই চুপচাপ। বাজার মনিটরিংয়ের লোকজন আসলে কী করছে?
ডিমের দাম বাড়তি বিষয়ে গুলশান সংলগ্ন লেকপাড় বাজারের লিপন ভ্যারাইটিজ স্টোরের মালিক সুমন মিয়া বলেন, কিছুদিন ধরে ডিমের দাম বাড়ছে। কিছুদিন আগে যেই ডিমের ডজন বিক্রি করেছি ১২০ টাকায় এখন সেটা ১৬০ টাকা। আর হালি বিক্রি করছি ৫৫ টাকায়।
আমরা যখন পাইকারি বাজার থেকে ডিম আনি বা দোকানে দিয়ে যায় তারা ডিমের বাড়তি দামের কিছু কারণ দেখিয়েছে। আসলে অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রান্তিক পর্যায়ে ডিমের উৎপাদন কম হয়েছে, ফলে বাজারে সরবরাহ কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।
তিনি বলেন, তীব্র গরমে মুরগি মরে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে আগেভাগেই মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন খামারিরা, আর এতে করে ডিমের উৎপাদন কম হচ্ছে। তাই ডিমের দাম বাড়ছে।
এছাড়া অনেকে বলছেন মধ্যস্বত্ব ভোগীরা ডিমের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ডিমের দাম বাড়িয়েছে। আসলে সঠিক কারণ কোনটা তা আমাদের মতো খুচরা ব্যবসায়ীরা বলতে পারব না।